২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বড়মাছুয়া-রায়েন্দা খেয়াঘাটে জিম্মি করে অতিরিক্ত টোল আদায়

-

উপকূলীয় মঠবাড়িয়ার বড়মাছুয়া ও শরণখোলার রায়েন্দা সীমানায় বলেশ্বর নদীর আন্তঃবিভাগীয় খেয়াঘাটে নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে ইজাদারের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট ইজারাদার অবৈধভাবে ঘাটটি সাব-লিজ দিয়ে ১০-১২ গুণ অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। অতিরিক্ত টাকা দিতে ব্যর্থ হলে সাব-লিজ গ্রহণকারী ও তাদের লোকজন যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখায় এবং নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়। এমনকি যাত্রীদের হাতে থাকা ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের পণ্য বা মালামাল পারাপারের জন্য ৫০-৭০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধভাবে খেয়াঘাট ইজারাদার সাব-লিজ দিয়ে সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করায় এই ঘাট দিয়ে চলাচলকারী দুই জেলার যাত্রী সাধারণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে বাংলা ১৪২৬ সালের জন্য বড়মাছুয়া আন্তঃবিভাগীয় খেয়া ঘাটটি ২৪ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৮ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে উপজেলার বড়মাছুয়া ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাইয়ুম হাওলাদার ইজারা বন্দোবস্ত পান। ঘাট ইজারা নিয়েই তিনি ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে ও স্থানীয় এক প্রভাশালী নেতার নির্দেশে বিধিবহির্ভূতভাবে স্থানীয় একটি চক্রের কাছে অবৈধভাবে ঘাটটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সাব-লিজ দেন।
সম্প্রতি বড়মাছুয়া খেয়া ঘাটে সরেজমিন গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, খেয়া ঘাট পুনঃইজারা বা সাব-লিজ দেয়ার নিয়ম না থাকলেও পিরোজপুর ও বাগেরহাটের জনগুরুত্বপূর্ণ বড়মাছুয়া খেয়াঘাটটি স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ফায়ারম্যান সামসুল হক মৃধা, শরণখোলার তৌহিদুল ইসলাম (ডিলার), আবদুল কাদের ও বড়মাছুয়ার মৎস্য আড়ৎদার ফারুক তালুকদার ইজারাদার কাইয়ুমের কাছ থেকে ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সাব-লিজ নেন। ঘাটে যাত্রী সাধারণ, বিভিন্ন যানবাহন ও মালামাল পারাপারে সরকার অনুমোদিত টোল রেট চার্ট সহজে দর্শনীয় জায়গায় নোটিশ বোর্ড আকারে টানানোর বিধান থাকলেও দুই পারের কোথাও রেট চার্ট টাঙ্গানো হয়নি। এ ছাড়াও যাত্রী পারাপারের জন্য ইজারাদারের নিজস্ব ঘাট থাকার বিধান থাকলেও যাত্রীদের চলাচলের ঘাট না থাকায় বিআইডব্লিউটির সরকারি টার্মিনাল ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে যাত্রীদের।
এ ব্যাপারে সাব-লিজ গ্রহণকারী ফায়ারম্যান শামসুল হক সাব-লিজ নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ইজারাদারের সাথে শেয়ার আছি বলে দাবি করেন।
ঘাট ইজারাদার কাইয়ুম হাওলাদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিগগিরই দুই পাড়ে যাত্রী ও পণ্য পারাপারের রেট চার্ট টানানো হবে।
মঠবাড়িয়ার নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘাটের ইজারাদারদের বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত সরকার নির্ধারিত টোল রেট চার্ট টানানো হবে, যাতে পরাপারকারী যাত্রীদের অতিরিক্ত টোল দিতে না হয়।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ঢাকায় ট্রেনিংয়ে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা না গেলেও ওই পদে দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও আন্তঃবিভাগীয় ফেরি ইজারা কমিটির আহ্বায়ক সুবাস চন্দ্র সাহা জানান, সরকার অনুমোদিত টোল রেট চার্ট না টানিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায় দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement