২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কোটি টাকা ব্যয় হলেও বরিশালে সড়ক সংস্কার হয়নি

গৌরনদী উপজেলা ও পৌর সদরের প্রধান সড়কের বর্তমান অবস্থা :নয়া দিগন্ত -

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলা এবং পৌর সদরের প্রধান সড়ক গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরিকল বাজার পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭৫০ মিটার সড়কটি গত ছয় মাস ধরে মারণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কটি সংস্কারের জন্য এলজিইডি বিভাগ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় করার পরেও সড়কটি খানাখন্দ ও জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির ওপর নির্ভরশীল গৌরনদী উপজেলা পরিষদ, পৌর ভবন, মডেল থানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ব্যাংক ভবন, শপিং মলসহ উপজেলা সদরে আসা মন্ত্রী ও এমপিসহ সব ধরনের ভিআইপিদের যাতায়াত। অথচ সড়কটি বেহাল অবস্থায় পরে থাকলেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। সম্পূর্ণ সড়কটিতে ছোট-বড় কয়েক হাজার গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলে সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পরেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো সড়কটি জলাশয়ে পরিণত হয়। সড়কে অহরহ দুর্ঘটনাসহ ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক যান চলাচল।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৯৯৫-১৯৯৬ অর্থবছরে ওই সড়কটি পূর্ণ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেন। পরে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্পেটিং সড়ক নির্মাণ করা হয়। ২০০৫ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কটি এলজিইডিকে হস্তান্তর করেন। সেই থেকে সড়কটির রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় দায়ভার এলজিইডির।
গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১০-১১ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৭০ হাজার। ২০১১-১২ অর্থবছরে ১৪ লাখ। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে এক কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৪ লাখ টাকাসহ সড়কটি সংস্কারে এক কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হলেও সড়কের কোনো পরিবর্তনই হয়নি।
সূত্র মতে, গৌরনদী উপজেলার সব সরকারি দফতরে সেবা নিতে আসা জণসাধারণ ও গৌরনদী উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে মালামাল পরিবহনের একমাত্র সড়ক এটি। এ ছাড়া ঢাকা-গৌরনদী, নারায়ণগঞ্জ-গৌরনদী লঞ্চে ব্যবসায়ীদের আমদানিকৃত পণ্য টার্মিনালে নামানোর পরে একমাত্র এ সড়কটি ব্যবহার করেই বিভিন্ন হাটবাজারে আনা নেয়া হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কটির বেহাল চিত্র। কয়েকদিনের বর্ষণে পুরো সড়কে সৃষ্টি হয়েছে হাজারও ছোট-বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেই গর্তগুলো ডুবে যাওয়ায় সড়কে চলাচলকারী যানবাহন চালকসহ মিনিট্রাক, অটো টেম্পো, নসিমন, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন চালকেরা গর্তগুলো দেখতে না পাওয়ায় দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন সিসিডিবি, ক্রাথলিকচার্জ, কারিতাস, উপজেলা পরিষদ গেট, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে, ভাই ভাই শপিং মল, থানার মোড়, তাকওয়া ভবন, সার্কেল অফিস মোড়, তুলাতলা, টিখাসার, পিঙ্গলাকাঠী, কালনা, কুতুবপুর, কাণ্ডপাশাসহ বেশির ভাগ এলাকার অবস্থা সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ। এসব স্থানগুলোর সড়কে ছোট-বড় হাজারো গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও গর্তগুলো জলাশয়ে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে সড়কটি বেহাল দশায় পরে থাকলেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। তারা আরো বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে উন্নয়নে দেশ ভাসলেও গৌরনদীর এ সড়কটি পানিতে ভাসছে।
গৌরনদী এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মো: সাইদুর রহমানও জনসাধারণের চরম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কটি সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী মো: অহিদুর রহমান আগের মতো দায়সারা অফিসিয়াল বক্তব্য দিয়ে বলেন, সড়কটি বাস্তবায়নে দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জনদুর্ভোগ দূর করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement