২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দক্ষিণ চট্টগ্রাম উপকূলে ২ যুগেও মেরামত হয়নি সাইক্লোন শেল্টার

-

দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপকূলে ঝুঁকিপূর্ণ সাইক্লোন শেল্টার গত দুই যুগের বেশি সময়ে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বছরের পর বছর প্রয়োজনী মেরামত ও সংস্কারের অভাবে উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ প্রাইমারি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারগুলো আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ সাইক্লোন শেল্টার মেরামত নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিকবার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও আজো ঝুঁকিপূর্ণ রয়ে গেছে সাইক্লোন শেল্টারগুলো। ফলে দুর্যোগ মুহূর্তে আশ্রয় নেয়া অসহায় মানুষ এবং স্কুলে পাঠদানরত অবস্থায় এসব ঝুঁকিপূর্ণ শেল্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা যায়, বাঁশখালী উপকূলে ১১৬টি, আনোয়ারা উপকূলে ৬৯টি ও পটিয়া উপকূলের ১২টিসহ ১৯৭টি সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশই স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার।
সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে একবার এবং ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর দক্ষিণ চট্টগ্রামের পুরো উপকূলীয় এলাকাই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এ সময় বিশেষ করে বাঁশখালী, আনোয়ারা ও পটিয়াসহ পশ্চিম পটিয়ায় লক্ষাধিক মানুষসহ অসংখ্য গবাদিপশু প্রাণ হারায়। এই দুই দুর্যোগে উপকূলীয় এলাকার প্রাণহানিসহ কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়।
দু’টি বড় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর সৌদি আরবসহ কয়েকটি দাতা দেশের আর্থিক সহযোগিতায় পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারায় ২৬, কালিপুরে ৩, ছনুয়ায় ১৭, সরলে ১১, খানখানাবাদে ৯, চাম্বলে ৮, বাহারছড়ায় ১৬, পুকুরিয়ায় ৫, শীলকুপে ৫, পুইছড়িতে ৪, কাথারিয়ায় ৪, শেখেরখীলে ৬ ও পৌর সদর জলদিতে ৪টিসহ ১১৮টি; আনোয়ারার বৈরাগে ৫, বারশতে ৪, রায়পুরে ১৩, বটতলীতে ৬, বুরুমচড়ায় ৬, বারখাইনে ৮, পরৈকোরায় ৪, হাইলধরে ৫, জুইদণ্ডীতে ৬, আনোয়ারা সদরে দু’টিসহ ৬৯টি এবং পশ্চিম পটিয়ায় জুলধায় ২, শিকলবাহায় ২, চর পাথরঘাটায় ২, চরলক্ষায় ৩, শোভনদণ্ডীতে ১, কোলাগাঁওয়ে ১ ও জিরি ইউনিয়নে ১টিসহ ১৯৭টি সাইক্লোন শেল্টার উপকূলীয় এলাকায় নির্মাণ করা হয়। সাইক্লোন শেল্টারগুলো বিদেশী সাহায্য, দেশী-বিদেশী এনজিও ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে নির্মাণ করে প্রাইমারি স্কুল কমিটিগুলোকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এসব সাইক্লোন শেল্টারগুলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত না করায় যুগের পর যুগ ধরে এসব সাইক্লোন শেল্টার অযতœ-অবহেলায় বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এগুলোর অধিকাংশ ভবন ফাটল ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দরজা, জানালা নেই। নেই পানির সুব্যবস্থা ও টয়লেট। আবার কোথাও কোথাও উপকূলীয় এলাকায় সাগরের ভাঙনের মুখে রয়েছে সাইক্লোন শেল্টার।
বাঁশখালী উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, সাইক্লোন শেল্টারগুলো নির্মাণের পর থেকে এগুলোকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়নি। এর ফলে যুগ যুগ ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে সাইক্লোন শেল্টারগুলো এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে চার কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশখালীতে দু’টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ প্রায় শেষপর্যায়ে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার অধিকাংশ সাইক্লোন শেল্টার ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান, প্রতি বছরই ঝুঁকিপূর্ণ সাইক্লোন শেল্টার মেরামতের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র পাঠানো হয়। এ বছরও পাঠানো হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement