২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সৈয়দপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান

সৈয়দপুর মিস্ত্রিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। ইনসেটে পলেস্তরা খসেপড়া একটি অংশ : নয়া দিগন্ত -

নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই ক্লাস করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষকেরাও বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ ওই ভবনেই ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, সৈয়দপুর পৌর এলাকার ১৫ নং ওয়ার্ডের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিস্ত্রিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র দ্বিতল ভবনটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ। ভবনের ছাদে বড় বড় কয়েকটি ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ক্লাসরুমে। এ সময় পাঠদান বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের পাশের একতলা ভবনে অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সাথে বসতে হয়। দেয়ালের ও ছাদের বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়েছে। আবার কোথাও কোথাও পলেস্তারা আলগা হয়ে ঝুলে রয়েছে। যেকোনো সময় সেগুলোও খসে পড়ে শিক্ষার্থীরা আহত হতে পারে। ভবনের মূল বীমগুলোর পলেস্তারা খসে পড়ে রড ও কংক্রিট বেরিয়ে পড়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই নিয়মিত ক্লাস চলছে ওই ভবনে। এর ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অভিভাবকেরাও সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটান।
ইতঃপূর্বেও পলেস্তারা খসে পড়ে কয়েক বার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে শিক্ষার্থীরা। ভবনটি এতটাই নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে, সামান্য ঝড়ো হাওয়া হলেই দুলে উঠে। একটু তীব্র মাত্রার ভূমিকম্প হলেই ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ১৯৮৭ সালে নির্মিত হয় এই দ্বিতল ভবনটি। তারপর মাঝে একবার ঠিকাদারের মাধ্যমে সংস্কার করা হলেও তা ছিল অত্যন্ত নি¤œমানের। এখন ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাই এটি পুনর্নির্মাণ করা খুবই জরুরি। শিক্ষা বিভাগ ভবনটিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করলেও বিকল্পব্যবস্থা বা নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় জীবনহানির আশঙ্কার মধ্যেই ক্লাস চলছে ওই ভবনে।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী জানায়, ক্লাস করতে ভয় লাগে। তারপরও বাধ্য হয়েই এখানে ক্লাস করতে হচ্ছে।
কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের ওই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষকেরা ওই ভবনেই ক্লাস নিচ্ছেন। সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। বিশেষ করে ঝড়-বৃষ্টির দিনে প্রতি মুহূর্ত আশঙ্কায় কাটে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা হালিমা খাতুন বলেন, ভবনটিতে ক্লাস করা নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বাধ্য হয়েই শিশু শিক্ষার্থীদের সেখানে ক্লাস করাতে হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও দীর্ঘদিনেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান মণ্ডল বলেন, বিদ্যালয় ভবনটি আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তা চিহ্নিত করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই এ বিষয়ে শিক্ষা বিভাগকে জানানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement