২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি

বুলবুলের আঘাতে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুতের ১৫৬ কোটি টাকার ক্ষতি

সাড়ে ৬শ খুঁটি ভেঙে গেছে
-

ঘূর্ণিঘড় বুলবুলের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া উপকূলীয় জেলাগুলোর মধ্যে পিরোজপুর জেলা অন্যতম। জেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রামে শত শত বসতঘর, স্কুল, মাদরাসাসহ নানান স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে, ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা ভেঙে পড়ার কারণে তছনছ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন। বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা, বরগুনা জেলার বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা আর পিরোজপুর জেলার সাত উপজেলা মিলিয়ে ১১ উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এ সমিতির আওতায় তিন লাখ ৬৭ হাজার গ্রাহক রয়েছেন।
বুলবুলের তাণ্ডবে সব গ্রাহকই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১০ নভেম্বর রোববার বুলবুলের আঘাত শুরু হতেই বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গোটা সমিতির আওতাভুক্ত ১১টি উপজেলার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো: মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, আমাদের সমিতির আওতায় ৯ হাজার ৬ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ৬৫৭টি বিদ্যুতের খুঁটি (পুল) ভেঙে গেছে। সেখানে নতুন করে খুঁটি দিতে হয়েছে। ১০ হাজারের অধিক খুঁটি হেলে মাটিতে পড়েছে। ১২ হাজার খুঁটি হেলে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৪৭টি ট্রান্সফরমার নতুন করে স্থাপন করতে হয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রায় চার হাজার মিটার ভেঙে যাওয়ায় সেখানে নতুন মিটার স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ তারের ক্ষতি হয়েছে।
১০ দিনেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে জিএম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে গাছপালা ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় প্রথম দিকে আমাদের কর্মীদের যাওয়াই প্রায় অসম্ভব ছিল। এ জন্য কিছুটা
বেগ পেতে হয়েছে। তার পর আমাদের যে জনবল ছিল তা নিয়ে ঝড় থেমে যাওয়ার পরপরই মেরামতের কাজ শুরু করেছি। পরে অন্য সমিতি ও ঠিকাদারদের কাছ থেকে আরো এক হাজার ২০০ কর্মী এনে কাজ করিয়েছি। এখন ভেঙে যাওয়া মিটারের স্থলে নতুন মিটার স্থাপনের কাজ শেষের পথে। তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে সব গ্রাহকের লাইনে বিদ্যুৎ বিতরণ স্বাভাবিক হবে। জিএম জানান, বুলবুলের আঘাতে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১৫৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। এ দিকে ভেঙে পড়া লাইনের মেরামত দ্রুত শেষ করে আগেভাগে বিদ্যুৎ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জেলার বিভিন্ন বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারী ও তাদের স্থানীয় দালালরা গ্রাহকদের কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগের ব্যাপারে জিএম বলেন, আমি বলেছি যারা টাকা নিচ্ছে তাদেরকে আপনারা বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখুন, আমি এসে ব্যবস্থা নেবো। সমিতির তিন লাখ ৬৭ হাজার গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে গরমের মৌসুমে সর্বোচ্চ ৬১ মেগাওয়াট আর বর্তমান শীত মৌসুমে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে, যার পুরোটাই আমাদের আছে।


আরো সংবাদ



premium cement