২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হাইজাম্পে রেকর্ড গড়লেন মাহফুজুর রহমান

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশের ইতিহাসে এসএ গেমসে প্রথমবারের মতো পদক এলো হাইজাম্পে। সাফের জামানা পেরিয়ে এসএ গেমস নামকরণে বহুবার আসর হলেও কখনো হাইজাম্প থেকে পদক পায়নি বাংলাদেশ। এবার সেই ইতিহাস রচনা করলেন নৌবাহিনীর অ্যাথলেট মাহফুজুর রহমান। ২.১৬ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে ভারতের প্রতিযোগির সাথে যুগ্মভাবে জিতলেন সিলভার মেডেল। ঘরের মাঠে জাতীয় মিটে তার আগের রেকর্ডটি ছিল ২.১৫ মিটার।

দেখতে অনেকটা ক্রিকেটের সৌম্য সরকারের মতো মনে হলেও কুষ্টিয়া কুমারখালি উপজেলার পাইকপাড়ার মাহফুজকে ক্রিকেট, ফুটবল কোন কিছুই টানেনি। দীর্ঘদেহী এই অ্যাথলেট শখের বসে খেলতেন ভলিবল। পছন্দও করতেন। আর স্কুল কলেজের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চেনা মুখ ছিলেন মাহফুজ। তাকে হটিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় সাধ্য কার। অবশেষে থিতু হলেন নৌবাহিনীতে। কোচ রফিকুল ইসলাম চিনতে ভুল করেননি। অল্প সময়েই আন্তর্জাতিক সাফল্য। গত এস এস গেমসের আসরে হয়েছেন চতুর্থ। এবার সিলভার।

ইতিহাস সৃষ্টি করার পর মাহফুজুর রহমান জানান, ‘খুবই আনন্দিত। আত্মবিশ্বাস ছিল ভালো রেজাল্ট করার। ভারতে জুনিয়র অ্যাথলেট ইনভাইটেশন ম্যাচ খেলতে গেছি তখন একটা পদক পেয়েছি। গেমসে ভালো কিছু করার প্রেরণা তখন থেকেই। ভারতের ২.২৬ ছিল। যখন ২.১৫ করেছি তখন বুঝতে পারছি কিছু একটা হবে। টেকনিক্যাল দিকগুলি ক্লিয়ার করলে ভবিষ্যতে আরো ভালো হবে।’

মাঠে তার প্রতিপক্ষ ভারতের দুই অ্যাথলেট সারভেশ অনিল ও চেতন বালাসাব। একজনের জাতীয় রেকর্ড ২.২৬ অন্যজনের ২.২৫। তাদের সাথে সমান তালে লড়লেন মাহফুজুর। ২.০০ মিটারের পরই ঝরে গেল শ্রীলঙ¦কা, নেপাল ও পাকিস্তানের প্রতিযোগি। ঘরের রেকর্ড ২.১৫ থাকায় আত্মবিশ্বাসের জ্বালানী পেয়েছিলেন আগে থেকে। শেষ পর্যন্ত ২.১৬ তেই আটকে গেলেন মাহফুজ ও চেতন। প্রায় ১৫ মিনিট টেকনিক্যাল ও জাজ প্যানেল দুজনকেই রৌপ্যপদকের জন্য মনোনীত করলেন। আর ২.২১ করে স্বর্ণ জিতলেন সারভেশ। পরে তিনি রেকর্ডের জন্য ২.৩০ মিটার ট্রাই করে পারেননি।

সারভেশের কাছে মাহফুজের বিষয় জানতে চাইলে বলেন, ‘অনেক উন্নতী  করেছে বাংলাদেশ। প্রথমে তাকে পাত্তা দেইনি। কিন্তু তার প্রথম জাম্প দেখার পরই ধারণা পাল্টে যায়। দুই মিটারের পর যখন পাল্লা দিয়ে সে লাফাচ্ছিল তখন বুঝতে পেরেছি একটা পদক সে পাবে। কিন্তু তার কাছে হেরে যাবো সেটি এক মহুর্তের জন্যও মনে হয়নি। কারণ আমার ঘরের রেকর্ড ২.২৬ মিটার। পরিচর্যা করলে সে আরো ভালো করবে। টেকনিক্যাল উন্নতি দরকার।’

মাহফুজ আরো জানান, ‘ব্যাক্তিগত বেস্ট-টা করতে পেরেছি। ভারত থেকে প্রাকটিসে অনেক পিছিয়ে আছি। তারা বাইরে অনুশীলন করে। প্রাকটিস ভালো করে করতে পারলে আমারও উন্নতী হবে। গত গৌহাটি আসরে ২.০০ মিটার লাফিয়ে চর্তুথ হয়েছি। খেলাধুলায় পুরোটা অবদান নৌবাহিনীর কোচ রফিকুল ইসলাম স্যারের। ১.৭৩ মিটার লাফিয়ে আমার শুরু।  উনার সান্নিধে ১.৯০ করে দ্বিতীয় হই। তখন ২০১৬ সালে এসএ গেমসের ক্যাম্পে ডাক পাই। ২.১৭ করে হই চতুর্থ।


আরো সংবাদ



premium cement