২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গোয়ালন্দে অসহায় বিধবার বাড়ি প্রভাবশালীদের দখলে

-

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় বিধবা মহিলার একমাত্র সম্বল বসতবাড়ি দখল করে নিয়েছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী পরিবার। দখলকারীরা দৌলতদিয়া সামসু মাস্টার পাড়ার হালিম শেখের ছেলে। দখল করা বাড়িতে পাকা দেয়ালের বেশ কয়েকটি টিনশেড ও প্রাচীর ঘেরা ঘর দেখা যায়। তাতে সলেমান শেখ লেখা একটি গেট রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে দৌলতদিয়া ঘাট টার্মিনালের অদূরে সামসু মাস্টার পাড়ায় মৃত আবু বক্কার সিদ্দিকের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫৫) ক্রয় সূত্রে মালিকানাপ্রাপ্ত ওই বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু ÿমতার দাপটে পাওনা টাকার দাবিতে ২০১০ সালের দিকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি লতিফ শেখ, তার বড় ভাই সলেমান ও ছোট ভাই শহীদ মিলে সুফিয়া বেগমের বাড়ি দখল করে নেন। এমনকি তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন তারা। সলেমান ও শহীদ হত্যা, অস্ত্র, ডাকাতি, মাদকসহ একাধিক মামলার আসামি। তারা একাধিকবার জেলও খেটেছেন বলে জানা যায়। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস করেন না।
ভুক্তভোগী সুফিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার নিজ নামে কেনা ১১ শতাংশ জমির বসতবাড়িতে সন্তানদের নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করে আসছিলাম। বছর দশেক আগে লতিফের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ধার নিয়েছিলাম। সেই টাকার জন্য তাকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা লাভ হিসেবে দেয়া হতো। কয়েক মাস সুদের টাকা দেয়ার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর কয়েক মাস সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তারা টাকার জন্য আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে সুদ ও আসল মিলে এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় বাড়িটির বন্ধকনামা লিখে নেয়। এর কিছুদিন পর লতিফ শেখ ও তার দুই ভাই আমাকে ও আমার সন্তানদের মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বাড়িটি দখল করে নেয়। আমি নিরূপায় হয়ে তৎকালীন দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মণ্ডলের কাছে অভিযোগ করি। কিন্তু অভিযুক্তরা নুরুল ইসলাম মণ্ডলের আপন খালাতো ভাই হওয়ায় তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তাড়িয়ে দেন। চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে বিচার না পেয়ে ভয়ে এলাকা ছেড়ে রাতে অন্ধকারে ছোট দুই ছেলেকে নিয়ে পাবনা জেলার ঈশ^রদী উপজেলার ই¯Íা গ্রামে বড় ছেলে রিকশাচালক বাবুর কাছে চলে যাই। দখলকারীদের দাপটে তখন আমি মামলা পর্যন্ত করার সাহস পাইনি।
এ ব্যাপারে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন প্রামাণিক বলেন, শুনেছি সুফিয়া বেগম চলে যাওয়ার পর লতিফ ও তার ছোট ভাই শহীদ ও সলেমান মিলে সুফিয়া বেগমের বাড়ি জোর করে দখলে নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ অন্যায় করলে অবশ্যই তার শা¯িÍ হবে। কারো ব্যক্তিগত অন্যায়ের দায় দল নেবে না।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম পান্নু বলেন, বসতবাড়ি দখলের কথা শুনেছি। ওই বাড়িতে এখন লতিফ, সলেমান ও শহীদ বসবাস করছেন। কিভাবে ওই বাড়ি তারা নিয়েছেন আমার জানা নেই।
সুফিয়া বেগমের প্রতিবেশী আজাদ খান বলেন, জমি ও বাড়ির মালিক সুফিয়া বেগম। সুফিয়া দীর্ঘ দিন এ বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। কয়েক বছর আগে লতিফরা কয়েক ভাই জোর করে সুফিয়াকে তাড়িয়ে দিয়ে বাড়িটি দখল করে নেন। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আইন আদালত সবই তখন তাদের হাতে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে কারো কথা বলার সাহস ছিল না।
অভিযুক্ত লতিফ শেখ বলেন, প্রায় ১০-১৫ বছর আগে এ বাড়িটি দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্য ধরে আমরা সুফিয়ার কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। এর মধ্যে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করে বায়নাপত্র লিখে নিয়েছিলাম। আর এক লাখ টাকা জমি দলিলের পর দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাড়িটির রেকর্ড পাশের বাড়ির মালিকের নামে থাকায় সুফিয়া আমাদের দলিল রেজিস্ট্রি করে দিতে ব্যর্থ হন। রেকর্ড সংশোধন করে আমাদের নামে জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে দেয়ার কথা। তখন থেকে আমরা বাড়িটির দখলে আছি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
কুলাউড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু যেসব এলাকায় রোববার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনা, সম্পাদক রনি তীব্র গরমে আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না বগুড়া পশ্চিম সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত তেঁতুলিয়া নদীর তীরে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার নওগাঁ সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত বান্দরবানে কেএনএফের তৎপরতার প্রতিবাদে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পেনশন স্কিম পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে দেশে বৃদ্ধাশ্রম থাকবে না : ডিসি নারায়ণগঞ্জ চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ফরিদপুরে সেদিন কী ঘটেছিল : বিবিসির প্রতিবেদন

সকল