শিবালয়ের অভ্যন্তরীণ রুটের যানবাহনে চাঁদাবাজি
- শিবালয় (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
শিবালয়ের অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকৃত সিএনজি, লেগুনা, অটোরিকশা থেকে নামধারী মালিক-শ্রমিক ও দলীয় নেতাকর্মী পরিচয়ে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা আদায় করায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশ বলেছে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটের যানবাহন মালিকÑশ্রমিকদের কেউ চাঁদাবাজির বিষয়ে অভিযোগ তুললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারকে দেয়া উথলী-জাফরগঞ্জ রুটে সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির এক সদস্যের অভিযোগে দেখা গেছে, এ রুটে চলাচলকৃত দেড় শতাধিক সিএনজি থেকে স্থানীয় ইসমাইল হোসেন দীর্ঘ ছয় বছর যাবত মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ রুটে তার কোনো গাড়ি না থাকলেও নিজেকে রোড পরিচালনা কমিটির সভাপতি দাবি করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতি মাসে অবৈধভাবে দু’লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সাধারণ মালিক-শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে ইতঃপূর্বে তাকে বিতাড়িত করে। কয়েক দিন যেতে-না-যেতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাধনচন্দ্র দাসের জোর সুপারিশে মানিকগঞ্জ জেলা হালকা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়ন ঘিওর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদিত কমিটির সভাপতি পদ বাগিয়ে পুনরায় একইভাবে চাঁদাবাজিতে মেতে ওঠে। কথিত সভাপতির এমন কর্মকাণ্ডে কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম ও কোষাধ্যক্ষ আওলাদ হোসেন একযোগে ওই কমিটি থেকে পদত্যাগ করায় ইসমাইল আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এ রুটের সিএনজি চালক বাবু, আকতার, মিন্টু, হাবিব, জনি, জামাল, ফারুক, সুমন, রাজুসহ অনেকেই ক্ষোভের সাথে এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছি। প্রত্যহ সামাহ্নন্য আয় থেকে নিয়মিত স্ট্যান্ডের চাঁদা ও ঋণের কিস্তি পরিশোধের পর হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের কোনো মূল্যই থাকে না।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ বিভিন্ন স্ট্যান্ডে সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের নির্ধারিত চাঁদা ছাড়া গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। এর বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করলে উল্টো পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার ভয়ে কেউ মুখ খোলে না।
চাঁদাবাজির বিষয়ে উথলী সিএনজি স্ট্যান্ডের সভাপতি ইসমাইলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সেক্রেটারি করিমের সাথে আমার সামান্য মনোমালিন্য হওয়ায় সে আমার বিরুদ্ধে এমন কুৎসা রটাচ্ছে। এ রুটে সিরিয়াল মোতাবেক গাড়ি চালানোর জন্য যে টাকা তোলা হয় তা দিয়ে সিরিয়াল মাস্টারের বেতন, প্রশাসনের মাসিক ও দলীয় নেতাদের মধ্যে ভাগ-ভাটোয়ারা করা হয়।
কমিটির সুপারিশের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাধনচন্দ্র দাস বলেন, সুষ্ঠুভাবে এ সকল সিএনজি পরিচালনার জন্য ওই কমিটি গঠনের জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের সুপারিশ করেছি। তবে চাঁদা তোলা ও আদায়ের বিষয় আমার জানা নেই।
মানিকগঞ্জ জেলা হালকা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়ন ঘিওর সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন ও সভাপতি আব্দুর রহমান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাট, আরিচা, উথলী, টেপড়া, বরঙ্গাইল, মহাদেবপুরসহ অভ্যন্তরীণ রুটে প্রত্যহ ছোট আকারের সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে আরিচা-উথলী, আরিচা-পাটুরিয়া, উথলী-জাফরগঞ্জ, বরঙ্গাইল-ঘিওর, মহাদেবপুর-ইন্তাজগঞ্জ, টেপড়া-মাচাইন রুট ভেদে গাড়ি প্রতি ট্রিপ বা দিন হিসেবে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত আদায় হচ্ছে। প্রতিদিন যার পরিমাণ প্রায় অর্ধ লাখ টাকা। বছরে যা দাঁড়ায় ১৮ কোটির অধিক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা