মার্কিন হুমকি উপেক্ষা করে রাশিয়া-ভারতের বড় ধরণের প্রতিরক্ষা চুক্তি
- রয়টার্স ও এনডিটিভি
- ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:০৯
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত হুমকির মুখে রাশিয়ার নিকট থেকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার ব্যাপারে মস্কোর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। শুক্রবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স একথা জানিয়েছে। পাশাপাশি ভারতের এনডিটিভি ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সেও মস্কো ও নয়াদিল্লির মাঝে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ভারত সফরে দিল্লি পৌঁছান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
এরপর শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে তার বাসভবনে বৈঠক করেন পুতিন। এদিন প্রতিরক্ষা-সহ বেশ কয়েকটি বিষয়েিউভয় দেশের মাঝে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
শুক্রবার রাজধানীর হায়দরাবাদ হাউসে রাশিয়ার সাথে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার চুক্তি স্বাক্ষর হয়। রাশিয়ার সাথে নয়াদিল্লির এই ধরনের সামরিক চুক্তি ট্রাম্প প্রশাসনকে নিঃসন্দেহে চরম অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।
এর আগে রাশিয়ার সাথে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চুক্তি করলে ভারতকে পরিণাম ভোগ করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থেকে নয়াদিল্লিকে ছাড় দেয়া হবে না বলে আগেই সতর্ক করে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু মার্কি যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিকে উপেক্ষা করে প্রেসিডেন্ট পুতিনের রাশিয়ার সাথে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের এই প্রতিরক্ষা চুক্তি করল নয়াদিল্লি। এখন রুশ সমরাস্ত্র কেনায় ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার মুখেও পড়তে হতে পারে ভারতকে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, আগে থেকেই রাশিয়ার এস-৪০০ আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর ছিল নয়াদিল্লির। অবশ্য এখন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও পুরো ক্ষেপণাস্ত্র হাতে আসতে দুই বছরের মতো সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারতের বিমান বাহিনী প্রধান বি এস ধানোয়া।
অন্যদিকে রুশ প্রেসিডেন্টের এবারের ভারত সফরের উপর কড়া নজর রেখেছে আন্তর্জাতিক মহল। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়াশিংটনের সাথে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতা বাড়লেও চলতি বছর বেশ কয়েকবার পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ বা বৈঠক করে মস্কোর সাথে নয়াদিল্লির পুরোনো সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। আর সেই সম্পর্কোন্নয়নের অংশ হিসেবেই এ প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব হল।
এস-৪০০ আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াও মস্কো ও নয়াদিল্লির মাঝে ২০টি বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি বোরিসোভ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী ডেনিস মান্তুরোভ।
বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবন ৭ লোককল্যাণ মার্গে বৈঠক করেন পুতিন। পরে সেখানেই নৈশভোজের টেবিলে একান্তে কথাবার্তা বলেন এই দুই নেতা। রাশিয়ার নোভোসিবিরস্ক শহরে ভারতীয় মনিটরিং স্টেশন তৈরি করা হবে বলেও জানানো হয়।
নয়াদিল্লির কূটনীতিক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেশ কয়েকটি কারণে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার বিষয়টি ভারতের জন্য জরুরি ছিল। চীন ও পাকিস্তানকে মোকাবেলায় এ ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হাতে থাকা জরুরি। সম্প্রতি চীনও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ কিনেছে।
গত কয়েক বছরে পুতিনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বাড়িয়েছেন মোদি। এ বছরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনে ভারতের পূর্ণ সদস্য হওয়ার পেছনেও সহযোগিতা ছিল রাশিয়ার। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হতে ভারতের দীর্ঘদিনের দাবীকেও সমর্থন করে আসছে দেশটি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা