বাঁশখালীর ৪ গ্রাম লোনাপানিতে নিমজ্জিত পাহাড়ি ঢলে শঙ্খে তীব্র ভাঙন
- পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
- ১৫ জুন ২০১৮, ০০:০০
দুই দিনের ভারী বর্ষণের পরে এবার পাহাড়ি ঢলে শঙ্খ নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঢলে চরতি ইউনিয়নের দ্বীপ চরতির ব্রাহ্মণডাঙ্গা ও দক্ষিণ পাড়ার ১৫ বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে এই দুই গ্রামের অর্ধশত পরিবার। এদিকে বেড়িবাঁধ না থাকায় সাগরের লোনাপানিতে ভাসছে বাঁশখালীর সনুয়া ইউনিয়নের চার ওয়ার্ডের কয়েকশ’ পরিবার।
চারিদিকে সাগরের লোনাপানিতে থই থই করছে পুকুর, ডোবা, ছোট বড় মাছের ঘের।
সাগরে লঘুচাপসৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ার কারণে চলতি মাসের ১০ ও ১১ তারিখ দু’দিনের টানা বর্ষণের সাথে সাথে পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত কর্ণফূলী ও শঙ্খ নদীসহ সবক’টি খালের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিনের বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি না পেলেও অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে শঙ্খ নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। এ কারণে গত দু’দিনের ভাঙনে চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়ন লাগোয়া সাতকানিয়ার চরতি ইউনিয়নের দ্বীপ চরতির ব্রাহ্মণপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার ১৫টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে আরো শতাধিক পরিবার।
চরতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ডা: রেজাউল করিম ও দ্বীপ চরতি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, দুই দিনের ভাঙনে মনির আহমদ, ওসমান গনী, জামাল আহমদ, হরুনর রশিদ, নুরু রহমান মাঝি, নাছির উদ্দিন, নুর মোহাম্মদ, নুরুচ্ছফা, আবুল কাশেম, আবুল হোসেন, মুজাম্মেল নুর মোহাম্মদ ও মরতুজা গেমের বসতবাড়ি নদীতে সম্পূর্ণ বিলীন হয়।
এদিকে বেড়িবাঁধ না থাকায় বাঁশখালী উপজেলার সনুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সনুয়ার টেক, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাওয়া খালী, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রেমদ খালী ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খুদুক খালী, এই চারটি গ্রাম সাগরের লোনাপানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানান ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাইল হক চৌধুরী ও সনুয়ার আমির হোছাইন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুত কুমার শাহা বলেন, সাতকানিয়া চন্দনাইশ উপজেলার ভাঙন প্রতিরোধে ১৩টি প্যাকেজে টেকসই ভাঙন প্রতিরোধ কাজ শেষ হয়েছে আরো তিনটি প্যাকেজে কাজ চলছে। ৩৩৩ কোটি টাকায় শঙ্খ নদী ড্রেজিং এবং সাতকানিয়া চন্দনাইশ ও লোহাগাড়া উপজেলার ভাঙন প্রতিরোধ আরো কয়েকটি প্যাকেজ সম্প্রতি একনেকের সভায় অনুমোদন হয়েছে যা এখন দরপত্র আহবানের পর্যায় রয়েছে।
তিনি বলেন, এই প্যাকেজগুলোর কাজ শুরু হলে শঙ্খ নদী তীরবর্তী মানুষের আর ভাঙন আতঙ্কে থাকতে হবে না।
বাঁশখালীর কয়েকটি গ্রাম সাগরের পানিতে নিমজ্জিত হওয়া প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খ ম জুলফিকার তারেক বলেছেন, সনুয়াসহ পুরো বাঁশখালীতে টেকসই ভাঙন প্রতিরোধে ৩৪টি প্যাকেজের কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।
ফেনী ও ফুলগাজী সংবাদদাতা জানান, অবিরাম বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের ফুলগাজী ও পরশুরামের ১০টি স্থানের ভাঙনে প্রায় ১৬ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
সরেজমিন জানা গেছে, ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর ও দক্ষিণ দৌলতপুর বরইয়া অংশে ছয়টি স্থানে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলো হলোÑ ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, উত্তর বরইয়া ও সাহাপাড়া, উত্তর ধর্মপুর, দক্ষিণ ধর্মপুর, মনিপুর তালবাড়িয়া।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা ভাঙনের স্থান পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, নয় গ্রাম প্লাবিত হয়ে আট শতাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের কোনো চাহিদা নেই। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। তবে এলাকাবাসীর দাবি তারা ত্রাণ চান না। টেকসই বাঁধ নির্মাণ চান।
এ দিকে পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের উত্তর শালধর ও দুর্গাপুরে, কাউতলি সাহাপাড়া চারটি স্থানের ভাঙনে উত্তর শালধর, দক্ষিণ শালধর, নিলক্ষি, চিথলিয়া, ধনিকুন্ডা, দুর্গাপুর, রতনপুর, সাতকুচিয়া, চারিগ্রাম, মোহাম্মদপুর, চম্পকনগর, কাশিপুর, কাউতলি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা