২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুলাউড়ায় ১০ কোটি টাকার সড়ক পাকাকরণ কাজে অনিয়ম

-

কুলাউড়ায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তার কাজ বন্ধ করে রাস্তার নি¤œমানের কার্পেটিং তুলে দেয়। এ সময় রাস্তার উভয়পাশে গাড়ি আটকে রাখায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় জনতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম আর ট্রেডিংয়ের ঠিকাদার মুহিবুর রহমান কোকিল, তার সহযোগী ঠিকাদার আব্দুল হাকিম বাচ্চু ও উপজেলা প্রকৌশলী ইসতিয়াক হাসানকে প্রকাশ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে কাজের অনিয়মের বিষয় কৈফিয়ত চাইলে তারা পাশ কাটিয়ে স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করেন এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসী ঘেরাও করে রাখে। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে রাস্তার কাজ সঠিকভাবে সম্পাদনের প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা শান্ত হয় এবং অবরোধ তুলে নেয়। তবে ফের যদি কাজের অনিয়ম পাওয়া যায় তাহলে আরো বড় ধরনের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় স্থানীয়রা।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে, কুলাউড়া উপজেলার পুশাইনগর বাজার থেকে ভুকশিমইল পর্যন্ত আট কিলোমিটার রাস্তার মেরামত বাবত ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম আর ট্রেডিংয়ের মালিক মুহিবুর রহমান কোকিল। কাজটি বাস্তবায়নের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্যাপক অনিয়ম শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার গৌরীশঙ্কর এলাকায় সরেজমিন কাজের অনিয়ম দেখে বেলা সাড়ে ১১টায় কাজ বন্ধ করে দেয়। প্রায় দুই ঘণ্টা কাজ বন্ধ রাখার পর কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো: ইশতিয়াক ও ঠিকাদার মো: মুহিবুর রহমান কোকিল ঘটনাস্থলে যান। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের ঘেরাও করে রাখে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানায়, রাস্তা কার্পেটিং করে যাওয়ার পর কেউ হাত দিয়ে টান দিতেই কার্পেটিং উঠে আসে। আবার পা দিয়ে খোঁচা দিলে তা উঠে যায়। এত নি¤œমানের কাজ কোনো রাস্তায় হয়নি। গাাড় চলাচল করলেই পিচ উঠে যাবে। কাজ চলাকালে ঠিকাদারদের কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের কোনো লোকজন উপস্থিত থাকে না। ফলে শ্রমিকরা তাদের ইচ্ছামতো কাজ করে। কোথায়ও আধা ইঞ্চি আবার কোথায় এরচেয়ে কম পিচ ঢালাই করা হচ্ছে।
এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী মু. ইসতিয়াক হাসান ও ঠিকাদার মো: মুহিবুর রহমান কোকিলকে অবরুদ্ধ করে রাখার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় বিভিন্নজন সঠিক তদন্ত করে কাজ সম্পন্ন করার দাবি তোলে। পাশাপাশি অনিয়মের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানানো হয়।
ঠিকাদার মো: মুহিবুর রহমান কোকিল অবরুদ্ধের বিষয়টি পাশ কাটিয়ে বলেন, রাস্তার কাজ এখনো শেষ হয়নি। প্রাইম কোট করা হয়েছে মাত্র। কাজ শেষ হলে এই কাজ অনেক মজবুত হবে। যে কাজ ম্যানুয়েলি হওয়ার কথা সেই কাজ মেশিনে হচ্ছে। ট্যাকনিক্যাল কোনো সমস্যা নেই। স্থানীয় লোকজন ভুল বুঝে কাজে বাধা দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
কুলাউড়া থানার এসআই সনককান্তি দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মু. ইসতিয়াক হাসান অবরুদ্ধের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করা হচ্ছে। এলাকাবাসী মনে করেছে তিন ইঞ্চি কাজ হওয়ার কথা। ভুল বোঝাবুঝির কারণে সাময়িক সমস্যা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement