২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সেচ প্রকল্পের বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা

মতলবে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার মেঘনা নদী থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন : নয়া দিগন্ত -

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার মেঘনা নদী থেকে দিন-রাত অবাধে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। অসংখ্য অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও ক্রয়-বিক্রয় চলাচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। এতে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে।
অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার নির্দেশ দেয়া হলেও তা কার্যক্রর হয়নি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, প্রস্তাবিত ইকোনমিক জোন ও প্রস্তাবিত হাইটেক পার্কসহ চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর ও ফসলি জমি।
এলাকাবাসী জানান, মতলব দক্ষিণ উপজেলার নদীতে এবং মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দী থেকে ষাটনল পর্যন্ত মেঘনা নদী থেকে একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবাধে বালু উত্তোলন করছে তারা। এ নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন। গত দেড় দশকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় মতলবে সাবেক জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান আজহার উদ্দিনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। বালু উত্তোলনকারীদের ধরতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্যকেও প্রাণ দিতে হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন আরো দু’জন। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আগামীতেও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা অভিযোগ, মতলব উত্তরের কাজী মিজানুর রহমান মিজান, মতিন কাজী, মোক্তার গাজী ও শামীম বেপারির গংরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা। তাদের তত্ত্বাবধানে ক্ষমতাধর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ম্যানেজ করে চলছে বালু উত্তোলন। তাদের ভয়ে অনেকে মুখ খুলে কিছু বলতে পারছে না।
সরেজমিন দেখা যায়, অবৈধভাবে প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টাই ৩০-৩৫টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর তা শত শত ভলগেড, কার্গো ও ট্রলার দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। যে চক্রটি বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে তাদের এ-সংক্রান্ত কোনো অনুমতি বা অনুমোদনও নেই। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার বালু। পেশিশক্তির বলে সিন্ডিকেটটি অবৈধভাবে বালু বিক্রি করে আসছে। এ জন্য বৃহত্তর মতলববাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ, তীব্র অসন্তোষ ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এরই আগে মাঝে মধ্যে নামকাওয়াস্তে কিছু অভিযান হলেও অবৈধ এ কাজ বন্ধ হয়নি।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করে আসছে। গত এক বছরে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
চাঁদপুর নদীবন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ এসেছে। আশা রাখছি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement