২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিএনপি অফিসসহ দোকানপাট-যানবাহন ভাঙচুর

ভৈরবে যুবলীগের হামলায় বিএনপির সভা পণ্ড : ৩ পুলিশসহ আহত ১০

-

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নির্বাচনী কর্মিসভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-যুবলীগ সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্য ও উভয়পক্ষের কমপক্ষে ছয় নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত পাঁচটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। এ ছাড়া উপজেলা বিএনপির ভৈরব বাজারের ডাইলপট্টির অফিস, বিএনপি সভাপতি রফিকুল ইসলামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অফিস ভাঙচুর হয় বলে জানায় দলীয় সূত্র।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রোববার সন্ধ্যা ৭টায় ভৈরব পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চন্ডিবের মধ্যপাড়া এলাকায় নির্বাচনী কর্মিসভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও যুবলীগ সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে ভৈরব থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় ইট-পাটকেলের আঘাতে পুলিশের উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী, পুলিশ সদস্য আবদুল হাকিম ও আবদুর রহমান আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর করা হয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আক্তার হোসেনের একটি ওষুধের দোকানসহ চার-পাঁচটি বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। উভয়পক্ষের মারমুখী অবস্থানের কারণে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি প্রশাসনের।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাহালুল খান বাহার তিন পুলিশ সদস্য আহতের সত্যতা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন বলেন, সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিসুজ্জামানকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, তারা ওই এলাকার একটি বাড়িতে নির্বাচনী উঠান বৈঠক করার সময় পৌর যুবলীগের কর্মীরা অতির্কিতে হামলা চালায়। এতে তিনিসহ সাতজন নেতাকর্মী আহত হন। এ ছাড়া দলের কর্মী-সমর্থকদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ভৈরবে ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাঁ ভেনিস-বাংলায় হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। চারটি অটোরিকশা, ভৈরব বাজারস্থ দলীয় অফিস, তার নিজস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অফিস ও দলীয় সমর্থক ফেরদৌস মিয়ার মসলার দোকান ভাঙচুর করা হয়। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর যুবলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ইমন বলেন, তিনি তার কয়েক নেতাকর্মী নিয়ে ছাত্রলীগের একটি অনুষ্ঠানে ওইপথে যাচ্ছিলেন। তাদের দেখামাত্রই বিএনপি সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি আহত হয়েছেন।
বিনা উসকানিতে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে আহত করা ও দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরসহ কর্মী-সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এবং কিশোরগঞ্জ-৬, ভৈরব-কুলিয়ারচর আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী শরীফুল আলম বলেন, নির্বাচনী পরিবেশকে অশান্ত করে ফায়দা লুটতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ কামনা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement