২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মোহাম্মদের উত্তরসূরি : কেমন হবেন প্রিন্স খালিদ?

মোহাম্মদের উত্তরসূরি : কেমন হবেন প্রিন্স খালিদ? - ছবি : সংগৃহীত

সৌদি আরবের উচ্চাভিলাষী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এমন ঝামেলায় পড়বেন সেটা হয়ত ধারণা করেননি। এবার তাকে পদ হারাতে হচ্ছে। সৌদি আরব তার সম্মান ফেরাতে এখন মরিয়া। তাই সালমানের জায়গায় অপেক্ষাকৃত কম উচ্চাভিলাষী তারই ভাই প্রিন্স খালিদকে বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ফ্রান্সের দৈনিক পত্রিকা লা ফিগারো বৃহস্পতিবার প্যারিসের একটি কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানিয়েছে। 

লা ফিগারো বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, সৌদির আনুগত্য পরিষদ সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে গোপনে মিলিত হয়েছে। উত্তরাধিকারের রীতি ভেঙে গত বছর মোহাম্মদ বিন সালমানকে নতুন উত্তরাধিকারী যুবরাজ হিসেবে মনোনয়ন দেয় এ পরিষদ। এখন তারা যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি দূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করছে।

লা ফিগারোকে দেয়া ব্যাখ্যায় একটি সৌদি সূত্র জানায়, যদি খালিদকে নিয়োগ দেয়া হয়, এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে আগামীতে মোহাম্মদ বিন সালমানকে তার পদ ছাড়তে হবে। এভাবে ক্ষমতা বাদশাহ সালমানের পরিবারেই থাকবে। খবরে বলা হয়েছে, দেশে ও দেশের বাইরে বেশ জনপ্রিয় প্রিন্স খালিদ ধীরে ধীরে তার ভাইয়ের কাছ থেকে সব বুঝে নেবেন এবং পরে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন।

এ দিকে সোমবার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গেল সপ্তাহে রিয়াদ ফিরে গেছেন ২৮ বছর বয়সী প্রিন্স খালিদ। তারা আরো জানায়, প্রিন্স খালিদ যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আর ফিরছেন না। তবে কে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের স্থলাভিষিক্ত হবেন সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।

লা ফিগারো জানিয়েছে, আনুগত্য পরিষদকে ইতোমধ্যে বড় শত্রু বানিয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। শুধু তাই নয়, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আল-সউদ পরিবারের বহু সদস্যকে গ্রেফতার করে সেখানেও শত্রু বানিয়েছেন উচ্চাভিলাষী এই যুবরাজ। আর ইয়েমেনে বোমা হামলা, কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ এবং ইসরাইলের সাথে সখ্যের কারণে দেশের ভেতরও ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছেন ৩২ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ।

আরো পড়ুন :

খাশোগি ইস্যুতে ৫ শীর্ষ সৌদি কর্মকর্তা বরখাস্ত : ১৮ গ্রেফতার
ওয়াশিংটন পোস্ট

সৌদি সরকার জানিয়েছে, খাশোগি ইস্যুতে তারা পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের উপদেষ্টা সউদ আল কাহতানি ও সহকারী গোয়েন্দা প্রধান মেজর জেনারেল আহমদ আল আসিরি। এ ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আরো ১৮ জন সৌদি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। 
গত ২ অক্টোবর কন্স্যুলেটে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। সৌদি কর্তৃপক্ষ বারবার দাবি করে আসছিল, খাশোগি ওই দিনই কন্স্যুলেট ত্যাগ করেছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু তারা অবগত নন। কিন্তু অব্যাহত আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপে শেষ পর্যন্ত ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগির হত্যার ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দেয় রিয়াদ। 

গতকাল রিয়াদ স্বীকার করে নেয় সাংবাদিক জামাল খাশোগি ইস্তাম্বুলের সৌদি কন্স্যুলেটের অভ্যন্তরেই নিহত হয়েছেন। তবে তারা দাবি করছে, হাতাহাতি লড়াইয়ের একপর্যায়ে তিনি নিহত হন। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি টুইটে আসা ওই ঘোষণায় বলা হয়, সরকারি জেনারেল প্রসিকিউটরের প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে, খাশোগি কন্স্যুলেটে গিয়ে সেখানকার লোকজনের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সেটি মারাত্মক সংঘর্ষের রূপ ধারণ করলে খাশোগি নিহত হন। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত তার লাশের ব্যাপারে কোনো কিছু জানায়নি। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ কন্স্যুলেট, কন্সাল জেনারেলের বাসভবনসহ আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে খাশোগির লাশের কোনো সন্ধান পায়নি। 

কাহতানি ছিলেন যুবরাজের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের অন্যতম। তিনি খুবই কুশলী ও প্রভাবশালী। অনলাইনে যারা সৌদি আরবের সমালোচনা করে, তাদের একটি কালো তালিকা তৈরি করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সরব উপস্থিতি তাকে আরব বিশ্বে সবচেয়ে জোরালো ও দৃশ্যমান কর্মকর্তায় পরিণত করেছে। কাহতানি দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ১৩ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। তিনি বলেন, আমি সব সময়ের জন্য আমার দেশের একজন অনুগত কর্মী। বাদশাহ ও যুবরাজকে ‘মাস্টার’ সম্বোধন করে তিনি বলেন, আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। গত বছর তিনি এক টুইটে বলেছিলেন, আপনি কী মনে করেন, কোনো নির্দেশ বা নির্দেশনা ছাড়াই আমি নিজ থেকে কোনো কিছু করি। আমি কেবলই একজন আস্থাভাজন কর্মী, যে বাদশাহ ও যুবরাজের আদেশগুলো বাস্তবায়ন করে। কাহতানিকে বহিষ্কারের পর তার এ টুইটটি ভাইরাল হয়ে যায়। 

রিয়াদের সমালোচক খাশোগিকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য কাহতানি অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। মার্কিন গোয়েন্দারা জানান, তাকে সৌদিতে নিয়ে বন্দী করার চেষ্টা চলছিল। বহিষ্কৃত আরেক কর্মকর্তা আসিরিও যুবরাজের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্ব নেয়ার আগে তিনি দুই বছর ধরে ইয়েমেন হামলায় অংশ নেন। ফ্রেঞ্চ ও ইংরেজিতে কথা বলায় দক্ষ আসিরি নিয়মিত বিভিন্ন যুদ্ধের ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করতেন। 

বহিষ্কৃত অন্য কর্মকর্তারা হলেন- গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বিন সালেহ আল রুমাইহ, মানবসম্পদ বিভাগের গোয়েন্দা শাখার প্রধান মেজর জেনারেল আবদুল্লাহ বিন খলিফা আল শায়া এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান নির্বাহী জেনারেল রাশাদ বিন হামেদ আল মোহাম্মদ।


আরো সংবাদ



premium cement
ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে‘ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের মোদির মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু নেতাকে বহিষ্কার ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নতুন কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন চান্দিনায় পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশু মৃত্যু কেএনএফ সম্পৃক্ততা : গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা সম্পর্কে যা জানা গেছে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ শ্রমজীবি মানুষের মাঝে ক্যাপ, পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পশ্চিম নোয়াখালীতে হিট স্ট্রোকে শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাবার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় স্ত্রীর ২৭ স্থানে স্বামীর ধারালো অস্ত্রের আঘাত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ১২ উপজেলায় মানববন্ধন

সকল