২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শৈলকুপায় গড়াই নদীর ভাঙনে বরুলিয়া গ্রাম বিলীন

গড়াই নদীর ভাঙনে হারিয়ে গেছে সারুটিয়া ইউনিয়নের বরুলিয়া গ্রাম :নয়া দিগন্ত -

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় খরস্রোতা গড়াই নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। এর মধ্যে মানচিত্র থেকে ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে সারুটিয়া ইউনিয়নের বরুলিয়া গ্রামসহ গ্রামের বাসিন্দাদের এক হাজার ৪০০ বিঘারও অধিক ফসলি জমি। ভাঙনের কবলে পড়েছে একই ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি। ভাঙন দেখা দিয়েছে কিত্তিনগর, গোসাইডাঙ্গা, হাকিমপুর ইউনিয়নের মাদলা, ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কাশিনাথপুর, উলুবাড়িয়া, মাজদিয়াতে। হুমকিতে রয়েছে লাঙ্গলবাধ বাজার ও আদিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ।
ভাঙনকবলিত সারুটিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, গড়াই নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তার চাচা সাজদ্দি মণ্ডল, জেনা মণ্ডল, মিনা মণ্ডলসহ তার শরিকদের ৬০ বিঘা ফসলি জমিসহ গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকিটাও চলে যাওয়ার উপক্রম।
গ্রামের অপর বাসিন্দা আশরাফ আলী জানান তাদের একশ’ বিঘারও বেশি ফসলি জমি গড়াই নদীর ভাঙনে চলে গেছে। বাকিটা যাওয়ার পথে।
নদী গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হওয়া বরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আফসার সর্দার জানান, সব কিছু হারিয়ে তারা এখন ভূমিহীন। তাদের গ্রামের এক হাজার ৪০০ বিঘারও অধিক ফসলি জমিসহ গ্রামের সবকিছুই হারিয়ে গেছে। গড়াই নদীর ওপারে তাদের জমি জেগে উঠলেও খোকশা অঞ্চলের একটি প্রভাবশালী মহলের কারণে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি তারা দখল নিতে পারছে না।
সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন জানান, তার ইউনিয়নে বরুলিয়া, কৃষ্ণনগর, কিত্তিনগর ও গোসাইডাঙ্গা গ্রামে গড়াই নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বরুলিয়া গ্রামে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। নদী গর্ভে চলে গেছে কৃষ্ণনগর গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি। এ ছাড়া ভাঙন দেখা দিয়েছে কিত্তিনগর ও গোসাইডাঙ্গা গ্রামে। পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিলীন হবে অধিকাংশ ফসলি জমি।
এছাড়া ভাঙন দেখা দিয়েছে হাকিমপুর ইউনিয়নের মাদলা ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কাশিনাথপুর, মাজদিয়া ও উলুবাড়িয়া গ্রামে। মাজদিয়া গ্রামের মহর আলী বিশ্বাস জানান, ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নে তার গ্রামসহ নদী পাড়ের বিভিন্ন গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদী গর্ভে চলে যাবে কয়েক গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শৈলকূপা অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নে গড়াই নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা তারা পরিদর্শন করেছেন। নদী শাসন করে এ অঞ্চলের বাকি ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি বাঁচাতে তাদের কর্মপরিকল্পনা বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা এলেই তারা ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন ঝিনাইদাহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই, শৈলকূপা উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সোনা শিকদার ও শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওসমান গনি। পরির্দশন শেষে ভাঙন রোধে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তারা জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement