২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা

কর্মচারী সঙ্কট
-

খুলনার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না বলে রোগীরা অভিযোগ করেছেন। ডাক্তার ও নার্সদের অনীহার কারণে এক দিকে যেমন সেবা পাচ্ছেন না, অন্য দিকে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রোগীরা অস্বস্তি বোধ করছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশির ভাগ রোগী এমন অভিযোগ করলেও কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, আগের চেয়ে সেবার মান এখন অনেক ভালো। তবে একটি সংস্থার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিচ্ছন্ন কর্মীর সঙ্কট রয়েছে। ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলা সদরের ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজের সামনে অবস্থিত ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালটি উপজেলার তিন লাখ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার একমাত্র বৃহৎ প্রতিষ্ঠান। একসময় হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন এলাকাবাসী। জনবল সঙ্কটসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছর হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি, ডাক্তার ও নার্সসহ বিভিন্ন বিভাগে জনবল বৃদ্ধি হলেও সেবার মান বাড়েনি বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ।
৫০ শয্যার হাসপাতালে বর্তমানে ২১ জন ডাক্তারের স্থলে রয়েছেন ১০ জন। দু’টি ফার্মাসিস্ট, তিনটি এমপি ল্যাব, একটি রেডিওগ্রাফার, তিনটি ওয়ার্ডবয় ও দু’টি আয়া পদ দীর্ঘ দিন শূন্য রয়েছে। এমএলএসএস চারটি পদের বিপরীতে রয়েছেন দু’জন। দু’জন প্রহরীর স্থলে রয়েছেন একজন। পাঁচজন সুইপারের বিপরীতে একজন সুইপার কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে নার্স ও ডাক্তার বৃদ্ধি পেলেও সেবার মান বাড়েনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী শামছুল হুদা খোকন বলেন, হাসপাতালে এখন সেবা নেই বললেই চলে। ২৪ ঘণ্টায় ডাক্তার একবার রাউন্ডে এলেও দায়সারা দেখে চলে যান। নার্সদের প্রয়োজনের সময় ডেকেও পাওয়া যায় না। রহিমা বেগম জানান, হাসপাতাল এত বেশি অপরিচ্ছন্ন থাকে রোগীরা সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ময়লা-আবর্জনার পাশাপাশি রয়েছে বিড়ালের উপদ্রব। মাসুম বিল্লাহ জানান, বাথরুমে সব সময় নোংরা পরিবেশ থাকে। ফলে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। জানালা, দরজা ভালো না থাকায় শীতের সময় শীতল হাওয়া হাসপাতালের মধ্যেই চলে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশির ভাগ রোগী সেবার মান নিয়ে এ ধরনের অভিযোগ করেন। যদিও রোগীদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের অর্থপেডিক্স কনসালট্যান্ট ডা: নজরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে সেবার মান আগের চেয়ে অনেক ভালো। তবে কর্মচারীর যথেষ্ট সঙ্কট রয়েছে। বিশেষ করে একটি সংস্থার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ওই প্রকল্পের সব কর্মচারী চলে গেছেন। ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা: সুজন কুমার সরকার জানান, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সেবার মান এখন অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে একসময় হাসপাতালে তেমন কোনো ডেলিভারি হতো না। অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার আসার পর প্রতি মাসে ৫০-৬০ জন গর্ভবতী মহিলার ডেলিভারি হচ্ছে। প্রতিদিন আমরা সাত-আটজন ডাক্তার নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছি। অনেক সময় আমরা ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করি। ডেলিভারির এ পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায়, হাসপাতালে এখন সেবার মান কেমন। সেবার মান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এ এস এম মারুফ হাসান জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement