ধনবাড়ীতে শ্রমিকের হাটে অনেকে ভাগ্য ফেরাতে আসেন
- মধুপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
- ১৬ মে ২০১৯, ০০:০০
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ভোরে সূর্য ওঠার সাথে সাথে পৌরশহরের চৌরাস্তায় চোখে পড়ে শত শত মানুষের সমাগম। আর এ সমাগমই হলো ‘শ্রমিক বেচাকেনার হাট’। এ হাটে একশ্রেণীর মানুষ আসেন ‘বিক্রি’ হতে। আরেক শ্রেণীর মানুষ আসেন ‘শ্রম’ কিনতে। স্থানীয় ভাষায় এ হাটকে বলা হয় ‘কামলার হাট’। আবার অনেকে এদের কৃষিশ্রমিকও বলে থাকেন। ধনবাড়ীতে এখন চলছে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা। এর পরপরই কাটা শুরু হবে অন্যান্য জাতের বোরো ধান। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কৃষিশ্রমিকেরা ধনবাড়ী পৌরশহরের চৌরাস্তা বাজারে এসে ভিড় জমায়।
ধনবাড়ী চৌরাস্তায় শ্রমিক বেচাকেনার হাট ঘুরে দেখা যায়, রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর, নিলফামারী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর জেলাসহ বিভিন্ন জেলার গ্রামীণ এলাকা থেকে অভাবী লোকজন এসেছেন কাজের সন্ধানে। এ মওসুমে ধনবাড়ীতে কৃষিশ্রমিকের চাহিদা বেশি। সকাল সাড়ে ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত চলে এ হাট। কেউ বিক্রি হন একদিনের, জন্য কেউবা পাঁচ দিন, আবার কেউ সাত দিনের জন্য। দূর থেকে যারা এ হাটে আসেন তারা বেশি দিনের জন্য এবং স্থানীয় শ্রমিকেরা প্রতিদিনের জন্য বিক্রি হন। এ অঞ্চলে বোরো ধান কাটা শুরু হওয়ায় শ্রমিক বেচাকেনার হাট জমে উঠেছে। একজন শ্রমিক ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় প্রতিদিন শ্রম বিক্রি হচ্ছেন।
ধনবাড়ী পৌর শহরের চৌরাস্তা বাজারে শ্রমিকের হাটে কথা হয় রংপুরের শহিদুল ইসলাম, লালমনির হাটের মো: আজিজুর ইসলাম, জামালপুরের মোহাম্মদ আলী, পাবনার ইয়াকুব আলী, সিরাজগঞ্জের মুসলিম উদ্দিনের সাথে। তারা জানান, আমাদের এলাকায় এখন কাজ নেই। প্রতি পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মাত্রই এ অঞ্চলে আসেন ধান কাটার জন্য। এ সময় শ্রমিকের দাম বেশি থাকে। এক মাস কাজ করলে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারেন তারা।
কুড়িগ্রাম থেকে আসা সাজিদুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার বাড়ি ভুরঙ্গামারীর উত্তরতিলাই। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচ। তার উপার্জনেই চলে সংসার। এসএসসির রেজাল্ট ভালো হলে সে ভর্তি হবে কলেজে। ভর্তি হতেও লাগবে অনেক টাকা। একদিকে পরিবারের খরচ, আরেক দিকে তার ভর্তি। এটাই তার দুশ্চিন্তার কারণ। আর এ কারণেই এখানে আসা।
ধনবাড়ী পৌর শহরের চৌরাস্তা বাজারে শ্রমিকের হাটে শ্রম কিনতে আসা মো: আজাহারুল ইসলাম জানান, তিনি এ বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। জমি চাষ, ধানের চারা, সার, কীটনাশক, সেচ, পরিচর্যা এবং শ্রমিকের খরচ দিয়ে চাষাবাদ এখন আর লাভজনক হয় না। প্রতিদিন একজন শ্রমিককে মজুরি বাবদ দিতে হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। পাশাপাশি তিন বেলা খাবার দিতে খরচ হয় ১৫০ টাকা।
ধনবাড়ী থানার ওসি মজিবর রহসান জানান, দূর-দূরান্ত থেকে আসা কৃষিশ্রমিকেরা সারাদিন বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে রাতে টাকা নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুমান। তাদের নিরাপত্তার জন্য চলতি এক মাস পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা