পিরোজপুরে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন
- দেলোয়ার হোসাইন পিরোজপুর
- ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
শুধু পেঁয়াজ, রসুন ও মরিচ নয়; পিরোজপুরে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এ কারণে কম আয়ের মানুষ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে। ক্রেতারা বাজারে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় সবজিসহ নিত্য পণ্যসামগ্রী কম কিনে বাড়ি ফিরেন। এ দিকে জেলার হোটেল-রেস্তোরাঁয় পিঁয়াজু তৈরি ও সালাতে ব্যবহার করা হচ্ছে পেঁপে। ক্রেতাদের অভিযোগ বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণের প্রশাসনের কার্যকর তদারকির অভাব। ফলে বিক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছায় পণ্যের দাম নিচ্ছেন।
সাধারণ মানুষের মতামত, বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে নতুন বছরে নিত্যপণ্যের দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি মোকাম থেকে বেশি দামে মাল কিনে পরিবহন ও লেবার খরচা দিয়ে আমাদের ঘরে আসতে হয় বলে বাজারের এমন অবস্থা। গত শনি ও রোববার পিরোজপুর শহরের দু’টি এবং ভাণ্ডারিয়া বন্দরের কাঁচা বাজারসহ মুদি দোকান পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, বিদেশী পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা। রসুন ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা প্রতি কেজি। তবে কোথাও কোথাও অধিক মুনাফাখোর ২০০ টাকা দরেও রসুন বিক্রি করে থাকেন। শুকনা মরিচ পিরোজপুর শহরে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি হলেও মিল মালিকরা গুঁড়ো মরিচ প্রতি কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। গোল আলু ৩০ টাকা কেজি হলেও গোজ আলু ৫০-৬০ টাকা কেজি। টমেটো ১০০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, চাল প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আটা প্রতি কেজি ২৮ থেকে ৩০ টাকা। তবে কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, প্রতিটি লাউ আকার ভেদে ৫০-৬০ টাকা। মুলা প্রতি কেটি ২০ থেকে ২৫ টাকা হলেও ওলকপি (শালগম) ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে।
ভাণ্ডারিয়া ও পিরোজপুরের খুচরা সবজি বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পিরোজপুর শহরের বাজারের তুলনায় কচা নদীর পূর্ব পাড়ের ভাণ্ডারিয়া বন্দরসহ অন্যান্য বাজারগুলোতে সবজির দাম একটু বেশি। কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, খুলনা পাইকারি বাজার থেকে ট্রাকযোগে পণ্য আনতে কচা নদীর ফেরি পারাপার চার্জসহ পরিবহন খরচা বেশি দিতে হয়; যার প্রভাব পণ্যের ওপর পড়ে। বিক্রেতারা বলছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে শীতকালীন সবজির দাম কমবে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে অতিমাত্রায় বৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের সবজি চাষে সমস্যা হওয়ায় সবজির দাম এখনো চড়া। চরখালী ফেরিঘাট এলাকার ব্যাটারিচালিত অটো ট্যাম্পুচালক ছগির হোসেন বলেন, সারাদিন রাস্তায় যা আয় করি বাজারে গেলে সব হিসাব পাল্টে যায়। পেঁয়াজ, মরিচ, তরিতরকারি ও মাছ কিনতে হিসাব মেলাতে পারি না। ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পশারিবুনিয়া গ্রামের দিনমজুর মো: ফিরোজ ফরাজি জানালেন, সারা দিন কাজ করে ৫০০ টাকা আয় করি, বাজারে গেলে চিন্তায় পড়ে যাই। উপজেলার একটি মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মাহমুদুন নবী জানালেন, আমার মাসিক বেতন ৯ হাজার ৮৯০ টাকা। এ বাজারে কেমন করে সংসার চালাই তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। তিনি বলেন আমাদের টেনে-হেঁচড়ে চলতে হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা