২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাড়ছে পানি ভাঙছে নদী বন্ধ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

পানি বাড়ায় মানিকগঞ্জে যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি; বন্যার পানিতে ডুবে গেছে কাজিপুরের হাটগাছ উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় : নয়া দিগন্ত -

যমুনাসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় বন্ধ করে দিতে হচ্ছে পাঠদান। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ছুঁই ছুঁই করছে। এখানের ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। যমুনায় পানি বৃদ্ধিতে টাঙ্গাইলে ভাঙন শুরু হয়েছে। হুমকিতে পড়েছে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক। পানি বাড়ছে মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনায়। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ১৮টি বিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে কাজিপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির তীব্র স্রোতের কারণে নাটুয়ারপাড়া রক্ষাবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ভারতের অংশে বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের খাসরাজবাড়ি, পলাশপুর, নতুন মাইজবাড়ি, মাজনাবাড়ি, দাতবোড়া, খিরাইকান্দি, শুভগাছা, উজান মেওয়া খোলা, নতুন মাইজবাড়ি, ভাঙ্গারছেও গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মামুনুর রহমান বলেন, এবারের বন্যায় কাজিপুরে প্রায় ২০০ হেক্টর রোপা আমনক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে হাটগাছা উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহিমাপুর, কালিকাপুর, জিওল, দাঁদবোরা, পলাশপুর, কালিকাপুর, মাজনাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খাসরাজবাড়ি বালিকা বিদ্যালয়সহ মোট ২০টি বিদ্যালয়ে। কাজিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, কিছু বিদ্যালয়ের রাস্তায় এবং মাঠে পানি ঢুকেছে। কিন্তু কাসরুমে পানি প্রবেশ করেনি।
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে যমুনায় অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভূঞাপুর উপজেলার শত শত একর আবাদি জমি, বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মধ্যে পড়েছে ভূঞাপুর তারাকান্দি সড়ক। উপজেলার কুঠিবয়ড়া বাজার অংশে সড়কটি যমুনা নদী থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে অবস্থান করছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করতে না পারলে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসী। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগসহ বন্ধ হয়ে যাবে তারাকান্দি সার কারখানার সাথে দেশের অন্যান্য জেলার যোগাযোগ। ইতোমধ্যে গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী গতে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙনের ফলে গাবসারা ইউনিয়নের ডিগ্রির চর, রাজাপুর, ফলদাপাড়া, খন্দকারপাড়া, ভূইয়াপাড়া, চন্দনী, অর্জুনা ইউনিয়নের কুঠিবয়ড়া, তারাই, জগৎপুরা ও ফলদা ইউনিয়নের গারাবাড়ী গ্রামের শত শত একর আবাদি জমি, নদীতে বিলীন হয়েছে। উপজেলার পুরো চর এলাকায় বিশেষভাবে ক্ষতি হয়েছে আমন বীজ তলার, ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
ঘিওর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গাসহ অভ্যন্তরীণ নদীতে পানি বাড়ছে। যদিও নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, গত তিন দিনে পদ্মা ও কালীগঙ্গা নদীতে পানি বেড়েছে। সোমবার সকালে পদ্মা নদীর আরিচা পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আরিচা পয়েন্টে নদীর পানি ছিল ৯.১৫ সেন্টিমিটার ও কালীগঙ্গা নদীর তরা পয়েন্টে ৭.০৭ সেন্টিমিটার। গত দুই দিনে ৫ সেন্টিমিটার করে পানি বেড়েছে। বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক আব্দুর রহিম জানান, যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে নদীর পানি গত তিন দিনে ৫ সেন্টিমিটার করে বেড়ে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার ওই পয়েন্টে পানির পরিমাপ রেকর্ড করা হয়েছে ৯.১৪ সেন্টিমিটার।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় ১৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানসহ যাবতীয় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়ায় চরাঞ্জলসহ নি¤œাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। এতে ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে প্লাবিত হয়। বন্যায় নিমজ্জিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ উজান বুড়াইল, ভোরের পাখি, ভাটিবুড়াইল, চর কাপাসিয়া, পাগলার হাট, বোচাগাড়ি, হরিপুর বিএসএম, রাঘব, পাড়াসাদুয়া, মাদারীপাড়া, উজান তেওড়া, পূর্ব লালচামার, বোচাগাড়ি ভুইঞাপাড়া ও মহিষবান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১৮টি বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের উপজেলা শিক্ষা পরিদর্শন টিম বন্যায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানগুলো নৌকায় দিনভর পরিদর্শন করে জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি উঠায় শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে পড়েছে। ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদানসহ যাবতীয় কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থাগিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বুড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনের ফলে অন্যত্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু তানজানিয়ায় বন্যায় ১৫৫ জনের মৃত্যু বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা

সকল