২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যে দেশে পুলিশ প্রধান ও অভিনেত্রীও গুম হয়ে যায়

ইন্টারপোল প্রধান ও বিশ্বের বেশি পারিশ্রমিক নেয়া অভিনেত্রীদের একজন। - ছবি: বিবিসি

সাম্প্রতিক সময়ে দুজন চীনা নাগরিকের হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সারা বিশ্বে, দেশটির মধ্যে তো বটেই।

এর একজন হলে এক্স-ম্যান ও আয়রন ম্যান মুভির অভিনেত্রী ফান বিংবিং।

তাকে কয়েক মাস ধরে জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছিলোনা, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার কোনো কার্যক্রম ছিলোনা।

এরপর হঠাৎ করেই চলতি মাসের শুরুতে তিনি হাজির হয়ে দু:খপ্রকাশ করলেন কর ফাঁকি দেয়ার বিষয় নিয়ে।

আবার তার ফিরে আসার দু দিনের মধ্যেই নিখোঁজ হয়ে গেলেন স্বয়ং ইন্টারপোলের প্রধান মেং হংওয়েই।

তার স্ত্রীর দাবি হারিয়ে যাওয়ার আগে তার স্বামী তাকে একটি ছুড়ির ইমোজি টেক্সট করেছিলেন যার মানে দাঁড়ায় যে তিনি বিপদে আছেন।

এরপর আটই অক্টোবর চীনা কর্তৃপক্ষ জানায় তাকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এ দুটি ঘটনাই বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তৈরি করে এবং আবারো বেরিয়ে আসে জোরপূর্বক গুম হওয়া চীনে নতুন কিছু নয়।

অনেকেই বলছেন এরপর দেশটিতে অভিযান আরও কঠোর হয় এবং এটি একটি কাঠামোতে রূপ নেয়।

বিশেষ করে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে শাস্তি পায় প্রায় দশ লাখ সরকারি কর্মকর্তা।

যদিও সমালোচকদের মতে দুর্নীতির মতো বিষয়টি ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দাই বেশী নেয়া হচ্ছে।

দেশটির এক সময়ের প্রভাবশালী একজন নেতাকে জু ইয়াংকেংও এতে টার্গেট করা হয়েছিলো। ২০১৫ সালে তাকে জেল দেয়া হয় ঘুষের অভিযোগ তুলে।

আর এবারে আলোচনায় এসেছে অভিনেত্রী ফান বিংবিং ও ইন্টারপোল প্রধান মেং হংওয়েইর নিখোঁজের ঘটনা।

তারা দুজনই কয়েকদিনের জন্য হাওয়া হয়ে গেলেন যা সর্বত্র আলোচনার ঝড় তোলে।

কিন্তু কেন এমনটি হচ্ছে?

এশিয়া সোসাইটির সিনিয়র ফেলো ইসাক স্টোন ফিস বলছেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি চীন ও বিশ্বকে দেখাতে চাইছে যে তাদের নিজেদের নিয়মকানুনই এখানে নিয়ন্ত্রক এবং আর কারও কাছে তারা এসবের ব্যাখ্যা দিতে রাজী নন।

তার মতে ইন্টারপোল প্রধানের ঘটনা জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক কিংবা আইএমএফ-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দিকে একটি পরিষ্কার বার্তা চীনা নাগরিক তিনি যেখানেই কর্মরত থাকুননা কেন তিনি যে কোনো সময়েই আটক হতে পারেন এবং অগ্রিম কোন তথ্য ছাড়াই সেটি হতে পারে।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন এসব ঘটনার মাধ্যমে আসলে দেশের অভ্যন্তরেই কড়া বার্তা দেয়া হয় যে কেউই ছাড় পাবেনা।

কিন্তু যারা হাওয়া হয়ে যায় তাদের আসলে কী করা হয়?

অনেকেই সেখানে নির্মমতারও শিকার হয়েছেন।

না ঘুমাতে দেয়া, মারধর করা, যৌন নির্যাতন, ইলেকট্রিক শক দেয়া- এমন নানা পন্থা ব্যবহার করা হয় জিজ্ঞাসাবাদের সময়।

আর এটা নির্ভর করে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তার ওপর। অথবা কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য হতে পারে।

আটক থাকার সময় যাই ঘটুক না কেন যারাই হাওয়া হয়ে যান তারাই ফিরে এসে নিজের দোষ স্বীকার করেন।

এখন যেমন করছেন অভিনেত্রী ফান কিংবা বিচারের মুখোমুখি হতে যাওয়া ইন্টারপোল প্রধানের দায়িত্ব পালন করা মেং।

সারা বিশ্ব কিভাবে দেখছে সেটি নয় বরং সেখানে প্রেসিডেন্ট শি ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্যই প্রথম ও শেষ কথা।

 

আরো পড়ুন: তবে কী ইন্টারপোলের প্রধান অপহরণ হয়েছেন?

নয়া দিগন্ত অনলাইন ,০৫ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৫২


পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের প্রধান মেং হোয়াওয়েই নিখোঁজ হয়েছেন। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পরিবারের সদস্যরা তার কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। তাই প্রশ্ন উঠেছে তিনি কি অপহরণ হয়েছেন? এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে ফ্রান্স।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহ আগে ফ্রান্সের লিঁও শহরে ইন্টারপোলের সদর দপ্তর থেকে বের হয়ে চীনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন মেং হোয়াওয়েই। পরিবারের সদস্যদের দাবি, এর পর থেকেই তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। দুই বছর আগে ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মেং। ৬৪ বছর বয়সী মেং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা।


বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের পর ফরাসি কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, ফ্রান্সে নিখোঁজ হননি মেং। তার স্ত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে এই তদন্ত শুরু হয়। এক বিবৃতিতে ইন্টারপোল জানিয়েছে, মেং হোয়াওয়েইর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ওয়াকিবহাল সংস্থাটি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ফ্রান্স ও চীন—উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয় এটি।’ সংস্থাটি দাবি করেছে, প্রেসিডেন্ট নন, মহাসচিবই ইন্টারপোলের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড দেখভাল করে থাকেন। প্রেসিডেন্ট মেং ইন্টারপোলের নির্বাহী কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন এবং সংস্থাটিকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আগামী ২০২০ সাল পর্যন্ত মেং-এর মেয়াদ ছিল। ২০১৬ সালের নভেম্বরে তিনি সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর আগে চীনের জননিরাপত্তাবিষয়ক বিভাগের উপমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। পুলিশ বিষয়ে প্রায় ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর।

বিশ্বের মোট ১৯২টি দেশ ইন্টারপোলের সদস্য। তবে রেড নোটিশ জারি করা ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা এ সংস্থার নেই। অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে কোনো দেশে কর্মকর্তা পাঠানো বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার ক্ষমতা নেই ইন্টারপোলের।

আরো পড়ুন : বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলায় রুশ গোয়েন্দাদের দায়ী করেছে ব্রিটেন

 বিবিসি ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:৫২


ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা, গণমাধ্যম এবং ক্রীড়া সংস্থার ওপর ‘নির্বিচারে ও বেপরোয়াভাবে’ সাইবার হামলার জন্য রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাকে অভিযুক্ত করেছেন।

ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ব্রিটেনের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার (এনসিএসসি) রাশিয়ার সেনা গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউ বিভিন্ন ধরনের হাইপ্রোফাইল সাইবার হামলার পেছনে রয়েছে। খবর এএফপি’র।


এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ২০১৭ সালে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘ব্যাডর‌্যাব্বিট’ ও রাশিয়ার একটি সংবাদ কার্যালয়ে হামলা এবং গত বছর সুইজারল্যান্ডের ওয়ার্ল্ড এন্টি-ডোপিং এজেন্সিতে হ্যাকিংয়ের চেষ্টা।

হান্ট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই ধরনের আচরণের বুঝা যায় যে, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রচলিত নীতি ও আদর্শের প্রতি তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা অবলীলায় ও কোন রকম পরিণতির কথা চিন্তা না করে এসব করে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আমরা পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্টে জিআরইউ’র এই হীন আচরণের জবাব দিব।’

ওয়াইটহল সূত্রে জানা যায়, এনসিএসসি অনেকটা নিশ্চিত যে, ২০১৭ সালের হামলার পাশাপাশি ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশটির ডেমেক্র্যাটিক পার্টির বিরুদ্ধে সাইবার হামলাসহ আরো কয়েকটি ঘটনার সঙ্গে জিআরইউ’র জড়িত।

তারা জানায়, ব্রিটিশ সরকার এই সাইবার হামলার জন্য কার্যত ক্রেমলিনকে দায়ী করছে। পররাষ্ট্র দপ্তর এই ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের চরম লংঘন’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে যে এতে দেশটির কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি হয়েছে।

আরো পড়ুন : ইসলামবিদ্বেষ দূর করতে জার্মান মুসলমানদের বিশেষ উদ্যোগ
নয়া দিগন্ত অনলাইন  ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:৫৬

প্রতিবছর একটি দিন জার্মানির মসজিদগুলোর দুয়ার খুলে দেয়া হয় সব ধর্ম-বিশ্বাসের মানুষের জন্য। - ছবি : আনাদোলু এজেন্সি
ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে একটা বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করা হয়েছে। এর বেশ প্রভাব পড়েছে ইউরোপেও। আর সে মনোভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে এবং ইসলামের সুন্দর দিকগুলো তুলে ধরতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জার্মানীর মুসলিম সম্প্রদায়।

প্রতিবছর একটি দিন জার্মানির মসজিদগুলোর দুয়ার খুলে দেয়া হয় সব ধর্ম-বিশ্বাসের মানুষের জন্য। বুধবার ছিল সে দিনটি।

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে প্রকাশ, বুধবার জার্মানির মসজিদগুলো পরিদর্শন করেছেন বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসের লোকজন। প্রতিবছর এ দিনটিতে তাদের সাথে সংলাপের আয়োজন করা হয় যাতে ইসলাম সম্পর্কে তাদের ভুল ধারণাগুলো দূর করা যায়।

‘এ দিনটি এক লাখেরও বেশি দর্শণার্থীদের ইসলাম সম্পর্কে জানতে এবং মুসলমানদের সাথে আলোচনার সুযোগ করে দেয়’, এক বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন জার্মানির মুসলিম কোঅর্ডিনেশন কাউন্সিলের (কেআরএম) মুখপাত্র বুরহান কেসিসি।

জার্মানির প্রায় ৯০০ মসজিদ ‘উন্মুক্ত মসজিদ দিবসে’ অংশ নেয়।

দেশটির বিখ্যাত স্থান কলংয়ে অবস্থিত কলং কেন্দ্রীয় মসজিদ পরিদর্শনে আসেন হাজারো দর্শণার্থী। এ মসজিদটি পরিচালিত হয় টার্কিস-ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রেলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স (ডিআইটিআইবি) দ্বারা।

ইউনিয়নটির সভাপতি নেভজাত ইয়াসার আসিকগ্লু বলছিলেন, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ডিআইটিআইবি দর্শণার্থীদের কাছে শান্তি ও সৌহার্দের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। এবং সংলাপের এ উদ্যোগ চলমান থাকবে।

নর্থ রিন-ওয়েস্টফেলিয়ার একীভূতবিষয়ক মন্ত্রী জোচিম স্টাম্পও বুধবার মসজিদটি পরিদর্শন করেছেন।

কর্মসূচিটি চলাকালে ইমামগণ ইসলামী বিশ্বাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন এবং দর্শণার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

আট কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মুসলমানরা। পশ্চিম ইউরোপ ও ফ্রান্সের পরই এ অবস্থান।

আবার দেশটির ৪.৭ মিলিয়ন মুসলিম জনসংখ্যার তিন মিলিয়নই তুর্কি বংশোদ্ভুত।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থী ও পপুলিস্ট দলগুলো দ্বারা ইসলামবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছে এবং অভিবাসীরা বিভিন্ন প্রোপাগান্ডার শিকার হচ্ছেন।

 

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement