১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল
-

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বহুল প্রত্যাশিত দোহাজারী-কক্সবাজার ঘুনদুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভারী বর্ষণের সাথে পাহাড়ি ঢলে প্রকল্পের চলমান রেলপথ নদী শাসন কাজে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বাস্তবায়নাধীন কাজের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে কমপক্ষে ছয় মাস। বিশেষ করে এই প্রকল্পের প্রথম লটে দোহাজারী-রামু রেলপথ প্রকল্প কাজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২০ কিলোমিটার নির্মাণাধীন রেলপথ (মাটির কাজ) ধসে গেছে। একই সাথে এই প্রকল্পের অধীনে নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ ও নদী শাসন কাজের কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প পরিচালকেরা জানিয়েছেন।
এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকারের অর্ধায়নে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দোহাজারী-কক্সবাজার ভায়া ঘুনদুম ১২৯ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পের প্রথম ধাপে দোহাজারী-কক্সবাজার ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম লটে দোহাজারী-রামু রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে গত বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। আর দ্বিতীয় লটে রামু-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে একই বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে।
প্রথম ধাপে রেলপথ নির্মাণকাজ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে চীনের দু’টি ও বাংলাদেশের স্বনামধন্য দু’টি প্রতিষ্ঠান। দুই হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকায় প্রথম লটে দোহাজারী-রামু রেলপথ নির্মাণকাজের চুক্তি হয় চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও দেশের তমা কন্সট্রাকশন কোম্পানির সাথে। দ্বিতীয় লটে ৩ হাজার ৫০২ কেটি ৫ লাখ ২ হাজার টাকায় রামু-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজের চুক্তি হয় চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও দেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সাথে। চুক্তির শর্তানুযায়ী কাজ শুরু হওয়ার তিন বছরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পরই দ্বিতীয় ধাপে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমারের সীমান্ত ঘুনদুম পর্যন্ত অবশিষ্ট ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী মফিজুর রহমান।
কাজের শুরতে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও কাজের অগ্রগতি ছিল বেশ সন্তোষজনক। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের আগে প্রথম লটের কাজের অগ্রগতি ছিল ২৭ থেকে ২৮ শতাংশ এবং দ্বিতীয় লটের প্রায় ২১ শতাংশ। প্রথম লটের দোহাজারী-রামু রেলপথ প্রকল্প কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন কোম্পানির এমডি বিমল সাহা বলেন, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এ প্রকল্পের ২০ কিলোমিটার নির্মাণাধীন রেলপথের মাটির কাজ এবং এই প্রকল্পের সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর দুই স্থানে আর ডলু ও টংকাবতি খালের শাসন কাজসহ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, কাজের ক্ষতি কাটিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কমপক্ষে আরো ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লেগে যাবে।
প্রকল্পের দ্বিতীয় লটের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক আনাদ কুনকার্নি জানান, তাদের কাজে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে ভারী বর্ষণ ও ঢলে কারণে কাজ অন্তত দু-তিন মাস পিছিয়ে পড়তে পারে বলে তিনি জানান।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম-দোহাজারী ভায়া ঘুনদুম রেললাইন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
দোহাজারী-কক্সবাজার ভায়া ঘুনদুম রেললাইন প্রকল্পে রয়েছে ৯টি নতুন রেলওয়ে স্টেশন, ৪টি বড় ও ৪৭টি ছোট ব্রিজ, ১৪৯টি কংক্রিট বক্স কালভার্ট ও ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট (পাইপ কালভার্ট)। এ ছাড়াও ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন রেললাইনে অত্যাধুনিক অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ট্রাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থাও সংযোজন করা হবে। এ ছাড়াও কক্সবাজার সৈকতে ঝিনুকের আদলে তৈরি করা হবে অত্যাধুনিক একটি রেল স্টেশন।
আর এই নতুন রেলপথটি তৈরি করতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উভয় দিকে প্রায় ১৪ শ’ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে কক্সবাজার জেলার এক হাজার একর এবং চট্টগ্রাম জেলার ৪০০ একর রয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-দোহাজারী ভায়া ঘুনদুম ১২৯ কিলোমিটার রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০০ সালে প্রথম কানাডিয়ান একটি কোম্পানি বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে রেলপথ বাস্তবায়নের ওপর ফিজিবিলিটি স্টাডি করে ডিপিপি (প্রকল্প প্রোপাইল) তৈরি করে। পরে ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৩ সালের শেষ নাগাদ এডিবির অর্থায়নে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রকল্পের আওতায় নতুনভাবে প্রস্তাবিত রেলপথের ডিজাইনসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি শেষ করা হয়। এরপর এডিবির অর্থায়নে ১৮ মাস ধরে নতুনভাবে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির পাশাপাশি প্রস্তাবিত রেললাইনের নতুন ডিজাইন অবকাঠামো তৈরি করা হয়।
এই ব্যাপারে বাস্তবায়নাধীন রেলপথ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মফিজুর রহমানের সাথে বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় এই প্রকল্প কাজের ক্ষয়ক্ষতি ও কাজের সার্বিক বিষয়ে কোনো মতামত সংগ্রহ করা যায়নি।


আরো সংবাদ



premium cement
পিছিয়েছে ডি মারিয়ার বাংলাদেশে আসার সময় ইরানে হামলা : ইস্ফাহান কেন টার্গেট? মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে

সকল