২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এবার সুইজারল্যান্ডে নিষিদ্ধ মিয়ানমারের সাত সেনাকর্মকর্তা

রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গা নির্যাতনের দায়ে এবার সুইজারল্যান্ডে নিষিদ্ধ মিয়ানমারের সাত সেনাকর্মকর্তা - ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গা নিপীড়নে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাত ঊর্ধ্বতন সেনাকর্মকর্তার সম্পত্তি জব্দ করে তাদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সুইজারল্যান্ড। এর মাধ্যমে গত এপ্রিল এবং জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেয়া পদক্ষেপের সাথে নিজেদের শামিল করল দেশটি। বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার কথা জানিয়েছে সুইজারল্যান্ড ফেডারেল কাউন্সিল।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত দমনাভিযান জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। ওই অভিযানের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা নিপীড়নের দায়ীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার পদপেও শুরু হয়েছে। এর মধ্যে অভিযুক্ত সেনাকর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এবার তাতে সুইজারল্যান্ডও শামিল হলো।

সুইজারল্যান্ড ফেডারেল কাউন্সিল নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সাত শীর্ষ কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, গত জুনে ইইউর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা সাত কর্মকর্তাকেই নিষিদ্ধ করেছেন তারা। ইইউর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ওই সাত কর্মকর্তা হলেন, ডেপুটি মেজর জেনারেল, অং কিয়াও জাও, মেজর জেনারেল মং মং সোয়ে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থান উ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং অং, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খিন মং সোয়ে, বর্ডার গার্ড পুলিশের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরা সান লুইন ও অষ্টম সিকিউরিটি পুলিশের কমান্ডার থান্ট জিন উ। এসব সেনাকর্মকর্তার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানোর অভিযোগ করে থাকে ইইউ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করে থাকে।

সম্পত্তি জব্দ ওবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও সুইস নিষেধাজ্ঞার ল্য হবে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত সরঞ্জাম, প্রযুক্তি এবং টেলিফোন ও ইন্টারনেটে নজরদারি চালাতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সফটওয়্যার। এ ছাড়া বিদ্যমান অস্ত্র ও সরঞ্জাম নিষেধাজ্ঞাও বহাল থাকবে।
সুইজারল্যান্ড ফেডারেল কাউন্সিলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমার সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো চলমান ব্যাপক, কাঠামোগত ও বিপুল মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানাচ্ছে ফেডারেল কাউন্সিল। মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হতে থাকা নিয়েও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন কাউন্সিল।’

আরো পড়ুন :
রোহিঙ্গা নিপীড়ন : চাপে পড়ে শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলো মিয়ানমার
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৬ জুন ২০১৮
রোহিঙ্গা নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত মিয়ানমারের একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা মং মং সোয়ে-কে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের শীর্ষ সাত সেনা কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যে তালিকা প্রকাশ করেছিল সেখানে এ সামরিক কর্মকর্তার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কানাডার পক্ষ থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী করার কয়েক ঘন্টা পরেই সামরিক বাহিনী থেকে তাকে বরখাস্তের ঘোষণা এলো।

মেজর জেনারেল মং মং সোয়ের উপর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আমেরিকার তরফ থেকেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল।

গত বছরের শেষ দিকে সে সামরিক কর্মকর্তাকে রাখাইন অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।

এছাড়া অপর একজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।

সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চীফের দফতর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাখাইন অঞ্চলে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে মিয়ানমারের পুলিশের উপর রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির আক্রমণের সে অঞ্চলের ‘নিরাপত্তা পকিল্পনা’ যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় জেনারেল মং মং সোয়ে-কে সামরিক বাহিনী থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সাথে কোনো রকম সামরিক সহযোগিতা করবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা আরেকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অং কেও জ-কে একমাস আগে স্বাগত কারণে পদত্যাগের সুযোগ দেয়া হয়েছে।

তিনিও রাখাইন অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে মিয়ানমারের যেসব সেনা এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তারা রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন, হত্যা, যৌন সহিংসতা এবং অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী।

রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের হত্যা, নারীদের ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগ থেকে বাঁচতে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে দুই দফায় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। সূত্র: বিবিসি

আরো পড়ুন :
মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা : অ্যামনেস্টি
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৭ জুন ২০১৮
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হামলার নেতৃত্ব দেয়ায় দেশটির সেনাপ্রধান ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করে তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মানবাধিকার সংস্থাটির জমা দেয়া এক প্রতিবেদনে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

রাখাইন রাজ্যে সামরিক দমনপীড়নের কারণে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে ভয়াবহ জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সেনাবাহিনী বলেছে, তারা মুসলিম ‘জঙ্গি’দের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। এরা ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায়।

কিন্তু অ্যামনেস্টির একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ও অপর ১২ জন জ্যেষ্ঠ সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা ও দমন অভিযানে সমন্বয়কের ভূমিকায় ছিলেন।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সাথে সুপরিকল্পতভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূলে এ দমন অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আইনবহির্ভূতভাবে শিশুসহ কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে।’

প্রতিবেদনটিতে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যৌন সহিংসতা, নির্যাতন, জোরপূর্বক দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ রোহিঙ্গাদের বাজার ও ফসলী ক্ষেত জ্বালিয়ে দিয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের অনাহারে থাকতে হয়েছে এবং তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই অপরাধগুলোকে আর্ন্তর্জাতিক আইনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।’

কোনো কোনো জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা ও সীমান্তরক্ষী নৃশংসতায় সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল