২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আমতলীতে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যায় শিশু শিক্ষার্থীরা

-

বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের ২০ নম্বর পূর্ব কেওয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে হয়। এতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে কোমলমতি শিশুরা নিশ্চিন্তে যাওয়া-আসা করতে পারত।
সরেজমিন দেখা গেছে, আমতলী উপজেলার পূর্ব কেওয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কুকুয়া ও আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নে সংযোগস্থলে খাকদোন নদীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত। বিদ্যালয়টি ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য নেই কোনো ভালো রাস্তা। বিদ্যালয়ে নেই কোনো খেলার মাঠ। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপাড়া করে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পাশের আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের। ওই গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে অভিভাবকেরা পাশের কুকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব কেওয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করান। বিদ্যালয়ে যেতে এ গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খাকদোন নদীর ওপর স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকো পার হতে হয়। রাস্তাঘাট ভালো না থাকায় বর্ষা মওসুম এলেই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। যারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় তাদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাককেরা থাকেন দুশ্চিন্তায়। সাঁকো পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয় অনেক শিক্ষার্থী। তাড়াহুড়া করে সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেকে পা পিছলে নদীতে পড়ে যায়। অনেক সময় তাদের হাতে থাকা বই-খাতও নদীতে পড়ে যায়।
বিদ্যালয়সংলগ্ন স্টেশনারি ও খাবারের দোকানের মালিক ফজলুল করিম বলেন, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের ছোট ছোট শিশুরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা একান্ত প্রয়োজন।
বরগুনা জেলা পরিষদের সদস্য নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, এই গ্রামের পাশেই আমার জন্মস্থান। বিষয়টি আমি জেলা পরিষদের সভায় বলেছি। আশাকরি কোমলমতি শিক্ষার্থীর কথা ভেবে এখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য কিছু একটা করতে পারব।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাগর চন্দ্র, ফাতেমা, জয়া রানী, নিরব, কবিতা, স্বর্ণা ও শুলতা দাস বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে যেতে আসতে বাঁশের সাঁকো পার হতে হয়। বর্ষার সময় সাঁকো পার হতে অনেক সমস্যা হয়। অনেকে সাঁকো থেকে পা পিছলে নদীতে পড়ে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম বলেন, বিদ্যালয়টি দু’টি ইউনিয়নের সীমান্তে অবস্থিত। উন্নয়নের দিক থেকে এলাকাটি বেশ অবহেলিত। এখানে চলাচলের জন্য নেই কোনো ভালো রাস্তা। প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। তাড়াহুড়া করে সাঁকো পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত তারা ছোট বড় দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। এ নদীতে একটি সেতু এবং প্রধান সড়ক থেকে বিদ্যালয়ের সাথে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানিয়ে এলেও তারা শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন।
আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এখানে একটি সেতু নির্মাণের চেষ্টা করব।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বলেন, আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সাথে আলোচনা করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান বলেন, বিষয়টি অনেক আগ থেকেই আমি জানি। বিদ্যালয়ের সাথে সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন। তিনি অচিরেই এ বিষয়ে আশু পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল