রানীনগরে খাদ্যের সঙ্কট কমে যাচ্ছে গরু পালন
- কাজী আনিছুর রহমান রানীনগর (নওগাঁ)
- ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০, আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:১৫
নওগাঁর রানীনগরে গোখাদ্যের চরম সঙ্কট ও চড়া দামের কারণে গরু পালন দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে গোশত ও দুধ উৎপাদনে ঘাটতি পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাতে ভর্তুকি দিয়ে পশু পালনে উৎসাহ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গরুর খামারি ও গরু পালনকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর রোপা/আমন মৌসুমে ভয়াবহ বন্যার কারণে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া পাশের উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় রোপণকৃত ধানের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এতে গরুর খাবার ‘খড়’ সঙ্কটে পরে যায় গরু পালনকারীরা। এর পর ইরি/বোরো মৌসুমে ধান কাটার সময় ঘন ঘন বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে খড় শুকাতে না পারায় আরো ভয়াবহ ‘খড়’ সঙ্কট সৃষ্টি হয়।
গরু পালনকারীরা জানান, গত বন্যার আগে প্রতি বিঘা খড় দুই শত থেকে সর্বোচ্চ আড়াই শত টাকা হারে কেনা হয়েছে। অথচ সেই খড় বর্তমানে প্রতি বিঘা দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। তার পরেও চাহিদা মতো খড় মিলছে না। এর পাশাপাশি খৈল, ভূষিসহ অন্যান্য খাদ্য ও ওষুধের দামও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এসব খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়লেও দাম বাড়েনি গরু বাজারজাতে। এ ছাড়া দুধ বিক্রির স্থায়ী মার্কেট না থাকায় চরম লোকসানে পড়েছেন গাভী পালনকারীরা। ফলে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে গরু পালন। এতে একদিকে যেমন খামারিরা গরু পালন ছেড়ে দিচ্ছেন, অন্য দিকে কৃষকরা বাড়িতে যে গরু পালন করতেন সেটাও অর্ধেকে নেমে এসেছে। সিম্বা গ্রামের খামারি টিংকু আহম্মেদ জানান, তার খামারে প্রায় ৩০টির মতো গাভী ছিল। কিন্তু খাবারের সঙ্কট ও দুধ বিক্রির স্থায়ী মার্কেট না থাকায় ব্যাপক লোকসান হয়েছে। ফলে গরু পালন ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। এরকম পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ খামারি গরু পালন ছেড়ে দিয়েছেন। অভিজ্ঞরা মনে করছেন গরু পালন অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার ফলে চাহিদার তুলনায় গোশত ও দুধ উৎপাদনে ঘাটতিতে পড়তে পারে রানীনগরবাসী।
রানীনগর প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, বর্তমানে রানীনগর উপজেলায় ৪০৬টি মোটাতাজকরণ ও ৯৯টি গাভী পালনের খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রায় এক লাখ গরু রয়েছে। তবে খড়ের সঙ্কট, খাদ্যের চড়া দাম এবং দুধের স্থায়ী মার্কেট না থাকায় খামারিদের কিছুটা লোকসান হচ্ছে। কৃষি বা মৎস্য খাতে যেভাবে ভর্তুকি দিয়ে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে, প্রাণিসম্পদ খাতে একইভাবে সরকার যদি ভর্তুকি দেয় তাহলে খামারিরা আর্থিকভাবে সাবলম্বী হবে। তাই প্রাণিসম্পদকে চাঙ্গা রাখতে সরকারিভাবে ভর্তুকি দেয়ার দাবি জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা