জামালগঞ্জে জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য আহরণ : বোরো জমিতে পানিসঙ্কট
ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষক- সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
- ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী চক্র মৎস্য আইনের নীতিমালা না মেনে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে বাসকা জালসুখা বিল সেচে মাছ ধরছে। ফলে হাওরের শত শত একর বোরো ফসল পানির অভাবে নষ্ট হচ্ছে। এসব কৃষি জমিতে পানি সেচ সঙ্কটের কারণে চলতি বোরো ধানের আবাদকৃত চারা নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে কৃষকদের মনে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের সামনের হাওরে বাসকা বিলে পাওয়ার পাম্প চালিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো: কামরুল ইসলাম গংরা বিলের তলা শুকিয়ে মাছ ধরছেন। খাস কালেকশনে জলমহালটি লিজ এনে ভাসমান অবস্থায় মৎস্য আহরণের কথা থাকলেও স্থানীয় কিছু লুটেরা চক্রকে সঙ্গী করে পেশিশক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে জলমহাল সেচ করছেন বলে জানান কৃষকরা। মৎস্য আইন অমান্য করে এই অঞ্চলের শত শত কৃষকের রোপণকৃত বোরো জমিতে সেচের ব্যবস্থা নষ্ট করে জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য আহরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
কৃষক হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তো কৃষক, আমরার কথা কেউ শুনে না। এই বিলটি শুকানোর কারণে আমরার জমিতে পানি দিতে পারতেছি না। ধানের চারা মইরা যাইতাছে, ধান অইব কি না আল্লাই জানে। কৃষক আমজদ আলী আক্ষেপ করে বলেন, বহু ঋণ করে ধানক্ষেত লাগাইছি, পানির কারণে ধানের চারা নষ্ট হইতাছে, ধান না হইলে ঋণ দিমু কেমনে, আমরা কি খাইয়া বাঁচমু, আল্লার কাছে বিচার দেওয়ন ছাড়া আমরার আর জায়গা নাই।’
জানা যায়, চলতি বছরের বাসকা বিলটি লিজ নেন জামালগঞ্জ উপজেলা সদর ইউনিয়নের সাবেক এই ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম। তিনি কয়েক দিন ধরে জলমহালে কয়েকটি পাওয়ার পাম্প দিয়ে নির্দ্বিধায় পানি সেচ করে বিলের তলা শুকিয়ে মৎস্য আহরণ করছেন। তিনি মেশিন দিয়ে বিলের পানি সেচে অন্যত্র ফেলে দিলেও পাশে কৃষকদের জমিতে পানি না দিয়ে হাওরের বাইরে ফেলে দিচ্ছেন। এ কারণে কৃষকের বোরো ফসল এবার পানিসঙ্কটের ধানের চারা শুকিয়ে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগীরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে জলমহাল সেচের বিষয়টি জানানোর পরও তিনি না দেখার ভান করে রয়েছেন বলে জানান কৃষকরা।
জামালগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্ত অমিত পণ্ডিতের মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়া য়ায়।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আল ইমরান জানান, কেউ বিলের তলা শুকিয়ে মৎস্য আহরণের চেষ্টা করলে একদিকে যেমন কৃষকদের সর্বনাশ হবে অন্যদিকে মৎস্য আইন অমান্যকারী হিসেবে তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা