২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আগৈলঝাড়ায় ধাপে সবজি চাষ স্বাবলম্বী পাঁচ শতাধিক পরিবার

ভাসমান ধাপ থেকে সবজির চারা তুলছেন চাষি : নয়া দিগন্ত -

দেশের শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত বরিশালের আগৈলঝাড়ায়ও শুরু করা হয়েছিল ভাসমান (ধাপ) সবজিচাষ। ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার পাঁচ শতাধিক কৃষক। জলাবদ্ধ এলাকায় বেড বা ধাপে সবজির চাষ করে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে স্বল্প সময়ের এই প্রকল্পে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় এর সম্প্রসারণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বেশির ভাগ জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় বছরের ছয় মাস জমিতে পানি জমে থাকে। এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এই জলাবদ্ধতা একটা অভিশাপ। কারণ বছরে একবারই তারা জমিতে ফসল ফলাতে পারছেন। বদ্ধ পানিতে আগাছা ও কচুরিপানায় ভরে যায় জমি। সরকার চাষিদের আত্মকর্মসংস্থান ও পরিবারের আয়ের সুযোগ করে দিতে ২০১৩ সালে থেকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে ‘বন্যা ও জলাবদ্ধ প্রবণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন অতিযোজন কৌশল হিসেবে ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প’ গ্রহণ করে। এই প্রকল্পের আওতায় রাজিহার ইউনিয়নের বাশাইল গ্রামে একটি সমিতির মাধ্যমে চাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বিনা মূল্যে বীজ সরবরাহ, বেড তৈরির খরচ ও বিভিন্ন কৃষি উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
চাষি তোফাজ্জেল হোসেন ও খালেক সরদার জানান, তাদের বাবাও বেডে সবজি, সবজির চারা তৈরি করে তা বিক্রি করেছেন। এখন তারাও এর সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। তারা বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষের দিকে বিভিন্ন জাতের সবজি চারা চাষের কার্যক্রম শুরু করা হয়। চাষিরা এ সময় বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কচুরিপানার বড় বড় দলকে একত্র করে রাখেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাতে পচন ধরে। পচন ধরা কচুরিপানাই ধাপ হয়। প্রতিটি ধাপেই পর্যাপ্ত জৈবসারের কারণে সবজির চারাগুলো অত্যন্ত উর্বর হয়। প্রত্যেকটি ভাসমান ধাপে চারবার চারা উৎপাদন করা যায়। প্রথমবার একমাস পরিচর্যার পর চারাগুলো বিক্রি করলেও পরে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই পুনরায় চারা বিক্রি করা যায়। সবজির চারাগুলো গ্রাম থেকেই পাইকারেরা এসে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, ধাপের ওপর সবজি চাষে প্রশিক্ষণ দেয়ার পর চাষিদের বিনা মূল্যে বীজ, সারসহ বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হয়। উপজেলার বাশাইলে ১৯ জন চাষিকে এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারা সবাই বেডে চারা উৎপাদন করে বর্তমানে ভালো আছেন। ১৯ জনের বাইরেও অনেকে নিজ উদ্যোগে বেডে চারা উৎপাদন করছেন বলে তিনি জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement