২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নিউজিল্যান্ডের টিভি-বেতারে শোনা যাবে জুমার আজান

আল নূর মসজিদ - ছবি : সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে গত শুক্রবার যে বর্বরোচিত হামলা হয়েছিল, তাতে হতভম্ব হয়ে পড়েছিল পুরো বিশ্ব। শুক্রবার ওই ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্ণ হবে। ওই হামলায় হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করতে আগামী শুক্রবার দেশটির সরকারি টেলিভিশন (টিভিএনজেড) ও বেতারে (আরএনজেড) আযান সরাসরি সম্প্রচারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বুধবার ক্রাইস্টচার্চের একটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে এ ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্টা আরডার্ন। তিনি আরো জানান, শুক্রবার হামলায় নিহতদের স্মরণে ওইদিন দুই মিনিটের নীরবতাও পালন করা হবে।

দেশটির ইংরেজি দৈনিক নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড জানায়, স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের ঘটনায় এক মিনিটের নীরবতাই পালন করা হয়। কিন্তু ক্রাইস্টাচার্চের হামলার ভয়াবহতা বুঝাতেই নীরবতার পরিধি দ্বিগুণ করে দেয়া হচ্ছে। ২০১০ সালেও পাইক রিভার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দুই মিনিটের নীরবতা পালন করেছিল নিউজিল্যান্ড।

এদিকে, ক্রাইস্টচার্চ হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পক্ষ থেকে দেয়া হুমকির ব্যাপারে আরডার্ন বলেন, নিউজিল্যান্ডের মুসলিম সম্প্রদায় চরমপন্থা, সহিংসতা ও ঘৃণাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

শুক্রবারের হামলার পর দ্বিতীয়বারের মতো ক্রাইস্টচার্চ পরিদর্শনে এসে জেসিন্ডা বলেন, আমরা মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে একাত্মতা পোষণ করছি। আমরা তাদেরকে সহায়তা করতে চাই, যেন তারা আবারো মসজিদে বিশেষ করে শুক্রবার মসজিদে ফিরতে পারে।

গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে অতর্কিতে এক বন্দুকধারীর হামলার ৫০ জন মুসল্লি নিহত হয়। আহত হয় আরো অনেকে। এ হামলার জন্য দায়ী ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে পরে পুলিশ গ্রেফতার করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে।

 

আরো পড়ুন : হিজাব পরে সংহতি ও প্রতিবাদ জানাবেন নিউজিল্যান্ডের নারীরা
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২০ মার্চ ২০১৯, ১১:৫০

শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত নিউজিল্যান্ডে গত শুক্রবার ঘটে যায় স্মরণকালের বর্বরোচিত হামলা। জুমার নামাজের জন্য উপস্থিত হওয়া নিরস্ত্র মুসল্লিদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় এক বন্দুকধারী। দুটি মসজিদে তার হামলায় নিহত হয় নামাজের জন্য আসা বিভিন্ন দেশের ৫০ জন নারী-পুরুষ-শিশু।

ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এবং মুসলমানদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে আগামী শুক্রবার (২২ মার্চ) হিজাব পড়বেন নিউজিল্যান্ডের সব ধর্মের নারীরা। এ কর্মসূচির নাম দেয়া হয়েছে ‘সম্প্রীতির জন্য হিজাব’।

মুসলিমদের সাথে দীর্ঘদিন করে কাজ করে আসা থায়া আশমান নামের এক নারী এ আয়োজনের উদোক্তা। এ আয়োজনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমি এক আতঙ্কিত নারীর কথা শুনেছি যিনি ওই হামলার পর হিজাব পরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ হিজাব পরার কারণে সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে।

আশমান বলেন, আমি বলতে চাই, ‘আমরা আপনার সঙ্গে আছি, আমরা চাই আপনি ঘরের মতো রাস্তাতেও যেন নিরাপদবোধ করেন, আমরা আপনাকে ভালোবাসি, সমর্থন ও শ্রদ্ধা করি।’

আশমান এ কর্মসূচি সফল করতে আগামী শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের সব নারীকে হিজাব পরার আহ্বান জানিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত সব মুসলিম সম্প্রদায় এই ধারণাকে সমর্থন দিয়েছে। ইসলামি উইমেন’স কাউন্সিল অব নিউজিল্যান্ডের নেতারা বলেছেন, সংহতির এই উদ্যোগ আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষেরা ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। নিউজিল্যান্ড মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইখলাক কাশকারি এ কর্মসূচিকে ‘সুন্দর ধারণা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

আশমানসহ অন্য আয়োজকরা জানান, আমরা গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারানো ৫০ জন মা, বাবা, সন্তান, সহকর্মী ও বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন ও সহমর্মিতা জানাতে চাই। মুসলিম কমিউনিটি যে অসহনীয় অবস্থার স্বীকার হয়েছে, এ কঠিন দুঃসময়ে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই। নিউজিল্যান্ডের মানুষ এই শোকে শোকাহত।


আরো সংবাদ



premium cement