১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যমুনার চরে বাদাম চাষে ব্যস্ত কৃষক

-

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। যমুনার চরাঞ্চল থেকে সম্প্রতি বন্যার পানি নেমে যাওযায় চরাঞ্চলে চার দিকে জেগে উঠেছে বালু চর। আর এ অঞ্চলে বর্তমানে কৃষকরা পরিবারের লোকজন নিয়ে বাদাম বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার গাবসারা, রেহাইগাবসারা, রুলীপাড়া, বেলটিয়াপাড়া, জুঙ্গীপুর, সরইপাড়া, বলরামপুর, কুঠিবয়ড়া, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুল, শুশুয়া, গোবিন্দপুর, নলছিয়া, চিতুলিয়াপাড়া, রামপুর, কালিপুর ও ডিগ্রিচরসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামের কৃষকরা এলাকায় বাদাম চাষ করগ্রণ। যমুনা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকার মানুয় তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বাদাম বীজ বপন করা শুরু করছেন।
চরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাদাম চাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ বাদামের বীজ বপন করছেন, কেউ লাঙল টানছেন আবার অনেক চাষিরা বীজ বপন করা জমি পরিচর্যা করছেন। অন্য দিকে চরাঞ্চলের গ্রামীণ নারীরাও বাদাম চাষে বিশেষ ভূমিকা রাখগ্রণ, বাড়ির কাজের পাশাপাশি ছেলেদের সাথে মেয়েরাও সহযোগিতা করছে। কাজ করছে স্কুল পড়া ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও। ভোরের সূর্য না উঠতেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাষিরা বালুর মাঠে বাদাম বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
রেহাইগাবসারা গ্রামের বাদাম চাষি মো. আলম মিয়া বলেন, বিগত বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পুরোদমে বাদাম বীজ বপন ও ক্ষেতের পরিচর্যা শুরু করছি। অল্প খরচ, কম সময় বাদাম চাষে অধিক লাভবান হওয়া যায়। বাদাম চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় প্রায় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা এবং বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যায় প্রায় ৭ থেকে ৮ মণ। হাট বাজারে বাদামের ভালো চাহিদা থাকায় খরচ বাদে বিঘাপ্রতি লাভ হয় প্রায় ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
বাদাম চাষি মোসা: কোহিনুর বেগম বলেন, গত বছর আমি ৩ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে ভালো ফলন এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর প্রায় ৭ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এস এম রাশেদুল হাসান বলেন, এরই মধ্যে যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষ শুরু হয়েছে। অনেক চরগুলোতে বাদামের চারাও গুজিয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাদাম চাষি কৃষকদের সহযোগিতা করার জন্য হতদরিদ্র কৃষক পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারের বরাদ্দকৃত প্রণোদনা পেলে দ্রুত সময়ে কৃষকদের মাঝে তা বিতরণ করা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: জিয়াউর রহমান বলেন, সুস্বাদু, মুখরোচক ও ভিটামিন-সমৃদ্ধ এই ফসল এক দিকে যেমন খাদ্যে জোগান দিয়ে থাকে তেমনি তেলের চাহিদা পূরণ করে। বাদাম ক্ষেত থেকে কচি পাতা কেটে কৃষকরা তাদের গরু-ছাগলের খাওয়ান জোগায়। এতে গরু-ছাগল তাড়াতাড়ি মোটাতাজা হয়। তা ছাড়া অন্য ফসলের মতো বাদামের জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement