১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসন

নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা

-

নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। সমর্থকেরা টেনশনে নিজ পছন্দের প্রার্থীর মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে। এ আসনে বিএনপির তেমন জোরালো প্রচারণা না থাকলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। তবে প্রার্থী ও জেলার শীর্ষ নেতাদের বিভাজনে কর্মীরা বিভক্ত।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা ও গজারিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৪৭টি।
আওয়ামী লীগ : আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব এম ইদ্রিস আলী, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিস-উজ্জামান আনিস, গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেফায়েত উল্লাহ খান তোতা, মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহীন। প্রার্থীদের মধ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পদবঞ্চিত ও অবমূল্যায়নের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাবেক সচিব এম ইদ্রিস আলী বিএনপি সরকারের তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলামকে পরাজিত করে তাক লাগিয়ে দেন। এম ইদ্রিস আলী পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে দল মত নির্বিশেষে সবার গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেন। বিশেষ করে চর এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে চলা সহিংসতার অবসান ঘটাতে বিরাট ভূমিকা রাখেন। সম্ভাব্য প্রার্থী আনিস-উজ্জামান আনিসেরও রয়েছে নিজস্ব ভোটব্যাংক। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে এ অঞ্চলে তৃণমূলের রাজনীতিতে সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের আপন ভাই। আনিস উজ্জামান আনিস একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিএলএফের মুন্সীগঞ্জ জেলার (তৎকালীন মহকুমা) প্রধান ছিলেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গত দুই টার্ম ধরে। আনিসউজ্জামান আনিস মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজছাত্র সংসদের জিএস ও ভিপি ছিলেন। দুইবার ছিলেন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান। গজারিয়া উপজেলার দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান রেফায়েত উল্লাহ তোতা নমিনেশন পেপার কিনেছেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বছরব্যাপী তার প্রচারণা অনেকের চোখে পড়ে। নৌকার প্রচারণায় তার ছবিসংবলিত বিলবোর্ডও দেখা যায়। শহিদুল ইসলাম শাহীন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার পরপর দুইবারের নির্বাচিত মেয়র। তিনি প্রথমবার মেয়র হয়েই দ্বিতীয় শ্রেণীর পৌরসভাটিকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করেন। মিরকাদিম পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে তিনি আলোচনায় আছেন।
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক কাজ করেছি। এরপরও আমি মনে করি মুন্সীগঞ্জ ও গজারিয়া অবহেলিত এলাকা। এই এলাকায় আরো অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করতে হবে এবং আমার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের মানুষের কাছে ভোট প্রার্থনা করি।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনিসউজ্জামান আনিস বলেন, যাচাই-বাছাই করেন, সেক্ষেত্রে ইনশা আল্লাহ আমি কামিয়াব হবো।
বিএনপি : এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সাবেক উপমন্ত্রী ও জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই। মুন্সীগঞ্জ সদর আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য আবদুল হাই এবারো এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। এছাড়া এ আসনে মনোনয়নে আলোচনায় আছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দলের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন। এই দুই শীর্ষ নেতাকে ঘিরে এ নির্বাচনী আসনের নেতাকর্মীরা দুই শিবিরে বিভক্ত।
আবদুল হাই মুন্সীগঞ্জ ও গজারিয়া আসনে ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ সালে তাকে এ আসনে প্রার্থী না করে ঢাকার শ্যামপুরে (ঢাকা-৪) দেয়া হয়েছিল। একসময় তার তুমুল জনপ্রিয়তার কাছে মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া আসনে আওয়ামী লীগ দাঁড়াতেই পারেনি। কিন্তু নানা কারণে সে ইমেজ ধরে রাখতে পারেননি। বিগত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী জয়ের মুখ দেখতে পারেননি। বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কোনো কোনো ইউনিয়নে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এদিকে কামরুজ্জামান রতন গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জে সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে গেলে আবদুল হাই ও তার লোকজন তাকে অপমান-অপদস্থ করার কারণে সেদিন থেকেই মুন্সীগঞ্জে বিএনপির কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত রয়েছেন। এই ঘটনা কেন্দ্রের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কান পর্যন্ত পৌঁছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন বলেন, অনেক কিছু বিবেচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারিনি, এটা সত্য। কিন্তু এটা কোনো অন্তঃকোন্দল নয়। এখানে অনেক বড় ও অনেক যোগ্য প্রার্থী আছেÑ তাদের সবাইকে একত্র করে সমঝোতার কাছাকাছি চলে এসেছি। ঐক্যফ্রন্টের বিবেচনায় যোগ্য হলে এবং আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব। দল আমাকে মনোনয়ন না দিলে গণতন্ত্রের স্বার্থে ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত মেনে নেবো।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল হাই বলেছেন, বিগত উপজেলা ও ইউপি নির্বাচনে অযোগ্য কোনো প্রার্থীকে মনোনীত করা হয়নি। আওয়ামী লীগের দমন-পীড়ন ও দখলবাজির ঘটনায় প্রার্থীরা ভালো করতে পারেনি। নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতি এখনো সৃষ্টি হয়নি। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে দল যাকেই মনোনয়ন দেয় তার পক্ষেই থাকবেন এবং দলীয় কোন্দলও মিটে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে জাতীয় পার্টি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলার সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাতেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ এফ এম আরিফউজ্জামান দিদারের নাম শোনা যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
অধ্যাপক মাযহারুল ইসলামের বাসভবনে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইউক্রেনের ২০টি ড্রোন, ২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্কিৃয় করল রাশিয়া তালেবানকে আফগান মাটি অন্যদের ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের। গত দুই দিনের রেকর্ডের পর চুয়াডাঙ্গায় আজও বইছে তীব্র তাপদাহ বগুড়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, নানা আটক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ তালতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল ভারতের নির্দেশের পর পোস্ট ব্লক করল এক্স ‘দেশের কল্যাণে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারার বিকল্প নেই’ রংপুরে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন সপ্তাহের শেষে তাপমাত্রা বাড়ার আভাস

সকল