১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গা নিধনে যা করেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী

রোহিঙ্গা নিধনে যা করেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী - ছবি : সংগৃহীত

পোস্ট দিয়ে তারা ফেসবুক ভরে ফেলেছিল পপস্টার ও জাতীয় বীরদের ভক্তদের মতো। কিন্তু এসব পোস্ট ছিল ঘৃণামূলক। একটি পোস্টে বলতে দেখা গেছে- ‘ইসলাম বৌদ্ধ ধর্মের জন্য বৈশ্বিক হুমকি’। তাছাড়া এক মুসলিম পুরুষ কর্তৃক এক বৌদ্ধ নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার বানোয়াট গল্পও সেখানে শেয়ার করতে দেখা গেছে। এমন অনেক বিদ্বেষমূলক পোস্ট শেয়ার করা হয়েছে এসব পেজে। 

ফেসবুকের এসব পোস্ট প্রত্যেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর নয়। বরং এগুলো এসেছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যদের থেকে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিকে ব্যবহার করেছিলেন রোহিঙ্গাদের জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালানোর যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার জন্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোহিঙ্গাবিরোধী প্রচারণা চালাতে ৭ শ’ কর্মীকে নিয়োগ দিয়েছিল সে দেশের সেনাবাহিনী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এ সংক্রান্ত ১৩টি পেজ ও ১০টি অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেছে এবং তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চালানো রোহিঙ্গাবিরোধী বিভিন্ন ভুয়া প্রচারণা তাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনে উসকানি দিয়েছে। আর এ ভুয়া প্রচারণাগুলো চালিয়েছে খোদ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ফেসবুকে বিনোদনমূলক ও তথ্যমূলক পেজের ছদ্মবেশে বিদ্বেষ ছড়ায় তারা। সূত্রকে উদ্ধৃত করে ফেসবুক জানায়, কয়েক বছর আগে থেকে ফেসবুকে এ ধরনের প্রচারণা শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আর এর জন্য ৭০০ মানুষকে নিয়োগও দেয়া হয়েছিল। এসব পেজে দেয়া একটি পোস্টে বলতে দেখা গেছে- ‘ইসলাম বৌদ্ধ ধর্মের জন্য বৈশ্বিক হুমকি’। তাছাড়া এক মুসলিম পুরুষ কর্তৃক এক বৌদ্ধ নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার বানোয়াট গল্পও সেখানে শেয়ার করতে দেখা গেছে। এমন অনেক বিদ্বেষমূলক পোস্ট শেয়ার করা হয়েছে এসব পেজে।

এসব বিদ্বেষমূলক পোস্ট ও উসকানিদাতা পেজের সাথে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংযোগ থাকার প্রমাণ পেয়েছে ফেসবুকও। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানায়, ভুয়া প্রচারণায় জড়িত ১৩টি পেজ ও ১০টি অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ওই পেজগুলোর ১৩ লাখ ৫০ হাজার অনুসারী ছিল বলে জানিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুকের একটি ব্লগ পোস্টে বলা হয়, ‘তারকা কিংবা বিনোদনমূলক অ্যাকাউন্টের আড়ালে সেনাবাহিনীর প্রপাগান্ডা ছড়াতে ব্যবহৃত হয় এমন পেজগুলো সম্পর্কে তথ্য জানানোর কারণে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। এর সহায়তায় আমরা তদন্ত চালাতে পেরেছি ও তা সরানো সম্ভব হয়েছে।’
এর আগে গত আগস্টে মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাংকে নিষিদ্ধ করে ফেসবুক। জাতিসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে রাখাইনে রোহিঙ্গা সঙ্কটের জন্য তাকে দায়ী করার পর এমন ব্যবস্থা নেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি। সেনাপ্রধান ছাড়া আরো ২০ জন বার্মিজ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করে তারা। 

উল্লেখ্য রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার। তাদের ‘বাঙালি মুসলমান’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের বাসিন্দা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় নেপিদো। ১৯৪৮ সালে মিয়ানমার স্বাধীন হওয়ার পর দেশটির বাসিন্দা হিসেবে রোহিঙ্গাদের যে সবুজ ও গোলাপি পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছিল, তা গুরুত্বহীন হয়ে যায় ’৮২ সালের নতুন নাগরিকত্ব আইনে।

মিয়ানমারের ইতিহাসে চোখ ফেরালে দেখা যায়, ১৯৮২ সালে তৎকালীন সামরিক জান্তা সরকার নৃগোষ্ঠীভিত্তিক নতুন নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করে। বিতর্কিত ওই বর্ণবাদী নাগরিকত্ব আইনে মিয়ানমারের প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়। আইনের ৪ নম্বর ধারায় শর্ত দেয়া হয়, কোনো জাতিগোষ্ঠী রাষ্ট্রের নাগরিক কিনা, তা আইন-আদালত নয়; নির্ধারণ করবে সরকারের নীতিনির্ধারণী সংস্থা ‘কাউন্সিল অব স্টেট’। বস্তুত এই আইনটিই জান্তাশাসিত মিয়ানমারে সর্বোচ্চ সেনাবিদ্বেষের শিকার রোহিঙ্গাদের ভাসমান জনগোষ্ঠীতে রূপান্তর করে।


আরো সংবাদ



premium cement
মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সকল