২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ফরিদপুর পৌরসভায় পানি না মিললেও বাড়ল বিল : ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা

-

ফরিদপুর পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকার বাসিন্দা সরবরাহকৃত পানি পান না বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। এখানকার জনগণকে পানির সংস্থানে নিদারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন পৌর কর্তৃপক্ষ পানির সঙ্কট নিরসণে কোনো উপায় বের করতে না পারলেও নাগরিকদের ওপর পাল্টা পানির বিল বাড়িয়ে মড়ার উপর যেনো খাড়ার ঘাঁ বসাচ্ছে। ফরিদপুর পৌরসভার ২০১৯-২০ সালের বাজেট ঘোষণার আগেই পৌরসভার পানির বিল বাড়ানো হয়েছে শতকরা ৯৬ ভাগ পর্যন্ত। ফলে জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তবে মেয়র দাবি করেছেন, আর্থিক ঘাটতি পূরণে পানির দাম বাড়ানোর কোনো বিকল্প ছিল না।
ফরিদপুর পৌরসভা ইতোমধ্যে শহরে মাইকিং করে পানির বিল বৃদ্ধির এ ঘোষণা জানিয়ে দিয়েছে। গত মে মাস থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। ফরিদপুর পৌরসভা বর্তমানে প্রয়োজনের চেয়ে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ পানি সরবরাহ করতে পারে। পানির মাসিক বিল পরিশোধ করার পরও কাক্সিক্ষত পানি না পাওয়ায় গ্রাহকদের বাড়ির আশপাশের নলকূপ, গভীর নলকূপ, পুকুর, লেক ও নদীর পানির ওপর নির্ভর করতে হয়। আর খাবার পানি হিসেবে এই পানি সরাসরি ব্যবহার করাটাও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাতে পানিবাহিত অনেক রোগের জীবাণু ভাসমান থাকে।
জানা গেছে, ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বর্তমানে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত মডেল পৌরসভার পানির গ্রাহক রয়েছে ৮ হাজার ৫৮৫ জন। গ্রাহকদের পরিপূর্ণ পানির চাহিদা মেটাতে দৈনিক প্রয়োজন এক কোটি লিটার পানি। সেখানে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ পানি সরবরাহ করা হয়। পাইপের মাপ অনুযায়ী ছয় ধরনের লাইনের মাধ্যমে পৌরবাসীকে বর্তমানে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এর প্রতিটিরই বিলের হার বাড়ানো হয়েছে। এ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৯৫ দশমিক ৬৫ ভাগ থেকে সর্বনি¤œ ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ পর্যন্ত।
আধা ইঞ্চি পাইপে সরবরাহ পানি লাইনের জন্য গ্রাহকদের প্রতি মাসে বিল দিতে হতো ১৫০ টাকা। শুরুতে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৫০ টাকা। নতুন করে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৭৫ টাকা। আর কোয়ার্টার ইঞ্চির ২২৫ টাকার পানির বিল করা হয়েছে ৩৭৫ টাকা। একইভাবে এক ইঞ্চির মাসিক বিল এক হাজার ১৫০ টাকা থেকে দুই হাজার ২৫০ টাকা, দেড় ইঞ্চির বিল ছিল চার হাজার ৫০০ টাকা থেকে সাত হাজার টাকা, দুই ইঞ্চি পাইপের বিল সাত হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা এবং তিন ইঞ্চি পাইপের বিল ২২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে বাসাবাড়িতে সংযোগ নেয়া আধা ইঞ্চি, কোয়ার্টার ইঞ্চি ও এক ইঞ্চির পাইপ ব্যবহারকারীদের পানির বিলই বাড়ানো হয়েছে বেশি। এ তিনটি ক্যাটাগরিতে বিল বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৮৩ দশমিক ৩৩, ৬৬ দশমিক ৬৬ এবং ৯৫ দশমিক ৬৫ ভাগ।
আকস্মিক এবং নিজস্ব বাজেট ঘোষণার আগে পৌরসভার পানির বিল বৃদ্ধির ঘটনায় জনমনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, পানি সরবরাহ করতে না পারলেও পানির বিল বাড়ানো হয়েছে। সেবার নামে এটা এক ধরনের জোরজবরদস্তি। শহরের ঝিলটুলী মহল্লার বাসিন্দা আলী আশরাফ বলেন, পানির বিল বৃদ্ধিসংক্রান্ত পৌরসভার এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, অমানবিক এবং খামখেয়ালিপনার নামান্তর। পৌরসভা ভোক্তার কোনো কথা শোনে না, কোনো আপিলই গ্রহণ করে না তারা।
শহরের ব্রাহ্ম সমাজ সড়ক এলাকার বাসিন্দা আহমেদ ফিরোজ বলেন, পৌরসভার উচিত মিটার সিস্টেম করা। সরবরাহকৃত পানির মান নি¤œমানের ও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
ফরিদপুর পৌরসভার পানি সরবরাহের দায়িত্বরত প্রকৌশলী মোস্তফা ইকবাল বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে পৌরসভার টাউন লেভেল কো-অর্ডিন্যাশন কমিটির (টিএলসিসি) মাসিক সভায় পানি বৃদ্ধির এ প্রস্তাব পাস হয়।
ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র শেখ মাহাতাব আলী মেথু বলেন, প্রতি মাসে ফরিদপুর পৌরসভাকে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা গচ্চা দিতে হয়। এ গচ্চা কমিয়ে আনার জন্য পৌরবাসীর পানির বিল বাড়ানো ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় ছিল না। তিনি বলেন, টাকার এ ঘাটতি পূরণ করা না গেলে পানি সরবরাহ নির্বিঘœ করাও সম্ভব নয়। এ জন্যই পানির বিল বাড়াতে হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শাস্তি কমিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনে উদ্বেগ টিআইবির যখন দলকে আর সহযোগিতা করতে পারবো না তখন অবসরে যাব : মেসি ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল কাহনেম্যান আর নেই বিএনপি নেতাকর্মীদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ খণ্ডালেন ওবায়দুল কাদের আটকের পর নাশকতা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো ইউপি চেয়ারম্যানকে বদর যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন পণবন্দী জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝালকাঠিতে নিখোঁজের ২ দিন পর নদীতে মিলল ভ্যানচালকের লাশ বাল্টিমোর সেতু ভেঙে নদীতে পড়া ট্রাক থেকে ২ জনের লাশ উদ্ধার যুক্তরাষ্ট্রে ছুরিকাঘাতে নিহত ৪

সকল