শ্রীলঙ্কার হামলায় কারা জড়িত?
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:১৪
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় নিহত হয়েছে ২৯০ জন। আহত হয়েছে পাঁচ শতাধিক। হামলার পর দুই দিন পার হতে চললেও এখনো পর্যন্ত রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি লঙ্কান নিরাপত্তা বাহিনী। এমনকি কারা এই হামলা চালিয়েছে তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রাথমিকভাবে স্থানীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠি ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত নামের একটি সংগঠনকে দোষী করা হয়েছে লঙ্কান সরকারের পক্ষ থেকে।দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীও দাবি করেছেন, স্থানীয় অপরাধীরাই এই হামলার সাথে জড়িত। এক বছর আগে সংগঠনটির বিরুদ্ধে বৌদ্ধদের মূর্তি বিক্রিত করার অভিযোগ উঠেছিল। তবে মন্ত্রী পরিষদের মুখপাত্র বলেছেন, বিদেশী গোষ্ঠির জড়িত থাকার কথা। পুলিশ প্রাথমিকভাবে কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। সোমবার রাত থেকে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি হতে পারে।
এদিকে হামলার পরদিন সোমবার রাজধানী কলম্বোর একটি গির্জার কাছে আবারো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বিস্ফোরক ভর্তি গাড়িটি নিস্ক্রিয় করতে যাওয়ার আগেই সেটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রোববারের বিস্ফোরণগুলো ছিলো কয়েকটি গির্জা ও আবাসিক হোটেলে। ওই দিন খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে পালন করছিল দেশটির খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা।
হামলার বিষয়ে লঙ্কান সরকারের মধ্যেও কিছুটা মতবিরোধ লক্ষ্য করা গেছে। মন্ত্রী পরিষদের মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দুই সপ্তাহ আগে হামলার বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল। তিনি বলেন, তবে এই সতর্কতা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বা তার মন্ত্রী পরিষদের কাছে পৌছানো হয়নি। মন্ত্রী পরিষদের মুখপাত্র এই পরিস্থিতি মোকাবেলা না করতে পারার জন্য প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার প্রশাসনকে দায়ী করেন। প্রসঙ্গত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিরোধীতা প্রকাশ্যে চলে এসেছে গত কয়েক মাসে।
সেনারত্নে বলেন, আমরা মনে করি না যে যারা এই ভয়াবহ হামলার জন্য দায়ী তারা দেশের মধ্যেই সীমাবন্ধ। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সহযোগিতা ছাড়া এতবড় হামলা চালানো সম্ভব নয়।
পরে সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় জড়িত বিদেশী নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে বিদেশী সহায়তা চাইবেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে, স্থানীয় হামলাকারীদের পেছনে রয়েছে বিদেশী সন্ত্রাসীরা। কাজেই বন্ধু দেশগুলোর সহযোগিতা চাইতে পারেন প্রেসিডেন্ট।
বিদেশী গোষ্ঠি কারা জড়িত থাকতে পারে সে ব্যাপারে কোন ক্লু বা সন্দেহের কথা বলেনি লঙ্কান নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। সোমবার মধ্য রাত থেকে দেশটিতে শর্তসাপেক্ষে জরুরি অবস্থা জারি করা হচ্ছে।
রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে প্রথম হামলার খবরটি পাওয়া যায়। এরপর পরপর আসতে থাকে বিভিন্ন স্থানে হামলার খবর। সূত্র: বিবিসি ও আলজাজিরা