২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মধুপুরে আদর্শ গ্রাম থেকে ২৭ পরিবার ভিটেমাটি ছাড়া

মধুপুরে শোলাকুড়ি আদর্শ গ্রামে ভিটেমাটি হারানো ভুক্তভোগীরা : নয়া দিগন্ত -

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শোলাকুড়ি ইউনিয়নের সুতানলী দীঘিরপাড়ের আদর্শ গ্রামের ২৭টি হতদরিদ্র পরিবারকে ভিটেমাটি থেকে বিতাড়িত করার অভিযোগ উঠেছে। এখন তারা বাড়িঘর ও ভিটেমাটি ছাড়া হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবার-পরিজন নিয়ে। বাড়িঘর ও ভিটেমাটি ফিরে পেতে প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন তারা। এ চক্রের হাত থেকে রেহাই পাননি ইউপি সদস্য থেকে শুরু করে সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবারগুলো। ভিটেমাটি থেকে বিতাড়িত হয়ে তারা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে থেকে নানা কষ্টে দিন যাপন করছেন।
জানা যায়, ১৯৯৫ সালে তৎকালীন সরকার উপজেলার শোলাকুড়ি সুতানলী দীঘির পাড়ে এলাকার সহায়সম্বলহীন ৭০টি পরিবারকে আদর্শ গ্রামে আশ্রয় দেয়। প্রত্যেক পরিবারকে ৮ শতাংশ জমি ও একটি ঘর দলিলমূলে প্রদান করা হয়। এই জমি তারা বংশপরম্পরায় চাষাবাদ ও বসতবাড়ি করে ব্যবহার করছে। বিক্রি বা হাত ছাড়া করা যাবে না এমন ২২টি শর্তে তাদের মধ্যে ভিটেমাটি ও ঘর প্রদান করা হয়। অথচ আদর্শ গ্রামের একটি প্রভাবশালী চক্র অসহায়, হতদরিদ্র, দুর্বল, পরিবারগুলোকে নানা অজুহাতে ভিটেমাটি থেকে বিতাড়িত করছে। ভিটেমাটি হারা পরিবারগুলো মাতব্বরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোনো প্রতিকার না পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছে। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু ফিরে পেলে তারা খেয়ে না খেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারবে এমনটাই আশা তাদের।
সরেজমিন ভিটেমাটি হারা পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের ভিটেমাটি হারানোর করুণ কাহিনী। সুবিধাভোগী শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য হাছনা বেগম জানান, আদর্শ গ্রামে ঘর পেয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি। কিছু দিন যেতে না যেতেই দুর্ঘটনায় তার স্বামীর হাত ভেঙে যায়। পাশের বাসিন্দা সায়েদ আলীর কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে ৩০ হাজার টাকা ধার নেন। ধারকৃত টাকা ফেরত দিতে গেলে সায়েদ আলী দাবি করেন তার কাছে ঘরবাড়ি সব বিক্রি করা হয়েছে। এ ভাবে তিনি সায়েদ আলীর ধার করা টাকার অজুহাতে ভিটেমাটি হারিয়ে স্বামী সন্তান ও পরিবারের আট সদস্য নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ভিটেমাটি হারানো শহর বানু জানান, ঘর পেয়ে সুখে শান্তিতে স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস শুরু করেছিলেন। চার বছর যাওয়ার পর পেটের দায়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে যান। ঢাকা থেকে আদর্শ গ্রামে ফিরে তার ঘরে উঠতে গেলে মরিয়ম বেগম, স্বামী আলতাব হোসেন ও তার বাহামভুক্ত লোকেরা ঘরে উঠতে দেয়নি। সে থেকেই শহর বানু পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কথা হয় আরেক ঘর হারা জুলহাস উদ্দিনের সাথে। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক। ঘর পাওয়ার পর চার বছর বসবাস করেন। ঘর ভেঙে গেলে চালা নামিয়ে মাটির দেয়াল দিতে গেলে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র বাধা দিয়ে তাকে উচ্ছেদ করে দেয়।
শুধু হাছনা বেগম, শহর বানু, জুলহাস, নতুফাই নন তাদের মতো ভিটেমাটি হারা হয়েছে আদর্শ গ্রামের হেকমত, আলাউদ্দিন, রজব, রাজ্জাক, রমজান, হাছেন-মান্নাসহ ২৭টি পরিবার।
শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন জানান, এ আদর্শ গ্রাম থেকে ইতোমধ্যেই ২৭ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে বলে তিনি জেনেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন জায়গা জমি ফিরে পেতে তার কাছে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমা আহাম্মেদ পলি জানান, প্রকৃতদের খুঁজে বের করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
মেক্সিকোয় মেয়র প্রার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহেও ক্লাস বন্ধ ঘোষণা দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালককে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ আ’লীগের চুয়াডাঙ্গায় হিট‌স্ট্রো‌কে যুবকের মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর নারীর মৃত্যু ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াল, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৬ শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল

সকল