২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিভিন্ন স্থানে দিনভর বৃষ্টি

পঞ্চগড়ে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ হিমেল হাওয়া ঘন কুয়াশা

পঞ্চগড়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে খেটে খাওয়া মানুষ : নয়া দিগন্ত -

পঞ্চগড়ে গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। বিরাজ করছে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। নীলফামারীতে দু’দিন ধরে কনকনে ঠাণ্ডা আর উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে মানুষজন। ঘূর্ণিঝড় ফেথাইয়ের প্রভাবে নাটোরের বড়াইগ্রামে হচ্ছে টানা বৃষ্টি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহের মানুষের জীবনযাত্রা। গফরগাঁওয়ে দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছে নির্বাচনী প্রচারে নামা কর্মী-সমর্থকেরা।
পঞ্চগড় সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ে গতকাল ছিল মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। বইছে হিমেল হাওয়া। শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জবুথবু অবস্থা এখানকার অধিবাসীদের। মেঘাচ্ছন্ন আকাশে বিকেল থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করছে। সন্ধ্যা থেকেই ঘন কুয়াশার সাদা চাদরে ঢেকে যাচ্ছে পরিবেশ। হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতায় ধনী-গরিব সবার মধ্যে কষ্টের ছাপ পড়েছে।
পঞ্চগড় থেকে হিমালয়ে দূরত্ব বেশি নয়। সে হিসেবে পঞ্চগড় হিমালয়ের পড়শি। তাই প্রতি বছর এখানে শীতের তীব্রতাও বেশি। এ বছর আগেভাগে শীত দেখা না দিলেও মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। ওই দিন কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। বিরাজ করছে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। বিকেলে হিমেল হাওয়ায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। সন্ধ্যার সাথে সাথে শৈত্যপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করে। রাতে কুয়াশার ফোঁটা বৃষ্টির মতো শব্দ করে ঘরের চালে পড়ছে। শীত থেকে রক্ষার জন্য অনেকে বিভিন্ন হাটবাজার থেকে সোয়েটার, জ্যাকেট, ট্রাউজার কিনছে। তবে দাম একটু বেশি। অনেকে লেপতোষক তৈরি করছে। দোকানের কারিগররা লেপতোষক তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শ্রমিকদের দম ফেলার সময় নেই। যারা লেপতোষক তৈরি করতে পারছে না। তারা পুরনো কাপড় দিয়ে সেলাই করা কাঁথা গায়ে দিচ্ছে। অনেকে রাতের বেলা শীত নিবারণের জন্য পাটের তৈরি চট গায়ে নিয়ে ঘুমাছে। অনেকে গাছের পাতা ও খড় দিয়ে আগুন তাপিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সামর্থ্যরে অভাবে গরিব অসহায় মানুষ শীতের পোশাক কিনতে পারছে না। শীতের কারণে জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
পঞ্চগড় জেলার আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার বেলা ৩টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা শীতে কাতর। প্রতি বছর এখানে শীত বেশি পড়ে থাকে। শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শৈত্যপ্রবাহ থেকে রক্ষার জন্য বিত্তবানরা যদি একটু সহযোগিতা করে তবে সহায়সম্বলহীন জনমানব শীত থেকে রক্ষা পাবে। পঞ্চগড় জেলায় এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র আসেনি। শীতার্ত মানুষ শীতবস্ত্রের জন্য বিত্তবানদের কাছে ধরনা দিচ্ছে।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, গতকাল ভোররাত থেকে দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে নীলফামারীতে। সেই সাথে দু’দিন ধরে কনকনে ঠাণ্ডা আর উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে উত্তরের এই জেলার মানুষজন। হিমালয়ের পাদদেশ ঘেঁষা নীলফামারী জেলায় এমনিতেই শীতের প্রকোপ বেশি। তার ওপর ভোররাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে শীতের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির সাথে কনকনে ঠাণ্ডা আর হিমেল হাওয়ায় লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহসীন রেজা রূপম জানান, জনদুর্ভোগ হলেও এই বৃষ্টিতে আলু, ভুট্টা, গম ও মরিচ ক্ষেতের দারুণ উপকার হয়েছে। এদিকে দু’দিন ধরে ঠাণ্ডায় জেলায় শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফেথাইয়ের প্রভাবে নাটোরের বড়াইগ্রামে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবারও এ অঞ্চলে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। টানা বর্ষণের প্রভাবে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বৃষ্টি ও ঠাণ্ডা বাতাসে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এতে শীতের মাত্রাও দ্বিগুণ বেড়েছে। আকস্মিক শীতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। এর আগে সোমবার দুপুর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে পৌষের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ফেথাইয়ের প্রভাবে শুরু হওয়া মাঝারি বর্ষণে নগরজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। টানা বর্ষণে নিচু এলাকা এরই মধ্যে কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে সকাল থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। সড়কে যানবাহন চলাচলেও বিঘœ ঘটছে।
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, বঙ্গপোসাগরে নি¤œচাপের প্রভাব পড়েছে ময়মনসিংহের সর্বত্রই। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা। সোমবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরো বেড়েছে। দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমিক ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। নগরীর সি কে ঘোষ রোডে ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বৃষ্টির কারণে সড়কটি কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। সামান্য বৃষ্টিতেই কাঁদা-পানি একাকার হয়ে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আর এই সুযোগে রিকশাসহ অন্যান্য পরিবহনের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে চালকেরা। দ্বিগুণ ভাড়ায় যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন।
গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। সেই সাথে বইছে মৃদু বাতাস। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এসেও শীতের আবহ না থাকা গফরগাঁওয়ে ঠাণ্ডা অনুভূতি বাড়িয়েছে এই আবহাওয়া। সকাল থেকে বাড়তে থাকে বৃষ্টি। বৃষ্টির ভেজা থেকে মুক্ত থাকতে ছাতা ছাড়া যারা ঘর থেকে বের হয়েছে, তারা কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছেন। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী এবং স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা। অন্য দিকে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেয়া বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা। এদিকে অসময়ে হঠাৎ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েন স্থানীয় ইটভাটা মালিকেরা। এতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট কারীদের চিহ্নিতকরণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি ১২ দলীয় জোটের কলিং ভিসায় প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফেরার সময় মারা গেল মালয়েশিয়া প্রবাসী নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিবকে আটকের অভিযোগ হাতিয়া-সন্দ্বীপ চ্যানেলে কার্গো জাহাজডুবি : একজন নিখোঁজ, ১১ জন উদ্ধার হঠাৎ অবসরের ঘোষণা পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের বগুড়ায় গ্যাসের চুলার আগুনে বৃদ্ধা নিহত বগুড়ায় ধানের জমিতে পানি সেচ দেয়া নিয়ে খুন জিআই স্বীকৃতির সাথে গুণগত মানের দিকেও নজর দিতে হবে : শিল্পমন্ত্রী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ সখীপুরে সাবেক ও বর্তমান এমপির সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার অন্যতম দায়ী : মির্জা আব্বাস

সকল