২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বগুড়ায় ধানে লোকসান বিঘাতে আড়াই হাজার টাকা

সরকারি দাম পাওয়া নিয়ে কৃষকদের সংশয়

-

বগুড়ায় চলতি বোরো মওসুমে ধান চাষে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ধান চাষ করে প্রায় আড়াই হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এর ফলে আগামীতে ধান চাষে কৃষক আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পকুল্যা ইউনিয়নের হুয়াকুয়া গ্রামের কৃষক আবু মুছা জানান, এ বছর আমি এক বিঘা জমিতে বোরো দান চাষ করেছিলাম। এতে খরচ হয় জমি চাষে ৮০০ টাকা, চারা বীজ ৮০০, চারা গাছ রোপণ এক হাজার, সার ও কীটনাশক দুই হাজার, সেচ খরচ দুই হাজার, নিড়ানি বাবদ এক হাজার, কাটা মাড়াই বাবদ তিন হাজার টাকাসহ মোট ১০ হাজার ৬০০ টাকা খরচ হয়েছে। ওই জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ১৬ মণ। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা। সে হিসাবে ধান বিক্রি করে আয় হচ্ছে আট হাজার টাকা। এতে ধান চাষে লোকসান হচ্ছে বিঘায় দুই হাজার ৬০০ টাকা।
বগুড়া জেলায় চালকল মালিকদের নিকট থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে ৭৮ হাজার ৩৫৪ মেট্রিক চাল ও কৃষকদের নিকট থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে পাঁচ হাজার ৫৮৬ মেট্রিক টন ধান কেনা শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ। খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার এমপি গত সপ্তাহে বগুড়া সদর খাদ্য গুদামে সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করে অনিয়মের ব্যাপারে কর্মকর্তা কর্মচারী ও মিল মালিকদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তবে কৃষকরা সরকারের এ সুফল কতটুকু পাবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বগুড়া জেলা কৃষি অফিস জানায়, জেলার ১২ উপজেলায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার এক লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। ফলন হবে প্রায় সাত লাখ মেট্রিক টন। জেলায় চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৪.১ মেট্রিক টন। আর ধান আকারে ধরা হয়েছে ৬.৫ মেট্রিক টনের কিছু বেশি। তবে কিছু কিছু এলাকায় চাষিরা উন্নতজাত বা আগামজাতের ধান চাষ করেছেন। সেসব স্থানে বোরোর ফলনও বৃদ্ধি পাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ।
সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মাসুদ আহমেদ জানান, এবার ধানের উৎপাদন বেশ ভালো। তিনি আরো জানান, কৃষক খুব সহজেই হাতের নাগালের কাছে উন্নত বীজ ও রাসায়নিক সার পেয়েছে। কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছে।
গাবতলী উপজেলা কৃষি সম্পসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান জানান, সরকার এবার প্রতি মণ ধান এক হাজার ৪০ টাকা দরে মূল্য ধার্য করেছে। এবার ধানের প্রচুর ফলন হবে।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার রণবাঘা এলাকার চাষি আহম্মেদ আলী জানান, রোদ মাথায় নিয়ে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ বছর শ্রমিকরা প্রতি বিঘা ধান কাটছে এক হাজার ৯০০ টাকা বিঘা। এর সাথে খাবারও দিতে হচ্ছে। তিনি জানান, এ বছর উপজেলায় বেশির ভাগ জমিতে ভালো ধান হয়েছে। ধানের শীষ বেশ বড় দেখা গেছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নিখিলচন্দ্র বিশ^াস জানান, বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবারও বোরোর ভালো ফলন পাওয়া যাবে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূল থাকায় জেলায় আশা করা হচ্ছে প্রায় সাত লাখ মেট্রিক টন বোরোর চাল পাওয়া যাবে এ বছর।

 


আরো সংবাদ



premium cement