২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডাক্তার ও বেড সঙ্কটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

-

চুয়াডাঙ্গার স্বাস্থ্যসেবার বেহাল অবস্থা। জেলার ১৩ লাখ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একমাত্র অবলম্বন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। কিন্তু এ হাসপাতালে ডাক্তার ও বেড সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। নামমাত্র ১০০ শয্যার হাসপাতালে ৫০ শয্যার জনবলও নেই। ৪২ জন চিকিৎসকের স্থলে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১৭ জন। অপরদিকে ১০০ বেডের স্থলে প্রতিদিনই রোগী ভর্তি থাকছেন ৩০০ জন। যার কারণে অধিকাংশ রোগীকে হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা, সিঁড়িতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
এদিকে আড়াই শ’ বেডের জন্য নতুন ভবনের কাজ আট বছর আগে শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হচ্ছে না বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। দ্রুত আড়াই শ’ বেডের জন্য নির্মিতব্য ভবনটি চালু করে রোগীদের আরো বেশি সেবা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন জেলাবাসী।
১৯৭০ সালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। সেই সময় জনসংখ্যা কম থাকায় চিকিৎসাসেবা নিতে বেগ পেতে হয়নি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে রোগীর চাপ অনেক বেড়ে গেছে। যার কারণে ২০০৩ সালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কাগজেকলমে ১০০ শয্যার হলেও ডাক্তার, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। প্রতিদিন আউটডোরে প্রায় দুই হাজার রোগী আসে চিকিৎসা নিতে। ডাক্তার সংকটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীদের বসে থাকতে হয়।
ভর্তি হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে একই অবস্থা। ভর্তি হওয়া অনেক রোগী ডাক্তারের সাক্ষাৎ পান না। রোগীর চাপ বেশি থাকায় বেড না পেয়ে অধিকাংশ রোগীকে মেঝে, বারান্দা, সিঁড়িতে চিকিৎসা নিতে হয়।
রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য সরকার ২০১১ সালের সাড়ে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ বেডের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ শুরু করে। ২০১৬ সালে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আজো তা শেষ হয়নি।
গত মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভবনে ইলেকট্রিকের কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন জানায়, তাদের সব কাজই প্রায় শেষ।
একাধিক রোগী ও তার স্বজনরা জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। বেড না থাকায় বারান্দা, সিঁড়ির কোণে, টয়লেটের পাশে বিছানা পেতে থাকতে হচ্ছে। ভাগ্যে থাকলে সারা দিনে একবার ডাক্তারের সাক্ষাৎ মিলে। আউটডোরে বেশির ভাগ ডাক্তার সময়মতো আসে না। সাড়ে ৯টার দিকে ডাক্তারা রুমে আসেন। আবার সাড়ে ১২টা বাজলে দেখা যায় দরজা বন্ধ।
প্রায় চার মাস ধরে বাইকেমিস্ট্রি পরীক্ষা করার মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে র‌্যানড্যাম ব্লাড সুগার, কিডনি, লিভার, হার্টের পরীক্ষাসহ বিভিন্ন টেস্ট বাইরে থেকে করে আনতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা: খাইরুল আলম জানান, হাসপাতালে প্রতিদিন ৩০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। এ অবস্থায় হাসপাতাল চালানো দুরূহ হয়ে পড়েছে। রোগীর এত চাপ যে অতিসত্বর ২৫০ শয্যার নবনির্মিত ভবনটি চালু করা দরকার।

 


আরো সংবাদ



premium cement