বখাটের অত্যাচারে অতিষ্ঠ স্কুলছাত্রী সানজিদার আত্মহত্যা
- বাগেরহাট আদালতে মামলা
- ২০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার চরশৈলদাহ গ্রামের নবম শ্রেণীর ছাত্রী সানজিদা আক্তার মীম ওরফে তিথি (১৪) বখাটে দ্বারা উত্ত্যক্ত হওয়ায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। চিতলমারীর হিজলা ইউনিয়নের চরশৈলদাহ গ্রামে তার দাদাবাড়িতে। তার বাবা ইউনুস আলী শেখ ঢাকায় চাকরি করেন। সানজিদা আক্তার মীম দাদা মোখলেছুর রহমানের (৮৫) কাছে থেকে লেখাপড়া করত। এর আগে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার বরুইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত। প্রতি ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করত মীম।
গত এক বছর ধরে নাজিরপুরের চরমাটিভাঙ্গা গ্রামের ওমর শেখের ছেলে বাধন তার বন্ধুদের নিয়ে মীমের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বখাটেদের অত্যাচারে ওই স্কুলে যাতায়াত অসম্ভব হয়ে পড়লে তার মা রমিচা বেগম বখাটে বাধন শেখের অভিভাবকদের বিষয়টি অবহিত করেও কোনো সমাধান না পেয়ে স্কুল শিক্ষকদেরও অবহিত করেছিলেন। এতে বখাটে বাধন শেখ ক্ষিপ্ত হয়ে আরো বেশি উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এমতাবস্থায় মীমের পরিবার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মীমের দাদাবাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার হিজলা ইউনিয়নের পাঙ্গাসিয়া মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেয়। মীমকে পাঙ্গাসিয়া মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করার পরে বখাটে বাধন ও তার সহযোগীরা আরো বেপরোয়া হয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। গত ৪ এপ্রিল মীম স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব পরিচিত খাদিজা আক্তার (১৯) বাবা তোফাজ্জেল হোসেন শিকদার, সাং-পূর্ববানিয়ারী, থানা নাজিরপুর, মীমকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে একটি অটোরিকশায় উঠায়, অটোরিকশা কিছুদূর যাওয়ার পর খাদিজা পথে তার বন্ধু বখাটে বাধনসহ অন্যন্য বন্ধুদের অটোরিকশায় উঠায়। সেখানে বাধন ও তার বন্ধুরা মীমের সাথে অশোভন আচরণ করতে থাকে। একপর্যায়ে মীমের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন বখাটেদের বাধা দিয়ে আটকে রাখে। বিষয়টি এলাকায় রটে যায়। ফলে সমাজ, লোকলজ্জা এবং ভবিষ্যতে আবারো বখাটেদের আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় গত ৫ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৯টায় দাদার বাড়িতে বসতঘরের আড়ার সাথে গলায় ওরনা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। যেহেতু স্কুল ও জেলা পরিবর্তন করেও ওই বখাটে বাধন শেখের উত্ত্যক্ততা থেকে রেহাই পায়নি, তাই সে আত্মহত্যার মাধ্যমে উত্ত্যক্ত জীবন থেকে রেহাই নিয়েছে।
রোববার মুক্তবাংলা চারিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলক চন্দ্রমণ্ডল জানান, এই হত্যার প্রতিবাদ জানাই। এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি। অগত্যা বাধ্য হয়ে মীমের বাবা ইউনুস আলি শেখ বাগেরহাট আদালতে মামলার আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চিতলমারী থানাকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। বিজ্ঞপ্তি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা