২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্রের আফগান শান্তি পরিকল্পনায় ন্যাটোর সমর্থন

যুক্তরাষ্ট্রের আফগান শান্তি পরিকল্পনায় ন্যাটোর সমর্থন - সংগৃহীত

আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে ‘পুরোপুরি সমর্থন করেছে ন্যাটো। জোটের প্রধান মঙ্গলবার তালেবানের সাথে শান্তি চুক্তির খসড়ার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সাথে আলোচনার পরে এসব কথা বলেন। পম্পেও ব্রাসেলসে ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। ওয়াশিংটন ১৮ বছর যুদ্ধের পরে তালেবানের সাথে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছে, যার অধীনে মার্কিনীরা বিদ্রোহীদের কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তার বিনিময়ে কয়েক হাজার সেনা প্রত্যাহার করবে। সোমবার কাবুলের একটি আবাসিক অঞ্চলে একটি বিশাল বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে তৃতীয় দফায় তালেবানের বড় ধরনের হামলা আফগানিস্তানের নাজুক নিরাপত্তা পরিস্থিতিরই ইঙ্গিত দেয়।

আফগানদের নিরাপত্তার দায়িত্ব হস্তান্তর করে ন্যাটো ২০১৪ সালে আফগানিস্তানে তার যুদ্ধ মিশন সমাপ্ত করেছিল; তবে স্থানীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সহায়তা দেয়ার জন্য তারা প্রায় ১৬ হাজার সেনা মোতায়েন রেখেছিল। স্টলটেনবার্গ টুইট করেছেন, ‘বর্তমান নিরাপত্তা ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর সাথে চমৎকার আলোচনা হয়েছে। আফগানিস্তানে শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে ন্যাটো। আমি সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলার নিন্দা করি। আফগান বাহিনীকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধই রয়েছে ন্যাটো।’ প্রস্তাবিত চুক্তির আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান জুড়ে পাঁচটি ঘাঁটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করার একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছবে, যদি তালেবান এই চুক্তির প্রতি সম্মান দেখায়।

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার আনুষ্ঠানিক সংখ্যা ১৪ হাজার বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যাটি কিছুটা কম বলে মনে করা হয় এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তালেবানের সাথে চুক্তির পরেও যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে প্রায় ৮ হাজার ৬০০ সেনা স্থায়ীভাবে মোতায়েন রাখতে পারবে।

এটি ইঙ্গিত করে যে, প্রায় ৫ হাজার ৪০০ মার্কিন সেনা এই চুক্তির প্রাথমিক শর্তানুযায়ী আফগানিস্তান ত্যাগ করবে। যার ফলে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগে মার্কিন যে সেনা উপস্থিতি ছিল সেই সংখ্যা আরো কমে আসবে। সেনা হ্রাসের পরিবর্তে তালেবান আলকায়েদার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে এবং চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি তৈরির লক্ষ্যে আফগান সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করবে।

ন্যাটোর সাথে পম্পেওর এই আলোচনা ব্রাসেলসে পম্পেওর দুই দিনের সফরের অংশ হিসেবে এসেছে। এই সফরে পম্পেও কমিশনের সভাপতি-নির্বাচিত উরসুলা ভন ডার লেইন ও আগত ইইউ কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মাইকেলসহ নতুন ইইউ নেতৃত্বের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। মাইকেল তাদের বৈঠকের পরে টুইট করেছেন যে তারা ‘পারস্পরিক স্বার্থ এবং অভিন্ন আগ্রহ’ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

শান্তি চুক্তি নিয়ে আফগান সরকারের উদ্বেগ

এ দিকে রয়টার্স জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান আলোচকদের মধ্যে শান্তি চুক্তির খসড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আফগান সরকার। খসড়া চুক্তির ব্যাপারে দেশটির সরকার আরো স্পষ্টতা চায় বলে বুধবার জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির প্রধান মুখপাত্র সাদিক সিদ্দিকী। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘আফগানিস্তানের সরকারও উদ্বিগ্ন। আমরা তাই সম্ভাব্য বিপদ ও নেতিবাচক পরিণতিগুলো সম্পূর্ণরূপে বিশ্লেষণ করতে এবং ঝুঁকিগুলো এড়াতে এই নথির ব্যাপারে আরো স্পষ্টতা চাই।’ বিদেশী দ্বারা চাপানো ‘পুতুল’ সরকার বলে বিবেচনা করে আফগানিস্তানের সরকারের সাথে কথা বলতে অস্বীকার করায় তালেবানের সাথে আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছিল অনেক কর্মকর্তা। এই চুক্তি তালেবানকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারে বলে তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement