২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

২৮ বছরেও সংস্কার হয়নি মুণ্ডুমালা-আমনুরা সড়ক

-

রাজশাহীর তানোর মুণ্ডুমালা-আমনুরা সড়কে মুণ্ডুমালা বাজার থেকে আমনুরার ধামধুম ব্রিজ পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের পর ২৮ বছর পেরিয়ে গেলেও তা একবারও সংস্কার করা হয়নি। ফলে রাস্তার পিচ ও পাথর তো উঠেছেই, নিচের ইটবালু উঠে কাদাতে পরিণত হয়েছে, সেই সাথে অনেক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও দেখলে মনে হবেনা যে এই রাস্তাটি একসময় পিচঢালা পাকা রাস্তা ছিল।
রাস্তাটি সংস্কার না করায় প্রায় প্রতিনিয়ত গর্তে পড়ে ছোট-বড় যানবহন। বিকল হয়ে পড়ে থাকছে সড়কের মাঝ পথে। কোথাও কোথাও যানবাহনের যাত্রীরা নেমে ধাক্কা দিয়ে যানবাহনগুলোকে পারাপার করছেন। সেই সাথে রাস্তাটির দু’ধারের মাটি সরে গিয়ে উঁচু-নিচু হয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যাতায়াতের জন্য একটি ট্রাক আরেকটি ট্রাককে সাইড দিতে হলে প্রায় ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর ও রহনপুরসহ ওই অঞ্চলের জনসাধারণের রাজশাহী যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। অন্য দিকে তানোর মোহনপুরের জনসাধারণের একমাত্র যাতায়াতের রাস্তাও। যাতায়াতের জন্য অন্য কোনো বিকল্প রাস্তা না থাকায় যাত্রীদেরকে বাধ্য হয়ে এবং বেকায়দায় পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমনুরা থেকে মুণ্ডুমালা মাত্র সাত কিলোমিটার রাস্তার জন্য পোরশা, রহনপুর, নাচোল আড্ডা এলাকার কয়েক লাখ মানুষ ৪০ কিলোমিটার ঘুরে গোদাগাড়ী থেকে রাজশাহী শহরে যাতায়াত করছেন। এতে সময় বেশি লাগছে। বর্ষার সময়ে এ রাস্তাটি একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে এবং বর্ষার সময় ছোট ছোট যানবাহন ছাড়া ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন মুণ্ডুমালা-আমনুরা সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, মুণ্ডুমালা বাজারের পশ্চিম দিকে থেকে শুরু করে আইড়ার মোড় পর্যন্ত পুরো রাস্তাটি একেবারেই চলাচলের অযোগ্য। জুমারপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে একাধিক বড় বড় গর্ত, সেখানে চাল বোঝায় একটি ট্রলি আটকে আছে। উঠাতে পারছেন না চালক ও হেলপাররা।
কিছু দূর গিয়ে ধামধুম ব্রিজের পূর্ব পার্শ্বে পাকা রাস্তার কোনো চিহ্নই পাওয়া গেলে না, সেখানে দেখা গেল ছোট-বড় গর্ত আর ভাংড়ি ইট আর খোয়ায় এবড়ো থেবড়ো হয়ে আছে সেখান দিয়ে মোটরসাইকে চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর এবং ঠিকমতো মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেল ধরে রাখাই যাচ্ছে এক দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে হ্যান্ডেল চলে যাচ্ছে অন্য দিকে।
বাসচালক আরিফুল ইসলাম জানান, এই রাস্তাটি সংস্কার না করায় বাস চালাতে সমস্যা হচ্ছে আর বর্ষার সময় মোটরসাইকেলসহ যেকোনো গাড়িকে সাইড দিতে ২০ মিনিট অপেক্ষার পর সুযোগ বুঝে এবং রাস্তা খুঁজে সাইড দিতে হয়। ফলে এক দিকে যেমন সময় বেশি লাগে তেমনি রাস্তাটি ভাঙাচোরা হওয়ার কারণে যাত্রীরা তেমন বাসে যাতায়াত করেন না। তিনি বলেন, রহনপুর অঞ্চলের জনসাধারণ তানোর হয়ে রাজশাহীতে যান যাতায়াত করেন না তারা গোদাগাড়ী হয়ে রাজশাহী যাতায়াত করছেন।
রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বাস মালিক সমিতি পক্ষে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার তাগাদাসহ অনুরোধ করা হলেও এখন পর্যন্ত তা সংস্কার করা হয়নি। তিনি বলেন, তাদেরকে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। তবে ভরা বর্ষার সময় এই রাস্তাটি যদি সংস্কার না করা হয় বাস-ট্রাক চলাচল সম্ভব হবে না। তানোর উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মুণ্ডুমালা থেকে আমনুরার ধামধুম পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা শুধু সংস্কার ও প্রশস্ত করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, অল্প দিনের মধ্যেই রাস্তা সংস্কার করার কাজ শুরু হওয়ার আশা করছি। সেই পর্যন্ত একটু কষ্ট হবেই বলে তিনি জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement