২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নোয়াখালীতে সড়ক-মহাসড়ক বেহাল : জনদুর্ভোগ চরমে

নোয়াখালী-কুমিল্লা মহাসড়কের বেশির ভাগ অংশই এমন খানাখন্দে ভরা। ছবিটি বেগমগঞ্জ উপজেলার মিরআলীপুর এলাকা থেকে তোলা :নয়া দিগন্ত -

নোয়াখালীতে সড়ক-মহাসড়কগুলোর বেহাল দশা। জরাজীর্ণ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। পাশাপাশি চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। জেলার প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও নোয়াখালী সদর, বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সেনবাগ, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর ও হাতিয়ার গ্রামগঞ্জের সড়কগুলোর বেশির ভাগই খানাখন্দকে ভরা।
নোয়াখালী-কুমিল্লা সড়কের বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে চাষীরহাট পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটারের অবস্থা খুবই খারাপ। এ সড়কটির সংস্কার হয় সর্বশেষ ২০১১ সালে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থেকে কুমিল্লার পদুয়াবাজার পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগ অংশজুড়েই খানাখন্দ। যানবাহন চলে প্রায় গতিশূন্য হয়ে। ফলে নোয়াখালী-ঢাকা যাতায়াতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত অনেক সময় ব্যয় হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় যানবাহনের যন্ত্রাংশ। নোয়াখালী-ঢাকা সড়কে রয়েল, হিমাচল, ইকোনো, ঢাকা এক্সপ্রেস, একুশে এক্সপ্রেস, জননী, জোনাকীসহ দেশের নামকরা পরিবহনগুলোর বাস চলাচল করে। লক্ষ্মীপুরগামী যানবাহনগুলো এ সড়কটি ব্যবহার করছে। কুমিল্লা থেকে পিকআপ ভ্যানগুলো শাকসবজি আনছে নোয়াখালীতে। প্রায় প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলছে এ সড়কটিতে। কিন্তু বন্যা-পরবর্তী সময়ে সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারীদের। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াতের প্রধান সড়ক হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় এ সড়কে যানবাহন চলে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে। এতে অনেক যাত্রী বাসের ভেতরে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ফোর লেন সড়ক নির্মাণের অজুহাত দেখিয়ে সড়কটি অস্থায়ীভাবেও সংস্কার করছে না।
মাইজদী বাজার-জেলখানা সড়ক, মাইজদী বাজার-নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক, মাইজদী কোর্ট থেকে কালামিয়ারপুল সড়ক, সোনাপুর ইসলামিয়া মাদরাসা-হাজী গফুর সড়ক, নেয়াজপুর ডিশলাইল-দ্বেবীপুর সড়কসহ প্রায় প্রতিটি সড়কের বর্তমানে বেহাল অবস্থা। বেগমগঞ্জের বড়পুল থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার কবিরহাট সংযোগ সড়ক দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আপানিয়া-গোপালপুর সড়ক, বজরা-আমিশাপাড়া সড়ক, সোনাইমুড়ী থেকে চাটখিল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগ স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। হাতিয়া উপজেলার তমরুদ্দি থেকে ২০ কিলোমিটার, উসখালী থেকে কাজিরহাট আট কিলোমিটার সড়ক জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। অপর দিকে নলছিরা থেকে জাহাজমারা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার সড়কের বেশ কিছু স্পটেও বড় বড় গর্ত দেখা দিয়েছে। সেনবাগের কল্যান্দী-চন্দেরহাট, সেবারহাট-নবীপুর, ফেনী-সেনবাগ-সোনাইমুড়ী ৩০ কিলোমিটার, কানকিরহাট-দোলখাড়, কুতুবেরহাট-লেমুয়া, ছাতারপাইয়া-বিরাহিমপুর, সেবারহাট-নবীপুর সড়কে কয়েক দিন পরপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন এসে নি¤œমানের ইট দিয়ে তার ওপর বিটুমিন ফেলে রোলার দিয়ে সমান করে দেয়। কিন্তু কয়েকদিন যান চলাচল করার পর ফের গর্তের সৃষ্টি হয়। সড়ক সংস্কার ও মেরামতের নামে কিছু দিন পরপর নামমাত্র মেরামত কিংবা সংস্কার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
সোনাইমুড়ী পৌরমেয়র মোতাহার হোসেন মানিক বলেন, সোনাইমুড়ী থেকে লালমাই সড়কসহ বেশ কিছু মহাসড়ক ও বেশ কিছু শাখা সড়ক দীর্ঘ দিন সংস্কার না করায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, জরুরি ভিক্তিতে এসব সড়ক সংস্কারের প্রয়োজন। এ ব্যাপারে নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কারের কাজ চলছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement