২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল অপরিচ্ছন্ন দুঃসহ অবস্থায় রোগীরা

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের চারপাশে জমে থাকা নানা বর্জ্য : নয়া দিগন্ত -

মূল ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতায় তীব্র দুর্গন্ধ এবং চরম অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালটি এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী ওয়ার্ডগুলোতে ভর্তিকৃত রোগীদের হাসপাতালে অবস্থান করা দুঃসহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতালের চার পাশে পরিবেষ্টিত মূল ড্রেনটি নির্মাণ কাজের পাথর দিয়ে ভরাট হয়ে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ওই ড্রেনে জমানো পানি হাসপাতালে চার পাশে উপচে পড়ে এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও তীব্র দুর্গন্ধের সৃষ্টি করছে। তদুপরি এই ড্রেনের জমানো পানিতে অবলীলাক্রমে মশাগুলো বংশবৃদ্ধি করে চলেছে; যা ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গু রোগের সহায়ক হয়ে উঠছে। এ ছাড়া হাসপাতালের চার পাশে জমে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য, যা থেকেও দুর্গন্ধ হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো এবং চার পাশে ছড়িয়ে পড়ছে।
গাইবান্ধা পৌরসভার প্যানেল মেয়র তানজিমুল ইসলাম পিটার হাসপাতালে অসুস্থ রোগীদের দেখতে গিয়ে এহেন অবস্থায় নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ পরিস্থিতির উন্নয়নে তিনি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা: আসাদুজ্জামানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি উল্টো পৌরসভা কর্তৃপকে ড্রেনটির উন্নয়ন করার অনুরোধ জানান। এ ব্যাপারে প্যানেল মেয়র সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালটিতে বিরাজমান দুর্গন্ধে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন বলেন, গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের ড্রেন নির্মাণ, সংরণ, ভবন নির্মাণ, ভবনের উন্নয়ন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপ ও সরকারের গণপূর্ত বিভাগের। এটা পৌরসভার আওতাধীন নয়। এতদসত্ত্বেও জনস্বার্থে পৌরসভা থেকে হাসপাতালটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য পৌরসভার প থেকে প্রতিদিন দু’জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী সেখানে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, হাসপাতালের উন্নয়ন ও নতুন ভবনের জন্য প্রায় ৩৭ কোটি টাকার একটি চলমান প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতদসত্ত্বেও এই ড্রেনটির সংস্কার বা উন্নয়ন কেন হচ্ছে না, তা বোধগম্য নয়।
এ দিকে রোগের চাপে বেহাল ২৫০ বেডের এই হাসপাতালটি। বেডে ঠাঁই না পেয়ে ওয়ার্ডের মেঝেতে এবং করিডোরগুলোর দুই পাশে বিছানা পেতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রোগীরা। হাসপাতালের ওয়ার্ডে এবং করিডোরে পা ফেলারও তিলমাত্র জায়গা নেই। তদুপরি ভর্তিকৃত রোগীদের দেখতে আসা আত্মীয়স্বজন এবং পরিচর্যাকারীদের ভিড় এবং প্রতিনিয়ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও সঙ্গীদের এই হাসপাতালটি সর্বণই যেন একটি জনাকীর্ণ বাজারে পরিণত হয়। এতে চিকিৎসা নিতে আসা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চরম বিপাকেও পড়তে হয়। তদুপরি এহেন অবস্থায় হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের লেশমাত্রও খুঁজে পাওয়া দায়। গোটা হাসপাতাল চত্বরে চার পাশে ফেলা বর্জ্য ও টয়লেটের দুর্গন্ধে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়ে। এই বিরুদ্ধ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই চিকিৎসা নিতে হয় রোগীদের।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা: আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ড্রেনটির মুখে জমা পাথরের কারণে ড্রেনে জলাবদ্ধতা এবং পানি উপচে পড়ে এই দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদপে নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement