২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পদ্মার পানিতে কালুখালীর ২৭ গ্রাম প্লাবিত খাদ্যসঙ্কটে মানুষ ও গবাদিপশু

পদ্মার পানিতে প্লাবিত কালুখালীর একটি গ্রাম :নয়া দিগন্ত -

রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে কালুখালী উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার রতনদিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামে প্রবেশ করেছে পানি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন এসব গ্রামে বসবাসরত প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
স্থানীয় বন্যাকবলিতরা জানান, বিশুদ্ধ খাবার পানি, খাবার স্যালাইন ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে দিন পার করছেন তারা। গৃহপালিত গরু-ছাগলের খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়ার চর, লক্সরদিয়া, নারায়ণপুর, সাবারে পাড়া, পশ্চিম হরিণবাড়িয়া, কৃষ্ণ নগর, ভবানিপুর, ভাগলপুর, হরিণাডাঙ্গা, বল্লভপুর, বিজয়নগর, আলোকদিয়া, কলসতলা, রামনগর, খাপুড়ে, কাশিনাথপুর, বহর কালুখালী, কামিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের সাতটা, উত্তর কালুখালী, মাঠ কালুখালী, ঠাকুর পাড়া, পাড়া বেলগাছী, পুরাতন কালুখালীসহ প্রায় ২৭টি গ্রাম এখন প্লাবিত। এসব এলাকায় সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।
নারায়ণপুর গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রায় ২৫ দিন ধরে এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় বসবাস করছে। খাবারের অভাবে আমরা খুব কষ্টে বেঁচে আছি। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারি কোনো সাহায্য পাইনি।
ষাটোর্ধ্ব জাফর শেখ বলেন, ‘অনেক দিন ধরে আমরা হাজার হাজার মানুষ বন্যার পানিতে তলিয়ে আছি। কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। কোনো সাহায্যও দেয়নি।’
কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বিল্লাল হোসেন জানান, গত এক মাস যাবৎ পদ্মার চরাঞ্চলের ভাঙনের পাশাপশি সাতদিন ধরে কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ও রতনদিয়া ইউনিয়নের অনেক গ্রাম পদ্মার পানিতে প্লাবিত থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, আমাদের এই নদী ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষের ২ কেজি চালের দরকার নাই। অবিলম্বে নদী ভাঙন ঠেকাতে হবে। এ জন্য পাংশার হাবাসপুর থেকে কালুখালীর বেলগাছি পর্যন্ত পদ্মা পারে বেড়িবাঁধ চাই।
কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহেদী হাছিনা পারভীন জানান, পানিবন্দী এলাকার মানুষগুলো খুব অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। অনেককে সাপে কাটছে। প্রসূতি মায়েরা কাক্সিত সেবা থেকে বঞ্চিত। শিশুরা ঠিকমতো বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো বিক্রয় করতে পারছেন না। তাই কালুখালীর নদী ভাঙন ঠেকাতে বাঁধ বিশেষ প্রয়োজন।
এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বন্যা ও ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপকে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা ৩৬ টন জিআর চাল বরাদ্দ পেয়েছি। রতনদিয়া ইউনিয়নের এক হাজার এবং কালিকাপুর ইউনিয়নের ৫০০ তিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। শিগগিরই এসব পরিবারপ্রতি ২০ কেজি করে চাল ও ঘর নির্মাণের জন্য টিন দেয়া হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement