২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাইকগাছায় ভারী বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

-

মওসুমের সবচেয়ে ভারী বর্ষণে খুলনার পাইকগাছা পৌরসদরসহ উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। একাকার হয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘার মৎস্য ঘের। অতিরিক্ত পানিতে গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ভারী বর্ষণের ফলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অন্তত ৩০টি কাঁচা, আধা কাঁচা ঘর ভেঙে পড়েছে। আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে। এ দিকে পানির তোড়ে উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের খুলনা-পাইকগাছা সড়কের বোয়ালিয়া মোড় থেকে বোয়ালিয়া ব্রিজ রোডের একটি কালভার্ট পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা দিয়ে সকল প্রকারের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় জনগণ।
জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। এর মধ্যে গত শুক্রবার রাত ৩টার দিক থেকে শনিবার বেলা ১টা পর্যন্ত ভারী বর্ষণে পৌরসদরসহ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল গফফার মোড়ল জানান, ভারী বর্ষণে ওয়ার্ডের বিভিন্ন রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া পৌরসদরের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, ভোর থেকে ভারী বর্ষণের মধ্যে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখে পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। রাতের মধ্যে পানি সরে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, ইউনিয়নের ১৫টি কাঁচা ঘর ভারী বর্ষণে ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়া আমনের বীজতলাও তলিয়ে গেছে। গদাইপুর ইউনিয়নের অনেক রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ দিকে পানির তোড়ে খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের বোয়ালিয়া মোড় থেকে বোয়ালিয়া ব্রিজ রোডের একটি কালভার্ট ভেঙে গেছে; যে কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে সকল প্রকারের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত কালভার্টটি সংস্কার করতে না পারলে কম সময়ে উপজেলা সদর থেকে রাড়–লী ইউনিয়নে এবং পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে। এলাকবাসী দ্রুত কালভার্টটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন লিটন জানান, গদাইপুর ইউনিয়নের ৯টি কাঁচা ঘর পড়ে গেছে। এ ছাড়া আমনের বীজতলা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। গড়–ইখালীর প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুস সালাম কেরু জানান, ইউনিয়নের অসংখ্য চিংড়ি ঘের তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা জি এম ইকরামুল ইসলাম জানান, মৌখালী, ফতেপুর, ধামরাইল, গজালিয়া, ফেদুয়ারাবাদ, ঢেমশাখালী, কাটাবুনিয়া, কলমিবুনিয়া ও উড়াবুনিয়াসহ চাঁদখালী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
রাড়–লী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ গোলদার জানান, তার ইউনিয়নের বাঁকা, কাটিপাড়া, শ্রীকণ্ঠপুর, রাড়–লী মালোপাড়াসহ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণে বীজতলা তলিয়ে গেলেও রাতের মধ্যে পানি সড়ে গেলে বীজতলা জেগে যাবে। ফলে বীজতলার কোনো ক্ষতি হবে না। দীর্ঘ দিন পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখা না মিললেও ভারী বর্ষণের ফলে উঁচু জমিতে এখন আর ধান রোপণ করতে কৃষকের কোনো অসুবিধা হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement