২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইসলাম কোনো কঠোর ধর্ম নয়, ইসলামে সমঝোতা ও বিবেচনা কাজ করে : মাহাথির

ইসলাম কোনো কঠোর ধর্ম নয়, ইসলামে সমঝোতা ও বিবেচনা কাজ করে : মাহাথির - সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, এটা প্রদর্শন করা খুবই গুরুত্বর্পূণ যে ইসলাম কোনো কঠোর ধর্ম নয়। কঠোরতার পথ দেখায় না ইসলাম। যখন আমরা কোনো কাজ শুরু করি তখন মহান আল্লাহর নাম নিয়ে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম বলে শুরু করি। মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত হলো এবং আমরা আশা করি ইসলামের বিষয়ে আমাদেরকে আরো সতর্ক হতে হবে। দেখাতে হবে যে, ইসলাম এমন একটি ধর্ম যেখানে সমঝোতা ও বিবেচনা কাজ করে।

গত ৩ আগস্ট সোমবার মালয়েশিয়ার টেরেংগানু প্রদেশে সমকামিতার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই যুবতীকে জনসম্মুখে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। এই ইস্যুতে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ওই দুই যুবতীকে বেত্রাঘাত করায় ইসলামিক ন্যায়বিচার প্রতিফলিত হয়নি। দেশটির মন্ত্রিপরিষদ মনে করে, টেরেংগানু প্রদেশে সমকামিতার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই যুবতীকে বেত্রাঘাতের বিষয়ে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে ইসলামকে কেউ কেউ অন্য দৃষ্টিতে দেখতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, এ ইস্যুতে মন্ত্রিপরিষদ ৫ আগস্ট বুধবার আলোচনা করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই শাস্তির মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচারের মানদণ্ড প্রতিফলিত হয়নি। এমনকি ইসলামের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ পায়নি। মন্ত্রিপরিষদ মনে করে ওই যুবতীরা যা করেছিলেন তা ছিল তাদের প্রথম অপরাধ। তাই প্রথমে তাদেরকে উপদেশ দেয়া ছিল বেশি যথাযথ। তাই তাদেরকে প্রথমেই বেত্রাঘাতের শাস্তি দেয়া উচিত হয়নি।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, আমরা মনে করি ঘটনা যদি এমনই হয় তখন সুনির্দিষ্ট অবস্থার প্রেক্ষিতে কিছু বিবেচনা রাখা উচিত। সেখানে ইসলামের অধীনে আমরা হালকা শাস্তি দিতে পারি।

 

নিজেদের নাগরিক ফেরত নিন : মিয়ানমারকে মাহাথির
ভয়েস অব আমেরিকা ও এপি, ১৬ আগস্ট ২০১৮

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদেরকে অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তাদেরকে দেশে ফেরত নিতে হবে। একথা বলেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ।  তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে সেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বসবাস করে আসছে। তারা সেখানকার নাগরিক।

মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রাজায়ায় বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মিয়ানমারের প্রতি এ আহ্বান জানান মাহাথির। 

সাক্ষাতকারের পুরোটা সময়জুড়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমার সরকারের বর্বরোচিত আচরণের নিন্দা জানান এবং তাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে না পারায় গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সুচির ভূমিকায় ‘খুবই হতাশা’ প্রকাশ করেন তিনি।  রোহিঙ্গাদের বিপন্নতার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন আধুনিক মালয়েশিয়ার এই রূপকার।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু এখন আর মিয়ানমারের কোন অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাথে যে আচরণ করা হচ্ছে, তা সত্যিই অগ্রহণযোগ্য। এ বিষয়ে দেশটির নেত্রী সুচির দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার কথা ছিল। তিনি সেনাবাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঠিক দিক-নির্দেশনা দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তার কিছুই করেননি। সুচির ভূমিকায় আমি পুরোপুরি হতাশ।'

মাহাথির মিয়ানমার সম্পর্কে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের সাথে মিয়ানমার যা করেছে তা মোটেই ঠিক হচ্ছে না। তারা যা করেছে, তা সত্যিই খুবই বড় ধরনের অবিচার। মানুষকে হত্যা করা আর গণখুনের মতো ঘটনাগুলো কোনো সভ্য দেশের আচরণ হতে পারে না। এটা সভ্য কোনো জাতির আচরণ নয়, এটা পুরোপুরি অন্যায়।’

এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ইয়েমেনে যুদ্ধের ব্যাপারে বলেন, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি আরবকে দেয়া সব ধরণের সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়া হবে। আমরা ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞে শরীক হতে চাই না এবং কুয়ালালামপুর এমন কোনো কাজে জড়াবে না যাতে আমাদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মালয়েশিয়ায় সাম্প্রতিক নির্বাচনে মাহাথির মোহাম্মদের বিজয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সৌদি নীতির জন্য বড় আঘাত। মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৪ মাস আগে অর্থাৎ দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের শাসনামলে সৌদি রাজা সালমানের নামে পিস সেন্টারের কার্যক্রম শুরু হয় যা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সাথে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সৌদি শাসকদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে নাজিব রাজাকের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তার বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল যার প্রভাব পড়ে সাম্প্রতিক নির্বাচনে।

এর আগেও মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবকে সহযোগিতা করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি ইয়েমেনে শিশুদের বহনকারী একটি বাসে সৌদি হামলার পর ওই দেশটিকে সহযোগিতা না করার ব্যাপারে মাহাথির মোহাম্মদের ঘোষণা ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ।

শিশুদের বহনকারী বাসে হামলার ঘটনায় সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভারতের রাজনৈতিক বিষয়ক গবেষক টিজে জর্জ বলেছেন, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি সামরিক আগ্রাসনে প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে ২০ কোটি ডলার। কিন্তু ইয়েমেন যুদ্ধের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সৌদি আরব তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে যা তাদের জন্য লজ্জাজনক।

মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া খুবই প্রভাবশালী ও শিল্পোন্নত দেশ। ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবকে সহযোগিতা দেয়া বন্ধ করার যে ঘোষণা মাহাথির মোহাম্মদ দিয়েছেন তা অন্য মুসলিম দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। যাতে ইয়েমেনে চলমান গণহত্যায় সহযোগিতা করা থেকে সবাই বিরত থাকে।

তুরস্কের কিরসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্বাস কারা আগাচলি বলেছেন, ইয়েমেনে গণহত্যা ও সমস্ত অবকাঠামো ধ্বংস করার মাধ্যমে মানবতা বিরোধী অপরাধযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমাজ কেবল নিন্দা জানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে যা খুবই দুঃখজনক। এমনকি শিশু হত্যা বন্ধেও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল