২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যমুনার তীরে গরুর জন্য আবাসিক হোটেল

গোবিন্দাসী হাটে গরুর আবাসিক হোটেলে এভাবে রাখা হয় গরু : নয়া দিগন্ত -

দেশের অন্যতম বৃহৎ গরুর হাট হচ্ছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা তীরবর্তী গোবিন্দাসী হাট। এ হাটকে কেন্দ্র করেই এলাকায় গড়ে উঠেছে গরুর জন্য ‘আবাসিক হোটেল’। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এ হাটে এসে গরু কেনা-বেচা করেন। তারা ক্রয়কৃত গরু ও অবিক্রীত গরু হাটের আশপাশে গড়ে ওঠা এসব আবাসিক হোটেলে রাখেন। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন নির্বিঘেœ ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন, তেমনি স্থানীয় শতাধিক পরিবার গরুর জন্য আবাসিক হোটেল করে তাদের সংসার চালাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড় থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার উত্তরে এই গোবিন্দাসী হাট। সপ্তাহের প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার বসে এ হাট। সারা বছরই এ হাটে গরু, মহিষ, ছাগল-ভেড়া বেচাকেনা হয়। প্রতি বছর কোরবানির সময় এ হাটের কদর আরো বেড়ে যায়। এখানে দেশী-বিদেশী অসংখ্য গরু আমদানি হয়। বেচাকেনাও হয় বেশ। এ সময় এখানকার গরুর আবাসিক হোটেলগুলো বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দূর-দূরান্তের গরু ব্যবসায়ীরা এসব আবাসিক হোটেলে নিরাপদে গরু রাখতে পারেন। এক রাতের জন্য গরুপ্রতি ভাড়া দিতে হয় মাত্র ১০ থেকে ১৫ টাকা। বহু বছর ধরে গড়ে ওঠা এসব আবাসিক হোটেলে গরুর জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। গরুর জন্য এমন আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থা থাকায় গরু ব্যবসায়ীরা বেজায় খুশি। অন্য দিকে এসব আবাসিক হোটেলের আয় দিয়ে বহুকাল ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখানকার শতাধিক পরিবার।
গরুর জন্য আবাসিক হোটেল স্থাপন করে জীবিকা নির্বাহ করা এমন দু’জন হলেন আবদুল করিম মিয়া ও রোজিনা বেগম। তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ব্যবসায়ীরা এখানে এসে নিরাপদে তাদের গরু রাখতে পারেন। এতে ব্যবসায়ীদের জন্য যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি আমাদেরও লাভ হচ্ছে। কারণ এখানকার আয় দিয়ে আমাদের সংসার চলে। তারা দীর্ঘ দিন ধরে এ আবাসিক হোটেলের ব্যবসা করছেন বলে জানান।
ঢাকা থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, এ হাটে আমরা গরু কিনতে আসি। আবার বিক্রিও করি। কেনা গরু ও অবিক্রীত গরু আমরা এখানকার আবাসিক হোটেলে নিরাপদে রাখতে পারি। গরুর আবাসিক হোটেল থাকায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।
গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু বলেন, হাটের কিছু সমস্যা আছে। এসব সমস্যার সমাধান করতে পারলে ব্যবসায়ীরা আরো ভালোভাবে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। আর হোটেল মালিকেরাও আবাসিক হোটেলের আয় দিয়ে আরো ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, গরু হাটের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে কাজ শুরু করা হয়েছে। অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। এতে হাটে গরু সরবরাহ বাড়বে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গরু ব্যবসায়ীরা নিরাপদে গরু রাখতে পারবেন। ফলে এ হাটকে কেন্দ্র করে আরো বেশি গরুর হোটেল তৈরি হবে। অন্য দিকে হোটেল ভাড়া দিয়ে বহু মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement