২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শখের মাল্টা চাষে আয়ের স্বপ্ন দেখছেন মিরসরাইয়ের আজম

-

শখের বসে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বাড়ির পাশে অবস্থিত ১০ শতক জায়গায় মাল্টা চাষ শুরু করেন মিরসরাইয়ের গোলাম মো: আজম। দুই বছরের মাথায় গাছে ফল আসতে শুরু করে। এখন সেই মাল্টা বিক্রি করে আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ফলন প্রথম ও দ্বিতীয় বছর হওয়ায় মাল্টা আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পাড়া-প্রতিবেশীকে বিতরণ করেছেন তিনি। বর্তমান বাজারে ভেজালের ভিড়ে তার বাগানের মাল্টা কেমিক্যালমুক্ত ও সুস্বাদু।
মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধকরণ থেকে শুরু করে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস। গোলাম মো: আজম উপজেলার ১৫ নম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বড়কমলদহ গ্রামের মৃত জালাল আহমদের ছেলে। একসময় গাড়ি ব্যবসা, ইট ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলেও এখন চাষাবাদ নিয়ে পড়ে আছেন তিনি। মাল্টা চাষের পাশাপাশি বিষমুক্ত কলা চাষ করছেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়ির উত্তর পাশে অবস্থিত ১০ শতক জায়গায় মাল্টা বাগানের সমারোহ। পাশাপাশি রয়েছে লেবুগাছ। তিনি বাগানে পরিচর্চা করছেন। বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই এই ব্যক্তির এখন সময় কাটে মাল্টা বাগান ও পাশে অবস্থিত কলা বাগানে।
আজম বলেন, উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান ভাই আমার পূর্ব পরিচিত। মূলত তিনি আমাকে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আমিও নতুন কিছু করতে খুব আগ্রহী। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বাড়ির উত্তর পাশে ১০ শতক জায়গায় বারি মাল্টা-১ জাতের ১০০ চারা লাগাই। একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে প্রথম বছর শাক ও পরের বছর মরিচ চাষ করেছি। গাছের চারা, সার উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আমার ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। সম্পূর্ণ ফরমালিননমুক্ত এই মাল্টা অনেক সুস্বাদু। প্রথম ও দ্বিতীয় বছরের ফলন হিসেবে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দিয়েছি। এই বছর থেকে বিক্রি করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। আমি মাল্টা চাষের আরো পরিধি বাড়ানোর চিন্তাও করছি। উপজেলা, জেলা ও মাল্টা প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মকর্তা আমার বাগান পরিদর্শন করেছেন। তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মদ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সুফিয়ানসহ সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, নতুন উদ্ভাবিত বারি মাল্টা-১ চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। স্বল্পসময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষিরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন এই জাতের মাল্টা চাষে। বারি মাল্টা লাগানোর মাত্র দু-তিন বছরের মাথায় ফলন দেয়া শুরু করে। ২০ বছর ধরে গাছগুলোতে ফলন ধরে। একটা পরিপক্ব মাল্টা গাছে ৪০ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত ফলন হয়।
মিরসরাই উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: আবু সুফিয়ান বলেন, আজম ভাই নতুন কিছু করতে আগ্রহী। তাই সাইট্রাস লেবু উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সরকারিভাবে তাকে ১০০ মাল্টা চারা ও চার ধরনের সার বিনা মূল্যে দিয়েছি। মূলত মাল্টা চাষের প্রদর্শনী হিসেবে আমরা এই বাগান বেছে নিয়েছি। উপজেলার আরো কয়েকটি জায়গায় অনেকে মাল্টা চাষ করছেন। কেউ যদি মাল্টা চাষে আগ্রহী হয় আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহমদ বলেন, মাল্টা চাষের জন্য এখানকার মাটি বেশ উপযোগী। আমরা মাল্টা চাষের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। ক্রমান্বয়ে উপজেলায় মাল্টা চাষের পরিধি বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মাল্টা চাষিদের সবসময় সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল