২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

  চৌগাছার পুড়াপাড়া বাজারে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি

-

প্রতি বছর কোটি টাকার রাজস্ব আয় হলেও বিন্দুমাত্র উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি পুড়াপাড়া বাজারে। রাস্তাগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে হাঁটু পানি জমে রাস্তায়। বাজারে কাঁদা আর দুর্গন্ধ যেন স্থায়ী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারের ভেতরের ড্রেনগুলো ময়লা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
চৌগাছা ও মহেশপুর দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী মান্দারবাড়ীয়া, যাদবপুর, সুখপুকুরিয়া, স্বরুপদহ ও নারায়ণপুর ইউনিয়ানের মানুষের ছাগল-গরু, কৃষিপণ্য ধান, পাট, তরিতরকারি কেনাবেচার জন্য এটি একমাত্র বাজার। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলায় বাজারটির রাস্তা ও ব্রিজ-কালভার্ড নষ্ট হয়ে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ।
জানা যায়, বাজার পরিচালনার জন্য নেই কোনো কমিটি। এমনকি ব্যবসায়ীদেরও নেই কোনো সমিতি বা কমিটি। ভারত সীমান্তের কোলঘেঁষে কাঠগড়া বাঁওড়ের তীরে অবস্থিত এ বাজারটি। বাজারে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে বাজারের মধ্যে পানি উঠে যায়। ময়লা পানি আর কাদার কারণে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলায় আবর্জনার স্তূপ পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। গণশৌচাগার না থাকায় যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ এবং নর্দমায় জমে থাকা কাদার জন্য বাজারে মশামাছির উপদ্রব ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্ধারিত কসাইখানা না থাকায় যত্রতত্র পশু জবাই ও পশুর উচ্ছিষ্ট ফেলায় পরিবেশ দিন দিন মারাত্মক দূষিত হয়ে উঠছে।
যানবাহনের জন্য কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় বাজারের ভেতর সব যানবাহন যত্রতত্র পার্কিং করায় চরম যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে গরু-ছাগলের হাট ও সাধারণ হাট ডেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা। এখানে সপ্তাহে দু’দিন রোববার ও বুধবার পশুর হাট ও সাধারণ হাট বসে। এ বাজারে রয়েছে সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক অসংখ্য এনজিও ও বীমার অফিস। এ বাজারের পাশে অবস্থিত কাঠগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুড়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, মান্দার বাড়িয়া দাখিল মাদরাসা, মান্দারবাড়িয়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডা: সাইফুল ইসলাম কলেজ ও শ্যামনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিকল্প রাস্তা না থাকায় বাজারের ভেতরের সড়কে চলাচল করে থাকে।
কথা হয় হাট করতে আসা বেশ কয়েকজনের সাথে তারা জানান, যানবাহনের জন্য কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় বাজারের ভেতর সব যানবাহন যত্রতত্র পার্কিং করায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
পাকারাস্তার ওপর কাদাপানি জমে থাকায় ছাত্রছাত্রী ও জনসাধারণের যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থী ও হাটুরেরা কাদাপানি গায়ে মেখে বাড়িতে ফেরে। ব্যবসায়ী আব্বাস আলী জানান, এ বাজার থেকে বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি বাজারটির সরকারি জমি দখল করেই চলেছে অসাধু ব্যক্তিরা। কিন্তু রাস্তাঘাটগুলোর কোনো উন্নয়ন নেই। বাজারে এ সব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে এক দিকে সাধারণ মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ আর অন্য দিকে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব।

 


আরো সংবাদ



premium cement