২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

হোসেনপুরে বিএডিসির আলুবীজে চারা গজায়নি : ক্ষতির মুখে কৃষক

হোসেনপুরে এক আলু চাষি অঙ্কুরোদগম না হওয়া আলু বীজ দেখাচ্ছেন হনয়া দিগন্ত -

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) আলুবীজ থেকে চারা না গজানোয় কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এ অঞ্চলের কৃষক এক মাস আগে বিএডিসি থেকে আলুবীজ কিনে এনে জমিতে রোপণ করলেও এখনো অর্ধেক চারা গজায়নি। খাবার আলুকে বীজ হিসেবে দেয়ায় এ রকম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
বিএডিসি পাকুন্দিয়া এবং কিশোরগঞ্জ আলুবীজ জোন থেকে আলুবীজ এনে এ বছর আলু চাষ করেছেন এমন কৃষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার হোসেনপুর উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: তারিকুল হাসান কৃষকদের জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে এর সত্যতাও পেয়েছেন। কিন্তু বীজে চারা না গজানোয় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এর দায়ভার কেউ নিতে চাচ্ছে না।
জানা গেছে, হোসেনপুরের বেশির ভাগ কৃষক এ বছর ব্যাংকঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছেন। চারা না গজানোয় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এ ব্যাপারে বিএডিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইবেন।
হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া ও সিদলা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি আলু ক্ষেতে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঘুরে দেখা যায়, বিএডিসির বীজ লাগানো ক্ষেতে শতকরা ৪০ থেকে ৪৫ ভাগ চারা গজিয়েছে; তাও দুর্বল। অনেক বীজ তুলে দেখা গেছে সেগুলো পচে গেছে।
আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য জামাইল ব্লকের ব্লক লিডার ও গ্রামের আলুচাষি মো: শাহীন আহম্মেদ এ বছর ১০ একর (১০০ শতাংশ = ১ একর) জমিতে ডায়মন্ড ও কারেজ জাতের আলু চাষ করেছেন। যার মধ্যে কারেজ জাতের আলুর বীজ রোপণ করেন ২০ ভাগ জমিতে এবং বাকি ৮০ ভাগ জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেন। কারেজ জাতের বীজ থেকে ভালো চারা গজালেও ডায়মন্ড জাতের রোপণ করা আলুর অর্ধেক চারাই গজায়নি। এরই মধ্যে এক বিঘা জমি ভেঙে আবার বাজার থেকে আলু কিনে রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, জমিতে বিএডিসির বীজ লাগিয়ে এরই মধ্যে তার লাখ টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে।
ব্লকের আলুচাষি মো: আসাদ মিয়াসহ অনেক কৃষক একই রকম অভিযোগ করেন। এ সময় কয়েকজন কৃষক নিজেদের ক্ষতি এবং ঋণ পরিশোধের চিন্তায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আলুচাষি ইকবাল মিয়া বলেন, আমরা গরিব কৃষক। ব্যাংক ঋণের জন্য কোনো দিন ব্যাংকে যায়নি। এ বছর ভালো ফলনের আশায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিএডিসি থেকে আলুবীজ কিনে এখন বিপাকে পড়েছি।
একই অবস্থা সিদলা ইউনিয়নের গড়মাছুয়া ব্লকের কৃষকদের, সেখানকার কৃষক মো: শহীদ মিয়া, আলম মিয়া, খাইরুল ইসলাম ও আবদুস সালাম বলেন, লাভের আশায় এত কষ্ট করে আলু চাষ করে বীজের জন্য লোকসানে পড়তে হলো। আমরা এ ব্যাপারে বিএডিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইব।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: তারিকুল হাসান সরেজমিন পরিদর্শন করে কৃষকদের এই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আলুবীজের অঙ্কুর গজানোর পরে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ চারা গজায়নি। তার বক্তব্য, সাধারণত বীজ হিসেবে রোপণ করার জন্য আলু ৭০-৭৫ দিন হলেই উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু ওজন বাড়ানোর জন্য অনেক কৃষক সেসব আলুবীজ জমিতে ৮৫-৯০ দিন রাখেন, যা খাবার আলু হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হয়। সে আলুগুলো বীজ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ কৃষকদের দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিএডিসির সতর্কতার অভাবের কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিএডিসি পাকুন্দিয়া আলুবীজ জোনের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নায়েব আলী জানান, কুষ্টিয়া থেকে সরবরাহ করা আলুবীজের দু-একটি ব্লকের ক্ষেত্রে এ রকম হয়েছে। কৃষকদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল