২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিদ্যুৎবিহীন ঈদ কাটাল ফরিদপুরবাসী

-

একদিকে বৈরী আবহাওয়া আর অন্য দিকে কারিগরি ত্রুটি ও মাত্রাতিরিক্ত চাহিদার কারণে ফরিদপুরে মারাত্মক বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দিয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের পাশাপাশি শহরেও দেখা দিয়েছে বিদ্যুতের তীব্র সঙ্কট। দিন দিন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও বাড়ছে না সরবরাহ। এ ছাড়া পুরনো যন্ত্রপাতি ও ট্রান্সমিটার ঘষাঁমাজা করে চলছে কাজ। এ নিয়ে ফরিদপুরবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ সঙ্কটে ফরিদপুরবাসীর এবারের ঈদ আনন্দ যেনো পুরোটাই মাঠে মারা গেছে। বিদ্যুতের এই নাকাল পরিস্থিতিতে চলমান বিশ্বকাপ ফুটবলে পছন্দের দলের খেলাও অনেকে দেখতে পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, ঈদের আগের রাতে বজ্রপাতে বৈদ্যুতিক খুঁটির পিন ইনসুলেটর ক্র্যাশ করে। এর ফলে ঈদের আগের রাত থেকেই সারা দিন ফরিদপুরে বিদ্যুৎ ছিল না। কোথাও কোথাও সামান্য সময় বিদ্যুৎ থাকলেও সরবরাহ হয়েছে অত্যন্ত লো-ভোল্টেজে। আর এ সমস্যা কাটিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘœ হতে সময় লেগেছে রাত পর্যন্ত। এরপর সোমবারও শহরের ঝিলটুলীতে পিন ইনসুলেটর ক্র্যাশ করে।
যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ দাবি করেছে, বিদ্যুৎ সঙ্কট নয় বরং সঞ্চালন যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে এবারের ঈদে এ সমস্যা পোহাতে হয়েছে ফরিদপুরবাসীকে। আর বিদ্যুতের এ সমস্যা চিহ্নিত করতে গিয়ে শুক্রবার রাত থেকে শুরু করে পুরো ঈদের দিনেই হিমশিম খেতে হয়েছে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানি তথা বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের। অবশেষে সারা দিনের দুর্ভোগ শেষে যখন সমস্যা খুঁজে বের করা গেছে তখন শেষ হয়ে গেছে ঈদের পুরো দিনটাই। ক্র্যাক
এ ব্যাপারে জানতে সোমবার দুপুরে যোগাযোগ করা হয় ওজোপাডিকো ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামানের সাথে। তপ্ত রোদে তিনি তখনো ব্যস্ত সময় পার করছিলেন কোমরপুরের সাব-স্টেশনে। জানালেন, তিনি নিজে কিডনি রোগী। সকালে হার্ড ফাউন্ডেশন থেকে ডাক্তার দেখিয়েই আবার নেমে পড়েছেন কাজে। চিকিৎসক তাকে বারন করেছেন রোদের মধ্যে কাজ না করতে। তবু নিরুপায় হয়ে কাজে নামতে হয়েছে তাকে। নিজের শারীরিক এই অসুস্থতার কথা জানিয়ে ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ঈদের আগের রাতে বজ্রপাতে অম্বিকাপুরে বেলালের দোকানের সামনে একটি বিদ্যুতের খুঁটির ‘পিন ইনসুলেটর’ ক্র্যাশ করার ফলে এ দুর্ভোগের সূত্রপাত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ওই পিন ইনসুলেটরটি খুঁজে পেতে তাদের চরম বেগ পেতে হয়। এ কারণে ফরিদপুরে ঈদের আগের রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘœ ঘটেছে। ওয়াদিুজ্জামান জানান, সমস্যা খুঁতে পেতে তাদের বিদ্যুতের প্রতিটি পোস্টে নজর দিতে হয়েছে। কোমরপুর থেকে অম্বিকাপুর হয়ে রেললাইন পার হয়ে কবি জসীম উদ্দীনের বাড়ি হয়ে যেতে হয়েছে বেলালের দোকানের সামনের অকুস্থলে। এরপরই পাওয়া গেছে ক্ষতিগ্রস্ত পিনটি।
তিনি জানান, যদি সঞ্চালন লাইনে গাছ পড়ে ট্রান্সমিটার ব্লাস্ট হতো তবে সেটি খুঁজে পেতে সমস্যা হতো না। কিন্তু ৩৩ হাজার কেভি লাইনের সাথে বিদ্যুতের খুঁটির সংযোগের এই পিনটি খালি চোখে দেখা যায় না। যখন এটি ক্র্যাক করে তখন সামান্য স্পার্ক হয়, যা খেয়াল না করলে দেখাও যায় না। আর এই সমস্যা খুঁজে পেতে প্রতিটি খুঁটিতে লোক নিযুক্ত করে তারপর বের করতে হয়েছে। রোববারও উকিল পাড়া ফিডারে একটি খুঁটির পিন ইনসুলেটর ক্রাশ হয়। এতে আবারও বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘœ ঘটে। এই সমস্যা খুঁজে বের করে পুনরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে প্রায় তিন ঘণ্টার মতো সময় লাগে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরে সবমিলিয়ে বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার। ফরিদপুর শহরের সাতটি এবং কানাইপুরের দু’টি মিলিয়ে মোট ৯টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে ১৬ মেগাওয়াট। চাহিদা রয়েছে এর চেয়েও বেশি। ফরিদপুর শহর ও কানাইপুর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় কোমরপুর সাব-স্টেশন থেকে। সেখানে ৩৩ হাজার কেভির লাইনের সাথে ফিডার লাইনের সংযোগ ব্রেকারও পুরনো। সেটি মেরামত করে ঠিক রাখা হয়েছে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী। এ ছাড়া শহরের সঞ্চালন লাইনেও নানাবিধ ত্রুটি রয়েছে। সামান্য বাতাস ও বজ্রপাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অনেক স্থানে পুরনো ট্রান্সমিটার দিয়ে সঞ্চালন করা হচ্ছে বিদ্যুৎ। ট্রান্সমিটার সাময়িক বিকল হলেও অনেকস্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে খুলনা বিভাগ ও ৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ ‘১ টাকার কাজ ১০০ টাকায়, ৯৯ যায় মুজিব কোটে’ রাত পোহাতেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায়

সকল