২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে না রাজবাড়ীর চার উপজেলায়

বঞ্চিত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ
-

রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চারটিতে টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। শুধুমাত্র বালিয়াকান্দি উপজেলায় এসব পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে তুলনামূলক কম দামে পণ্য কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
টিসিবি খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ২৩ এপ্রিল থেকে এসব পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। চলবে ৩ জুন পর্যন্ত। রাজবাড়ীতে টিসিবির ডিলার ২৩ জন। তাদের মধ্যে সদর উপজেলায় দুইজন, বালিয়াকান্দি উপজেলায় পাঁচজন, কালুখালীতে তিনজন, বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দ উপজেলায় ১১ জন। ডিলারদের প্রত্যেককে এক হাজার কেজি চিনি, এক হাজার লিটার সয়াবিন তেল, ৫০০ কেজি ছোলা ও ৪০০ কেজি মসুরের ডাল দেয়া হয়েছে। চিনি কেজি প্রতি দাম ৪৭ টাকা, তেল ৮৫ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা এবং মসুরের ডাল প্রতি কেজি ৪৪ টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাজারের লাল চিনির দাম ৫৫ টাকা, সয়াবিন তেল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, ছোলা ৬৫ টাকা এবং মসুরের ডাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণত সীমিত ও নি¤œ আয়ের মানুষ টিসিবির প্রধান ক্রেতা।
বালিয়াকান্দি উপজেলার টিসিবি পণ্য বিক্রেতা মনিরুজ্জামান বলেন, আমি পাঁচ-সাত বছর ধরে এই পণ্য বিক্রি করি। মালের গুণগত অবস্থা ভালো। তুলনামূলকভাবে কম দাম হওয়ায় ভোক্তাদের ভালো উপকার হয়। আর আমরাও সহজেই প্যাকেজ করে বিক্রি করতে পারি। তবে এই ১২ রোজার আগের দিন পণ্য তুলতে পেরেছি। সাধারণত ভোক্তারা রোজার কয়েক দিন আগেই কেনাকাটা সেরে ফেলে। এতে করে বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে কম হচ্ছে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার ডিলার দুইজন হলো মেসার্স আজগর অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং মেসার্স সাহানা বেগম। জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আজগর অ্যান্ড বাদার্সদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অন্য দিকে মেসার্স সাহানা বেগমের স্বত্বাধিকারী জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্বা এস এম নওয়াব আলী বলেন, আমি পাঁচ-ছয় বছর আগে থেকে মাল তোলা বন্ধ করে দিয়েছি। প্রথম বছরে একবার মাল দেয়। সেখানে ক্যাশ টাকা নিয়ে যেতে হয় যা আমার পক্ষে ঝুঁঁকিপূর্ণ। আবার মাল অর্ধেক খারাপ থাকে। এতে ক্রেতাদের নানা ধরনের কথা শুনতে হয়। ক্রেতারা ধরে নেয় যে, ভালো মাল সরিয়ে রাখা হয়েছে। এ কারণে জেলা প্রশাসককে জানিয়ে মামলা তোলা বন্ধ করে দিয়েছি।
চন্দনীর বাসিন্দা কার্ত্তিক চন্দ্র দাস বলেন, সারা দেশেই টিসিবি পণ্য বিক্রি হয়। সরকার সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পণ্য কেনার একটি ভালো সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু রাজবাড়ীতে এসব পণ্য বিক্রি হতে দেখি না। এই পণ্য পেলে স্থানীয় সাধারণ মানুষের খুব উপকার হতো। বিশেষ করে উৎসবের সময় পণ্য দ্রব্যের দাম সাধারণত খুব বেড়ে যায়। যা অনেকের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকে না। প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে অনেকেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে শান্তি পেতো।
টিসিবি খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল মোর্শেদ বলেন, রাজবাড়ীতে আমাদের কোনো কার্যালয় নেই। রাজবাড়ীর পাঁচ-সাতজন ডিলারের নবায়নের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আমরাও যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছি। তবে যেসব ডিলার মাল তুলছেন না ঈদের পরে তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মো: শওকত আলী বলেন, যতদূর জানি শুধুমাত্র বালিয়াকান্দি উপজেলায় টিসিবি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ইউএনওকে মনিটরিং করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যাতে করে কোনো ধরনের অনিয়ম না হয়। আর জেলার অন্য উপজেলার বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement